শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৪৭
অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি সহবাস করে; কিন্তু বীর্যপাত হয় না
৩৪৭। আহমদ (রাহঃ).....আলী (রাযিঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল ও বিশ্লেষণ
ইমাম আবু জাফর (তাহাবী র) বলেনঃ আমরা যে সমস্ত রিওয়ায়াত বর্ণনা করেছি, তাতে সেই সমস্ত আলিমদের অভিমতের বিশুদ্ধতা প্রমাণিত হয়েছে, যারা দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে গোসল করাকে ফরয মনে করেন। হাদীসসমূহের দিক দিয়ে এটা হচ্ছে এই অনুচ্ছেদের বর্ণনা। যুক্তির নিরিখে এর বর্ণনা ও বিশ্লেষণ নিম্নরূপঃ
বস্তুত আমরা ফকীহ আলিমদেরকে লক্ষ্য করেছি যে, এ বিষয়ে তাঁদের কোন মতবিরোধ নেই যে, যোনীপথে বীর্যপাত করা ব্যতীত স্ত্রী সহবাস করা হাদাস। একদল আলিম তো বলেছেন, এটা সর্বাপেক্ষা গলীয হাদাস। সুতরাং তাঁরা এতে সর্বাপেক্ষা উঁচু তাহারাতকে ওয়াজিব (ফরয) সাব্যস্ত করেছেন, আর তা হচ্ছে গোসল। অপর একদল আলিম বলেছেন, এটা হালকা পর্যায়ের হাদাসের ন্যায়। অতএব তাঁরা এতে হালকা পর্যায়ের তাহারাতকে ফরয সাব্যস্ত করেছেন, আর তা হচ্ছে উযূ। আমরা দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার বিষয়টিকে গভীরভাবে লক্ষ্য করার প্রয়াস পাব। আসলে কি তা সর্বাপেক্ষা কঠোর কি না? যেন আমরা তাতে সর্বাপেক্ষা কঠোর বস্তুকে ওয়াজিব সাব্যস্ত করতে পারি। আমরা সেই সমস্ত বস্তুকে পেয়েছি যা সহবাসের কারণে আবশ্যক হয়। তা হচ্ছে সিয়াম এবং হজ্জ বিনষ্ট হওয়া। তা হয় মিলনকালে দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে, যদিও এর সাথে বীর্যপাত না ঘটুক। আর এটা হজ্জের মধ্যে দম (কুরবানী) এবং হজ্জ কাযা করাকে ওয়াজিব করে। এবং সিয়ামের মধ্যে কাযা ও কাফ্ফারাকে ওয়াজিব করে; তাঁদের মতানুযায়ী যারা এটাকে ওয়াজিব সাব্যস্ত করেন। যদি যোনীপথ ব্যতীত অন্যস্থান দিয়ে স্ত্রী সহবাস করে তাহলে তার উপর হজ্জের ব্যাপারে শুধু দম (কুরবানী) ওয়াজিব হবে এবং সিয়ামের ব্যাপারে বীর্যপাত ব্যতীত তার উপর কোন কিছু ওয়াজিব হবে না। আর এই সমস্ত কিছু তার জন্য হজ্জ এবং সিয়াম পালন অবস্থায় হারাম। কোন ব্যক্তি যদি কোন নারীর সঙ্গে যিনা (ব্যভিচার) করে তার উপর হদ (শাস্তি) প্রয়োগ করা হবে, যদিও বীর্যপাত না ঘটুক। যদি সন্দেহজনকভাবে এরূপ করে তাহলে এর দ্বারা তার থেকে হদ (শাস্তি) রহিত হয়ে যাবে এবং মাহ্র ওয়াজিব হবে।
আর যদি তার সঙ্গে যোনীপথ ব্যতীত অন্য স্থান দিয়ে সঙ্গম করে তাহলে এর কারণে তার উপর না হদ প্রয়োগ ওয়াজিব হবে, না মাহ্র। কিন্তু তাকে তাযীর বা অন্য শাস্তি দেয়া হবে, যদি সেখানে সন্দেহের কোন ভিত্তি না থাকে। যখন কোন ব্যক্তি কোন নারীকে বিবাহ করে তার সাথে খালওয়াত (বৈধ সম্ভোগের নির্জনতা) ব্যতীত যোনীপথে সহবাস করে, তারপর তাকে তালাক দিয়ে দেয় তাহলে তার উপর মাহ্র আবশ্যক হবে, বীর্যপাত ঘটুক অথবা না ঘটুক এবং এই স্ত্রীলোকের উপর ইদ্দত পালনও ওয়াজিব হবে, এই আমল তাকে পূর্বে স্বামীর জন্য বৈধ করে দিবে। আর যদি তার সঙ্গে যোনীপথ ব্যতীত অন্য স্থানে সহবাস করা হয়, তবে তার উপর কোন কিছু ওয়াজিব হবে না। অবশ্য তালাকের অবস্থায় তাকে অর্ধেক মাহ্র প্রদান করা আবশ্যক, যদি তার জন্য মাহ্র নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। আর মাহ্র নির্ধারণ করা না হলে কিছু সামান (কাপড় ইত্যাদি) প্রদান করতে হবে। সুতরাং পূর্ববর্ণিত বস্তুগুলোতেও, যাতে বীর্যপাত ঘটেনি, সেই কঠোর বস্তু আবশ্যক হবে, যা বীর্যপাতের অবস্থায় সহবাসের দ্বারা আবশ্যক হয়। অর্থাৎ হদ প্রয়োগ হবে এবং মাহ্র ইত্যাদিও আবশ্যক হবে। সুতরাং যুক্তির দাবি হচ্ছে যে, অনুরূপভাবে এটা সর্বাপেক্ষা কঠোর হাদাস হিসাবে বিবেচিত হবে এবং হাদাস অবস্থায় যে সর্বাপেক্ষা কঠোর বস্তু আবশ্যিক হয় তাতে তাই আবশ্যিক হবে, আর তা হচ্ছে গোসল ।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আরেকটি দলীল
এ বিষয়ে আরেকটি দলীল হল যে, দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে ওয়াজিব হওয়া বস্তুগুলোকে আমরা লক্ষ্য করেছি। (তাতে বুঝা যাচ্ছে) যদি এরপরে বীর্যপাত হয় তাহলে বীর্যপাতের কারণে অন্য দ্বিতীয় কোন বিধান ওয়াজিব হয় না। বিধান তো দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে জারী হয়। আপনারা কি দেখতে পাচ্ছেন না, কোন ব্যক্তি যদি কোন নারীর সঙ্গে যিনা হিসাবে সহবাস করে এবং পরস্পরের খাত্নার স্থান মিলিত হয়ে যায় তাহলে এ কারণে তাদের উভয়ের উপর হদ ওয়াজিব হয়ে যায়। যদি সে তার উপরে (খাত্নার স্থান মিলিত হওয়ার পর) দীর্ঘ সময় পড়ে থাকে যার ফলশ্রুতিতে বীর্যপাত ঘটে যায় তাহলে সেই হদ ব্যতীত যা দুই খাত্নার স্থান পরস্পরে মিলিত হওয়ার কারণে ওয়াজিব হয়েছিল, অন্য কোন শাস্তি ওয়াজিব হরে না। আর যদি উক্ত সহবাস সন্দেহের ভিত্তিতে সংঘটিত হয়ে থাকে, তাহলে দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে তার উপর মাহ্র ওয়াজিব হবে। তারপর তার উপরে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকার কারণে যদি বীর্যপাত ঘটে যায়, তাহলে তার উপর এই বীর্যপাতের কারণে তা ব্যতীত কিছুই আবশ্যক হবে না, যা দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে ওয়াজিব হয়েছিল ।
অতএব এই সমস্ত অবস্থায় যা কিছু এমন ব্যক্তির উপর আবশ্যিক হবে, যে সহবাস করেছে এবং বীর্যপাতও হয়েছে; তা ঐ ব্যক্তির উপরেও আবশ্যিক হবে, যে সহবাস করেছে কিন্তু বীর্যপাত ঘটেনি। বস্তুত এখানে হুকুম আরোপিত হবে দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে, পূর্ববর্তী বীর্যপাতের কারণে নয়। সুতরাং যুক্তির দাবি হচ্ছে, বীর্যপাতের সাথে সঙ্গমকারীর উপরে গোসল ওয়াজিব হয় দুই খাত্নার স্থান পরস্পরে মিলিত হওয়ার কারণে, পরবর্তী বীর্যপাতের কারণে নয়। এতে তাঁদের অভিমত প্রমাণিত হল, যাঁরা বলেন যে, স্ত্রী সহবাস গোসলকে ওয়াজিব (ফরয) করে, এর সাথে বীর্যপাত ঘটুক বা না ঘটুক। এটা ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ), ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) সহ সাধারণ আলিমগণের অভিমত।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আরো একটি দলীলঃ এ বিষয়ে আরো একটি দলীল হল নিম্নরূপঃ
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল ও বিশ্লেষণ
ইমাম আবু জাফর (তাহাবী র) বলেনঃ আমরা যে সমস্ত রিওয়ায়াত বর্ণনা করেছি, তাতে সেই সমস্ত আলিমদের অভিমতের বিশুদ্ধতা প্রমাণিত হয়েছে, যারা দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে গোসল করাকে ফরয মনে করেন। হাদীসসমূহের দিক দিয়ে এটা হচ্ছে এই অনুচ্ছেদের বর্ণনা। যুক্তির নিরিখে এর বর্ণনা ও বিশ্লেষণ নিম্নরূপঃ
বস্তুত আমরা ফকীহ আলিমদেরকে লক্ষ্য করেছি যে, এ বিষয়ে তাঁদের কোন মতবিরোধ নেই যে, যোনীপথে বীর্যপাত করা ব্যতীত স্ত্রী সহবাস করা হাদাস। একদল আলিম তো বলেছেন, এটা সর্বাপেক্ষা গলীয হাদাস। সুতরাং তাঁরা এতে সর্বাপেক্ষা উঁচু তাহারাতকে ওয়াজিব (ফরয) সাব্যস্ত করেছেন, আর তা হচ্ছে গোসল। অপর একদল আলিম বলেছেন, এটা হালকা পর্যায়ের হাদাসের ন্যায়। অতএব তাঁরা এতে হালকা পর্যায়ের তাহারাতকে ফরয সাব্যস্ত করেছেন, আর তা হচ্ছে উযূ। আমরা দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার বিষয়টিকে গভীরভাবে লক্ষ্য করার প্রয়াস পাব। আসলে কি তা সর্বাপেক্ষা কঠোর কি না? যেন আমরা তাতে সর্বাপেক্ষা কঠোর বস্তুকে ওয়াজিব সাব্যস্ত করতে পারি। আমরা সেই সমস্ত বস্তুকে পেয়েছি যা সহবাসের কারণে আবশ্যক হয়। তা হচ্ছে সিয়াম এবং হজ্জ বিনষ্ট হওয়া। তা হয় মিলনকালে দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে, যদিও এর সাথে বীর্যপাত না ঘটুক। আর এটা হজ্জের মধ্যে দম (কুরবানী) এবং হজ্জ কাযা করাকে ওয়াজিব করে। এবং সিয়ামের মধ্যে কাযা ও কাফ্ফারাকে ওয়াজিব করে; তাঁদের মতানুযায়ী যারা এটাকে ওয়াজিব সাব্যস্ত করেন। যদি যোনীপথ ব্যতীত অন্যস্থান দিয়ে স্ত্রী সহবাস করে তাহলে তার উপর হজ্জের ব্যাপারে শুধু দম (কুরবানী) ওয়াজিব হবে এবং সিয়ামের ব্যাপারে বীর্যপাত ব্যতীত তার উপর কোন কিছু ওয়াজিব হবে না। আর এই সমস্ত কিছু তার জন্য হজ্জ এবং সিয়াম পালন অবস্থায় হারাম। কোন ব্যক্তি যদি কোন নারীর সঙ্গে যিনা (ব্যভিচার) করে তার উপর হদ (শাস্তি) প্রয়োগ করা হবে, যদিও বীর্যপাত না ঘটুক। যদি সন্দেহজনকভাবে এরূপ করে তাহলে এর দ্বারা তার থেকে হদ (শাস্তি) রহিত হয়ে যাবে এবং মাহ্র ওয়াজিব হবে।
আর যদি তার সঙ্গে যোনীপথ ব্যতীত অন্য স্থান দিয়ে সঙ্গম করে তাহলে এর কারণে তার উপর না হদ প্রয়োগ ওয়াজিব হবে, না মাহ্র। কিন্তু তাকে তাযীর বা অন্য শাস্তি দেয়া হবে, যদি সেখানে সন্দেহের কোন ভিত্তি না থাকে। যখন কোন ব্যক্তি কোন নারীকে বিবাহ করে তার সাথে খালওয়াত (বৈধ সম্ভোগের নির্জনতা) ব্যতীত যোনীপথে সহবাস করে, তারপর তাকে তালাক দিয়ে দেয় তাহলে তার উপর মাহ্র আবশ্যক হবে, বীর্যপাত ঘটুক অথবা না ঘটুক এবং এই স্ত্রীলোকের উপর ইদ্দত পালনও ওয়াজিব হবে, এই আমল তাকে পূর্বে স্বামীর জন্য বৈধ করে দিবে। আর যদি তার সঙ্গে যোনীপথ ব্যতীত অন্য স্থানে সহবাস করা হয়, তবে তার উপর কোন কিছু ওয়াজিব হবে না। অবশ্য তালাকের অবস্থায় তাকে অর্ধেক মাহ্র প্রদান করা আবশ্যক, যদি তার জন্য মাহ্র নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। আর মাহ্র নির্ধারণ করা না হলে কিছু সামান (কাপড় ইত্যাদি) প্রদান করতে হবে। সুতরাং পূর্ববর্ণিত বস্তুগুলোতেও, যাতে বীর্যপাত ঘটেনি, সেই কঠোর বস্তু আবশ্যক হবে, যা বীর্যপাতের অবস্থায় সহবাসের দ্বারা আবশ্যক হয়। অর্থাৎ হদ প্রয়োগ হবে এবং মাহ্র ইত্যাদিও আবশ্যক হবে। সুতরাং যুক্তির দাবি হচ্ছে যে, অনুরূপভাবে এটা সর্বাপেক্ষা কঠোর হাদাস হিসাবে বিবেচিত হবে এবং হাদাস অবস্থায় যে সর্বাপেক্ষা কঠোর বস্তু আবশ্যিক হয় তাতে তাই আবশ্যিক হবে, আর তা হচ্ছে গোসল ।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আরেকটি দলীল
এ বিষয়ে আরেকটি দলীল হল যে, দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে ওয়াজিব হওয়া বস্তুগুলোকে আমরা লক্ষ্য করেছি। (তাতে বুঝা যাচ্ছে) যদি এরপরে বীর্যপাত হয় তাহলে বীর্যপাতের কারণে অন্য দ্বিতীয় কোন বিধান ওয়াজিব হয় না। বিধান তো দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে জারী হয়। আপনারা কি দেখতে পাচ্ছেন না, কোন ব্যক্তি যদি কোন নারীর সঙ্গে যিনা হিসাবে সহবাস করে এবং পরস্পরের খাত্নার স্থান মিলিত হয়ে যায় তাহলে এ কারণে তাদের উভয়ের উপর হদ ওয়াজিব হয়ে যায়। যদি সে তার উপরে (খাত্নার স্থান মিলিত হওয়ার পর) দীর্ঘ সময় পড়ে থাকে যার ফলশ্রুতিতে বীর্যপাত ঘটে যায় তাহলে সেই হদ ব্যতীত যা দুই খাত্নার স্থান পরস্পরে মিলিত হওয়ার কারণে ওয়াজিব হয়েছিল, অন্য কোন শাস্তি ওয়াজিব হরে না। আর যদি উক্ত সহবাস সন্দেহের ভিত্তিতে সংঘটিত হয়ে থাকে, তাহলে দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে তার উপর মাহ্র ওয়াজিব হবে। তারপর তার উপরে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকার কারণে যদি বীর্যপাত ঘটে যায়, তাহলে তার উপর এই বীর্যপাতের কারণে তা ব্যতীত কিছুই আবশ্যক হবে না, যা দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে ওয়াজিব হয়েছিল ।
অতএব এই সমস্ত অবস্থায় যা কিছু এমন ব্যক্তির উপর আবশ্যিক হবে, যে সহবাস করেছে এবং বীর্যপাতও হয়েছে; তা ঐ ব্যক্তির উপরেও আবশ্যিক হবে, যে সহবাস করেছে কিন্তু বীর্যপাত ঘটেনি। বস্তুত এখানে হুকুম আরোপিত হবে দুই খাত্নার স্থান পরস্পর মিলিত হওয়ার কারণে, পূর্ববর্তী বীর্যপাতের কারণে নয়। সুতরাং যুক্তির দাবি হচ্ছে, বীর্যপাতের সাথে সঙ্গমকারীর উপরে গোসল ওয়াজিব হয় দুই খাত্নার স্থান পরস্পরে মিলিত হওয়ার কারণে, পরবর্তী বীর্যপাতের কারণে নয়। এতে তাঁদের অভিমত প্রমাণিত হল, যাঁরা বলেন যে, স্ত্রী সহবাস গোসলকে ওয়াজিব (ফরয) করে, এর সাথে বীর্যপাত ঘটুক বা না ঘটুক। এটা ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ), ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) সহ সাধারণ আলিমগণের অভিমত।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আরো একটি দলীলঃ এ বিষয়ে আরো একটি দলীল হল নিম্নরূপঃ
باب الذي يجامع ولا ينزل
347 - حَدَّثَنَا أَحْمَدُ، قَالَ: ثنا: مُسَدَّدٌ، قَالَ: ثنا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ زِرٍّ، عَنْ عَلِيٍّ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , مِثْلَهُ قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَقَدْ ثَبَتَ بِهَذِهِ الْآثَارِ الَّتِي رَوَيْنَاهَا , صِحَّةَ قَوْلِ مَنْ ذَهَبَ إِلَى وُجُوبِ الْغُسْلِ بِالْتِقَاءِ الْخِتَانَيْنِ. فَهَذَا وَجْهُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طَرِيقِ الْآثَارِ. وَأَمَّا وَجْهُهُ مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , فَإِنَّا رَأَيْنَاهُمْ لَمْ يَخْتَلِفُوا أَنَّ الْجِمَاعَ فِي الْفَرْجِ الَّذِي لَا إِنْزَالَ مَعَهُ حَدَثٌ. فَقَالَ قَوْمٌ: هُوَ أَغْلَظُ الْأَحْدَاثِ , فَأَوْجَبُوا فِيهِ أَغْلَظَ الطَّهَارَاتِ , وَهُوَ الْغُسْلُ. وَقَالَ قَوْمٌ: هُوَ كَأَخَفِّ الْأَحْدَاثِ , فَأَوْجَبُوا فِيهِ أَخَفَّ الطَّهَارَاتِ , وَهُوَ الْوُضُوءُ. فَأَرَدْنَا أَنْ نَنْظُرَ إِلَى الْتِقَاءِ الْخِتَانَيْنِ: هَلْ هُوَ أَغْلَظُ الْأَشْيَاءِ فَنُوجِبُ فِيهِ أَغْلَظَ مَا يَجِبُ فِي ذَلِكَ فَوَجَدْنَا أَشْيَاءَ يُوجِبُهَا الْجِمَاعُ , وَهُوَ فَسَادُ الصِّيَامِ وَالْحَجِّ , فَكَانَ ذَلِكَ بِالْتِقَاءِ الْخِتَانَيْنِ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ مَعَهُ إِنْزَالٌ , وَيُوجِبُ ذَلِكَ فِي الْحَجِّ , الدَّمَ , وَقَضَاءَ الْحَجِّ , وَيُوجِبُ فِي الصِّيَامِ , الْقَضَاءَ وَالْكَفَّارَةَ , فِي قَوْلِ مَنْ يُوجِبُهَا. وَلَوْ كَانَ جَامَعَ فِيمَا دُونَ الْفَرْجِ , وَجَبَ عَلَيْهِ فِي الْحَجِّ دَمٌ فَقَطْ , وَلَمْ يَجِبْ عَلَيْهِ فِي الصِّيَامِ شَيْءٌ إِلَّا أَنْ يُنْزِلَ , وَكُلُّ ذَلِكَ مُحَرَّمٌ عَلَيْهِ فِي حَجِّهِ وَصِيَامِهِ , وَكَانَ مَنْ زَنَى بِامْرَأَةٍ حُدَّ , وَإِنْ لَمْ يُنْزِلْ وَلَوْ فَعَلَ ذَلِكَ عَلَى وَجْهِ شُبْهَةٍ , فَسَقَطَ بِهَا الْحَدُّ عَنْهُ , وَجَبَ عَلَيْهِ الْمَهْرُ. وَكَانَ لَوْ جَامَعَهَا فِيمَا دُونَ الْفَرْجِ , لَمْ يَجِبْ عَلَيْهِ فِي ذَلِكَ حَدٌّ وَلَا مَهْرٌ , وَلَكِنَّهُ يُعَزَّرُ إِذَا لَمْ تَكُنْ هُنَاكَ شُبْهَةٌ. وَكَانَ الرَّجُلُ إِذَا تَزَوَّجَ الْمَرْأَةَ فَجَامَعَهَا جِمَاعًا لَا خَلْوَةَ مَعَهُ فِي الْفَرْجِ ثُمَّ طَلَّقَهَا , كَانَ عَلَيْهِ الْمَهْرُ أَنْزَلَ أَوْ لَمْ يُنْزِلْ , وَوَجَبَتْ عَلَيْهَا الْعِدَّةُ وَأَحَلَّهَا ذَلِكَ لِزَوْجِهَا الْأَوَّلِ. وَلَوْ جَامَعَهَا فِيمَا دُونَ الْفَرْجِ لَمْ يَجِبْ فِي ذَلِكَ عَلَيْهِ شَيْءٌ , وَكَانَ عَلَيْهِ فِي الطَّلَاقِ نِصْفُ الْمَهْرِ , إِنْ كَانَ سَمَّى لَهَا مَهْرًا , أَوِ الْمُتْعَةُ إِذَا لَمْ يَكُنْ سَمَّى لَهَا مَهْرًا. فَكَانَ يَجِبُ فِي هَذِهِ الْأَشْيَاءِ الَّتِي وَصَفْنَا , الَّتِي لَا إِنْزَالَ مَعَهَا أَغْلَظُ مَا يَجِبُ فِي الْجِمَاعِ الَّذِي مَعَهُ الْإِنْزَالُ , مِنَ الْحُدُودِ وَالْمُهُورِ , وَغَيْرِ ذَلِكَ. فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ , أَنْ يَكُونَ كَذَلِكَ , هُوَ فِي حُكْمِ الْأَحْدَاثِ , أَغْلَظُ الْأَحْدَاثِ , وَيَجِبُ فِيهِ أَغْلَظُ مَا يَجِبُ فِي الْأَحْدَاثِ , وَهُوَ الْغُسْلُ. وَحُجَّةٌ أُخْرَى فِي ذَلِكَ , أَنَّا رَأَيْنَا هَذِهِ الْأَشْيَاءَ الَّتِي وَجَبَتْ بِالْتِقَاءِ الْخِتَانَيْنِ , فَإِذَا كَانَ بَعْدَهَا الْإِنْزَالُ لَمْ يَجِبْ بِالْإِنْزَالِ حُكْمٌ ثَانٍ , وَإِنَّمَا الْحُكْمُ لِالْتِقَاءِ الْخِتَانَيْنِ أَلَا تَرَى أَنَّ رَجُلًا لَوْ جَامَعَ امْرَأَةً جِمَاعَ زِنَاءٍ , فَالْتَقَى خِتَانَاهُمَا , وَجَبَ الْحَدُّ عَلَيْهِمَا بِذَلِكَ , وَلَوْ أَقَامَ عَلَيْهِمَا حَتَّى أَنْزَلَ لَمْ يَجِبْ بِذَلِكَ عَلَيْهِ عُقُوبَةٌ , غَيْرُ الْحَدِّ الَّذِي وَجَبَ عَلَيْهِ بِالْتِقَاءِ الْخِتَانَيْنِ , وَلَوْ كَانَ ذَلِكَ الْجِمَاعُ عَلَى وَجْهِ شُبْهَةٍ , فَوَجَبَ عَلَيْهِ الْمَهْرُ بِالْتِقَاءِ الْخِتَانَيْنِ , ثُمَّ أَقَامَ عَلَيْهَا حَتَّى أَنْزَلَ , لَمْ يَجِبْ عَلَيْهِ فِي ذَلِكَ الْإِنْزَالِ شَيْءٌ , بَعْدَمَا وَجَبَ بِالْتِقَاءِ الْخِتَانَيْنِ وَكَانَ مَا يُحْكَمُ بِهِ فِي هَذِهِ الْأَشْيَاءِ عَلَى مَنْ جَامَعَ فَأَنْزَلَ , هُوَ مَا يُحْكَمُ بِهِ عَلَيْهِ إِذَا جَامَعَ وَلَمْ يُنْزِلْ , وَكَانَ الْحُكْمُ فِي ذَلِكَ هُوَ لِالْتِقَاءِ الْخِتَانَيْنِ لَا لِلْإِنْزَالِ الَّذِي يَكُونُ بَعْدَهُ. فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ , أَنْ يَكُونَ الْغُسْلُ الَّذِي يَجِبُ عَلَى مَنْ جَامَعَ وَأَنْزَلَ , هُوَ بِالْتِقَاءِ الْخِتَانَيْنِ لَا بِالْإِنْزَالِ الَّذِي يَكُونُ بَعْدَهُ. فَثَبَتَ بِذَلِكَ قَوْلُ الَّذِينَ قَالُوا: إِنَّ الْجِمَاعَ يُوجِبُ الْغُسْلَ , كَانَ مَعَهُ إِنْزَالٌ , أَوْ لَمْ يَكُنْ وَهَذَا قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ , وَعَامَّةِ الْعُلَمَاءِ رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى. وَحُجَّةٌ أُخْرَى فِي ذَلِكَ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসেও গোসল ফরয হয়। মুসলিম শরীফে হযরত আবু মুসা আশআ’রী রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসে গোসল ফরয হওয়া বা না হওয়ার বিষয়ে মুহাজির এবং আনসারদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে তিনি হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট বিষয়টি জিজ্ঞেস করলেন। জবাবে তিনি বললেন যে, শুধু সহবাস হলেই গোসল ফরয হবে। (মুসলিম-৬৭৮) এ থেকে বুঝা যায় যে, এ বিষয়টি নিয়ে সাহাবায়ে কিরামের শুরু যুগে মতবিরোধ থাকলেও তাঁদের সর্বশেষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো গোসল করতে হবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/১৬১) সুতরাং হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যিনি এ বিষয়ে অন্য যে কারো চেয়ে ভালো জানতেন। সুতরাং কোন সাহাবার ভিন্ন মত থাকলেও হযরত আয়েশা রা.-এর মত ও বর্ণনা অগ্রাধিকারের জোর দাবী রাখে।
