আল মুওয়াত্তা - ইমাম মালিক রহঃ
৯. সফরাবস্থায় নামায কসর পড়া
হাদীস নং: ৪০৫
২৪. নামায সম্পর্কিত বিবিধ আহকাম
রেওয়ায়ত ৮৭. আব্বাদ ইবনে তামীম (রাহঃ) তাহার চাচা হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে মসজিদে চিৎ হইয়া শায়িত দেখিয়াছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এক পা অপর পায়ের উপর রাখিয়াছিলেন।
সাঈদ ইবনে মুসায়্যাব (রাহঃ) বলেনঃ উমর ইবনে খাত্তাব ও উসমান ইবনে আফফান (রাযিঃ) উভয়ে অনুরূপ করিতেন।
সাঈদ ইবনে মুসায়্যাব (রাহঃ) বলেনঃ উমর ইবনে খাত্তাব ও উসমান ইবনে আফফান (রাযিঃ) উভয়ে অনুরূপ করিতেন।
بَاب جَامِعِ الصَّلَاةِ
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ عَنْ عَمِّهِ أَنَّهُ رَأَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُسْتَلْقِيًا فِي الْمَسْجِدِ وَاضِعًا إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ وَعُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا كَانَا يَفْعَلَانِ ذَلِكَ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে দেখা যাচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে এভাবে চিত হয়ে শুয়েছিলেন যে, তাঁর এক পা অন্য পায়ের উপর রাখা ছিল। এর দ্বারা বোঝা যায় এভাবে শোওয়ায় কোনও দোষ নেই। কিন্তু অপর এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লাম এভাবে শুইতে নিষেধ করেছেন। যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لَا يَسْتَلْقِيَنَّ أَحَدُكُمْ ثُمَّ يَضَعُ إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى
'তোমাদের কেউ যেন চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা না রাখে’।
(সহীহ মুসলিম : ২০৯৯; সুনানে আবূ দাউদ: ৪৮৬৫; জামে' তিরমিযী : ২৭৬৬; মুসনাদুল বাযযার: ৪৬৮৪; মুসনাদে আবু ইয়া'লা: ২১৮১; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৯০৫৯; হাকিম, আল মুস্তাদরাক: ৭৭০১)
এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যাচ্ছে চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা যাবে না। সুতরাং উভয় হাদীছকে পরস্পরবিরোধী মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই। কেননা চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ তখন, যখন হাঁটু খাড়া থাকে। কারণ হাঁটু দাঁড় করিয়ে এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে উভয় পা যদি সোজা করে বিছানো থাকে, তবে সে অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার কোনও আশঙ্কা থাকে না। তাই সে অবস্থায় চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ নয়। মোটকথা দুই হাদীছের সম্পর্ক দুই অবস্থার সঙ্গে। সে হিসেবে উভয়ের মধ্যে কোনও বিরোধ থাকে না। উল্লেখ্য, হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে তখন, যখন পরিধানে লুঙ্গি থাকে। পক্ষান্তরে পরিধানে যদি পায়জামা থাকে, তবে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে না। সে ক্ষেত্রে হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায়ও এক পায়ের উপর আরেক পা রাখা নিষেধ হবে না।
বোঝা গেল অন্যের সামনে সতর ঢেকে রাখা জরুরি। পোশাক পরিধানের মূল উদ্দেশ্যই সতর ঢাকা। তাই শয়ন, জাগরণ, চলাফেরা, ওঠাবসা সর্বাবস্থায় এদিকে লক্ষ রাখা চাই। এমন কোনওভাবে পোশাক পরতে নেই বা এমন কোনও অঙ্গভঙ্গি অবলম্বন করতে নেই, যাতে অন্যের সামনে সতর বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ইসলামে সতর ঢাকার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোনও অবস্থায়ই যাতে অন্যের সামনে সতর উন্মুক্ত হয়ে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখা একান্ত কর্তব্য।
খ. শোওয়া ও ঘুমন্ত অবস্থায় সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ সময় সতরের বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন খুব বেশি।
لَا يَسْتَلْقِيَنَّ أَحَدُكُمْ ثُمَّ يَضَعُ إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى
'তোমাদের কেউ যেন চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা না রাখে’।
(সহীহ মুসলিম : ২০৯৯; সুনানে আবূ দাউদ: ৪৮৬৫; জামে' তিরমিযী : ২৭৬৬; মুসনাদুল বাযযার: ৪৬৮৪; মুসনাদে আবু ইয়া'লা: ২১৮১; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৯০৫৯; হাকিম, আল মুস্তাদরাক: ৭৭০১)
এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যাচ্ছে চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা যাবে না। সুতরাং উভয় হাদীছকে পরস্পরবিরোধী মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই। কেননা চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ তখন, যখন হাঁটু খাড়া থাকে। কারণ হাঁটু দাঁড় করিয়ে এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে উভয় পা যদি সোজা করে বিছানো থাকে, তবে সে অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার কোনও আশঙ্কা থাকে না। তাই সে অবস্থায় চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ নয়। মোটকথা দুই হাদীছের সম্পর্ক দুই অবস্থার সঙ্গে। সে হিসেবে উভয়ের মধ্যে কোনও বিরোধ থাকে না। উল্লেখ্য, হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে তখন, যখন পরিধানে লুঙ্গি থাকে। পক্ষান্তরে পরিধানে যদি পায়জামা থাকে, তবে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে না। সে ক্ষেত্রে হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায়ও এক পায়ের উপর আরেক পা রাখা নিষেধ হবে না।
বোঝা গেল অন্যের সামনে সতর ঢেকে রাখা জরুরি। পোশাক পরিধানের মূল উদ্দেশ্যই সতর ঢাকা। তাই শয়ন, জাগরণ, চলাফেরা, ওঠাবসা সর্বাবস্থায় এদিকে লক্ষ রাখা চাই। এমন কোনওভাবে পোশাক পরতে নেই বা এমন কোনও অঙ্গভঙ্গি অবলম্বন করতে নেই, যাতে অন্যের সামনে সতর বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ইসলামে সতর ঢাকার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোনও অবস্থায়ই যাতে অন্যের সামনে সতর উন্মুক্ত হয়ে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখা একান্ত কর্তব্য।
খ. শোওয়া ও ঘুমন্ত অবস্থায় সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ সময় সতরের বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন খুব বেশি।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: