শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৩৪
অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি সহবাস করে; কিন্তু বীর্যপাত হয় না
৩৩৪। ফাহাদ (রাহঃ).... সাঈদ ইবন মুসাইয়্যাব (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আনসারী কতিপয় (সাহাবী) ফাতওয়া প্রদান করতেন যে, যখন কোন ব্যক্তি স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে এবং তার বীর্যপাত না ঘটে তাহলে তার উপর গোসল ফরয হবে না।
ইমাম তাহাবীর মন্তব্য
মুহাজির সাহাবীগণ এই বিষয়ে তাঁদের অনুসরণ করতেন না। বস্তুত এটাও এর রহিত হওয়ার প্রমাণ বহন করে। যেহেতু উসমান (রাযিঃ) ও যুবাইর (রাযিঃ) উভয়েই মুহাজিরদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং তারা উভয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে সেই বিষয়টি শুনেছেন, যা আমরা তাঁদেরই সূত্রে এই অনুচ্ছেদের শুরুতে রিওয়ায়াত করেছি। তারপর তাঁরা এর পরিপন্থী বক্তব্য প্রদান করেছেন। এটা তাঁদের থেকে কখনও জায়িয হত না যদি তাঁদের উভয়ের নিকট রহিতকরণ সাব্যস্ত না হত। এরপর বিষয়টি উমার ইব্‌ন খাত্তাব (রাযিঃ) মুহাজিরীন ও আনসার সাহাবীগণের সম্মুখে স্পষ্টরূপে উপস্থাপন করলেন। তাঁর নিকট (গোসল ফরয না হওয়া) সাব্যস্ত হয়নি। এ জন্য তিনি লোকদেরকে গোসলের নির্দেশ দিয়েছেন। আর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেননি। বরং সকলে তার নির্দেশ মেনে নিয়েছেন। বস্তুত তাঁরা যে তাঁর অভিমতের দিকে ফিরে এসেছেন, এটি এর প্রমাণ (অর্থাৎ গোসল করা ফরয)।
باب الذي يجامع ولا ينزل
334 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدٍ قَالَ: ثنا عُبَيْدِ اللهِ بْنُ عَمْرٍو , عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ , عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ الْجَمَلِيِّ , عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيِّبِ قَالَ: «كَانَ رِجَالٌ مِنَ الْأَنْصَارِ يُفْتُونَ أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا جَامَعَ الْمَرْأَةَ , وَلَمْ يُنْزِلْ , فَلَا غُسْلَ عَلَيْهِ , وَكَانَ الْمُهَاجِرُونَ , لَا يُتَابِعُونَهُمْ عَلَى ذَلِكَ» فَهَذَا يَدُلُّ عَلَى نَسْخِ ذَلِكَ أَيْضًا , لِأَنَّ عُثْمَانَ , وَالزُّبَيْرَ , هُمَا مِنَ الْمُهَاجِرِينَ , وَقَدْ سَمِعَا مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , مَا قَدْ رَوَيْنَا عَنْهُمَا فِي أَوَّلِ هَذَا الْبَابِ ثُمَّ قَدْ قَالَا بِخِلَافِ ذَلِكَ , فَلَا يَجُوزُ ذَلِكَ مِنْهُمَا إِلَّا وَقَدْ ثَبَتَ النَّسْخُ عِنْدَهُمَا. ثُمَّ قَدْ كَشَفَ ذَلِكَ , عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بِحَضْرَةِ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ , فَلَمْ يَثْبُتْ ذَلِكَ عِنْدَهُ , فَحَمَلَ النَّاسَ عَلَى غَيْرِهِ وَأَمَرَهُمْ بِالْغُسْلِ , وَلَمْ يَعْتَرِضْ عَلَيْهِ فِي ذَلِكَ أَحَدٌ , وَسَلَّمُوا ذَلِكَ لَهُ , فَذَلِكَ دَلِيلٌ عَلَى رُجُوعِهِمْ أَيْضًا إِلَى قَوْلِهِ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসেও গোসল ফরয হয়। মুসলিম শরীফে হযরত আবু মুসা আশআ’রী রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসে গোসল ফরয হওয়া বা না হওয়ার বিষয়ে মুহাজির এবং আনসারদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে তিনি হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট বিষয়টি জিজ্ঞেস করলেন। জবাবে তিনি বললেন যে, শুধু সহবাস হলেই গোসল ফরয হবে। (মুসলিম-৬৭৮) এ থেকে বুঝা যায় যে, এ বিষয়টি নিয়ে সাহাবায়ে কিরামের শুরু যুগে মতবিরোধ থাকলেও তাঁদের সর্বশেষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো গোসল করতে হবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/১৬১) সুতরাং হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যিনি এ বিষয়ে অন্য যে কারো চেয়ে ভালো জানতেন। সুতরাং কোন সাহাবার ভিন্ন মত থাকলেও হযরত আয়েশা রা.-এর মত ও বর্ণনা অগ্রাধিকারের জোর দাবী রাখে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৩৩৪ | মুসলিম বাংলা