আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৭- নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ৪১৪
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৬
২৮৮। মসজিদে প্রবেশ ও অন্যান্য কাজ ডান দিক থেকে আরম্ভ করা।
ইবনে উমর (রাযিঃ) প্রবেশের সময় প্রথমে ডান পা দিয়ে শুরু করতেন এবং বের হওয়ার সময় প্রথমে বাম পা দিয়ে শুরু করতেন।
ইবনে উমর (রাযিঃ) প্রবেশের সময় প্রথমে ডান পা দিয়ে শুরু করতেন এবং বের হওয়ার সময় প্রথমে বাম পা দিয়ে শুরু করতেন।
৪১৪। সুলাইমান ইবনে হারব (রাহঃ) ..... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) নিজের সমস্ত কাজে যথাসম্ভব ডানদিক থেকে আরম্ভ করা পছন্দ করতেন। পবিত্রতা হাসিলের সময়, মাথা আঁচড়ানোর সময় এবং জুতা পরিধানের সময়ও।
باب التَّيَمُّنِ فِي دُخُولِ الْمَسْجِدِ وَغَيْرِهِ وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يَبْدَأُ بِرِجْلِهِ الْيُمْنَى، فَإِذَا خَرَجَ بَدَأَ بِرِجْلِهِ الْيُسْرَى
426 - حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَشْعَثِ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحِبُّ التَّيَمُّنَ مَا اسْتَطَاعَ فِي شَأْنِهِ كُلِّهِ، فِي طُهُورِهِ وَتَرَجُّلِهِ وَتَنَعُّلِهِ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
আল্লাহ তা'আলা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মানবজাতির জন্য আদর্শ করে পাঠিয়েছেন। কুরআন মাজীদে ইরশাদ-
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ
বস্তুত রাসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ- এমন ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের আশা রাখে।(সূরা আহযাব (৩৩), আয়াত ২১)
আমরা আল্লাহ তা'আলার উপর বিশ্বাস রাখি এবং আখিরাতে মুক্তির আশা রাখি। তাই আমাদেরকে অবশ্যই রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদর্শরূপে গ্রহণ করতে হবে। তা করতে হবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে। কোন কাজ কীভাবে করব, কোন অঙ্গের কেমন ব্যবহার করব, সে ক্ষেত্রেও আমাদের কর্তব্য তাঁকে অনুসরণ করা। আমরা দেখতে পাচ্ছি তিনি পবিত্রতা অর্জন, মাথা আঁচড়ানো, জুতা পরিধান ও খানা খাওয়ায় ডান দিককে প্রাধান্য দিতেন। অর্থাৎ ওযু করতে প্রথমে ডান হাত ধুইতেন, তারপর বাম হাত। প্রথমে ডান পা, পরে বাম পা। মাথা আঁচড়াতে শুরুটা করতেন ডানদিক থেকে। পানাহার তো ডান হাতেই করতেন। এমনকি জুতা পরার ক্ষেত্রেও তাই করতেন- প্রথমে ডান পায়ে পরতেন, তারপর বাম পায়ে।
বাম হাত ব্যবহার করতেন কোন কোন কাজে? এ সম্পর্কে হাদীসে আছে- وَكَانَتِ الْيُسْرَى لِخَلَائِهِ وَمَا كَانَ مِنْ أَذَى (আর বাম হাত ছিল হাম্মামের কাজ ও ময়লা পরিষ্কার করার জন্য)। অর্থাৎ তিনি শৌচকর্ম করতেন বাম হাতে। এমনিভাবে নাক পরিষ্কার করা, শরীরে কোনও ময়লা বা নাপাকি লাগলে এমনিভাবে কোথাও কোনও ময়লা বা নাপাকি পড়ে থাকলে তা পরিষ্কার করার কাজে বাম হাত ব্যবহার করতেন।
ইদানীং অন্যদের দেখাদেখি মুসলিমসমাজ থেকেও ডান ও বাম হাত ব্যবহারের এ প্রভেদ অনেকটা দূর হয়ে গেছে। নির্বিচারে যে-কোনও কাজে যে-কোনও হাত ব্যবহার করতে লক্ষ করা যায়। বরং পানাহারে ডান হাতের পরিবর্তে বাম হাতের ব্যবহারই রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটাই যেন ভদ্রতা। নামাযী-কালামী মানুষকে পর্যন্ত বাম হাতে পানি ও চা পান করতে দেখা যায়। তারা অসংকোচে এটা করছে। দীনী মজলিসে পর্যন্ত বাম হাতে চা পান করতে দ্বিধাবোধ করছে না। কারণ তারা এতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এটা খুবই আফসোসের কথা। বড়ই লজ্জার কথা। আমরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ভুলে অমুসলিমদের সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি। প্রতিদিন কত বার খাবার খাওয়া, পানি পান করা, চা পান করা, ওষুধ খাওয়া বা অন্য কিছু মুখে নেওয়া হয়ে থাকে। প্রতিবারই তা করা হচ্ছে বাম হাতে। তাহলে এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন কতবার সুন্নতের খেলাফ করা হচ্ছে? এক পানাহারের ক্ষেত্রে আমরা রোজ কতবার নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ-পরিপন্থী কাজ করছি? এতে আমরা বিবেকের কোনও তাড়না বোধ করছি না। আমাদের দীনী অবক্ষয় কতটা গভীরে পৌঁছে গেছে! এ কেবল ডান হাতের স্থলে বাম হাতের ব্যবহার করা নয়। এটা অবিরত সুন্নতের বরখেলাফ কাজ। এটা দীনী অবক্ষয় ও ঈমানী অধঃপতনের পরিচায়ক। এর থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। আমাদের দীনী চেতনা জাগ্রত করতে হবে। ঈমান বলীয়ান করতে হবে। আর তা করা যাবে সুন্নতের অনুসরণ দ্বারা। সুন্নতের অনুসরণ বাদ দিয়ে আমরা কোনওদিনই ঈমানী বলে বলীয়ান হতে পারব না। সুতরাং অন্যান্য সুন্নতের মতো হাতের ব্যবহারেও আমাদেরকে অবশ্যই সুন্নতের পাবন্দি করতে হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. আমরা অবশ্যই পানাহার ও পোশাক-আশাক পরিধানসহ প্রতিটি উত্তম ও রুচিকর কাজে ডানহাতের ব্যবহার করব।
খ. শৌচকর্ম এবং নাপাকি ও ময়লা পরিষ্কার করব বামহাত দিয়ে।
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ
বস্তুত রাসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ- এমন ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের আশা রাখে।(সূরা আহযাব (৩৩), আয়াত ২১)
আমরা আল্লাহ তা'আলার উপর বিশ্বাস রাখি এবং আখিরাতে মুক্তির আশা রাখি। তাই আমাদেরকে অবশ্যই রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদর্শরূপে গ্রহণ করতে হবে। তা করতে হবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে। কোন কাজ কীভাবে করব, কোন অঙ্গের কেমন ব্যবহার করব, সে ক্ষেত্রেও আমাদের কর্তব্য তাঁকে অনুসরণ করা। আমরা দেখতে পাচ্ছি তিনি পবিত্রতা অর্জন, মাথা আঁচড়ানো, জুতা পরিধান ও খানা খাওয়ায় ডান দিককে প্রাধান্য দিতেন। অর্থাৎ ওযু করতে প্রথমে ডান হাত ধুইতেন, তারপর বাম হাত। প্রথমে ডান পা, পরে বাম পা। মাথা আঁচড়াতে শুরুটা করতেন ডানদিক থেকে। পানাহার তো ডান হাতেই করতেন। এমনকি জুতা পরার ক্ষেত্রেও তাই করতেন- প্রথমে ডান পায়ে পরতেন, তারপর বাম পায়ে।
বাম হাত ব্যবহার করতেন কোন কোন কাজে? এ সম্পর্কে হাদীসে আছে- وَكَانَتِ الْيُسْرَى لِخَلَائِهِ وَمَا كَانَ مِنْ أَذَى (আর বাম হাত ছিল হাম্মামের কাজ ও ময়লা পরিষ্কার করার জন্য)। অর্থাৎ তিনি শৌচকর্ম করতেন বাম হাতে। এমনিভাবে নাক পরিষ্কার করা, শরীরে কোনও ময়লা বা নাপাকি লাগলে এমনিভাবে কোথাও কোনও ময়লা বা নাপাকি পড়ে থাকলে তা পরিষ্কার করার কাজে বাম হাত ব্যবহার করতেন।
ইদানীং অন্যদের দেখাদেখি মুসলিমসমাজ থেকেও ডান ও বাম হাত ব্যবহারের এ প্রভেদ অনেকটা দূর হয়ে গেছে। নির্বিচারে যে-কোনও কাজে যে-কোনও হাত ব্যবহার করতে লক্ষ করা যায়। বরং পানাহারে ডান হাতের পরিবর্তে বাম হাতের ব্যবহারই রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটাই যেন ভদ্রতা। নামাযী-কালামী মানুষকে পর্যন্ত বাম হাতে পানি ও চা পান করতে দেখা যায়। তারা অসংকোচে এটা করছে। দীনী মজলিসে পর্যন্ত বাম হাতে চা পান করতে দ্বিধাবোধ করছে না। কারণ তারা এতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এটা খুবই আফসোসের কথা। বড়ই লজ্জার কথা। আমরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ভুলে অমুসলিমদের সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি। প্রতিদিন কত বার খাবার খাওয়া, পানি পান করা, চা পান করা, ওষুধ খাওয়া বা অন্য কিছু মুখে নেওয়া হয়ে থাকে। প্রতিবারই তা করা হচ্ছে বাম হাতে। তাহলে এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন কতবার সুন্নতের খেলাফ করা হচ্ছে? এক পানাহারের ক্ষেত্রে আমরা রোজ কতবার নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ-পরিপন্থী কাজ করছি? এতে আমরা বিবেকের কোনও তাড়না বোধ করছি না। আমাদের দীনী অবক্ষয় কতটা গভীরে পৌঁছে গেছে! এ কেবল ডান হাতের স্থলে বাম হাতের ব্যবহার করা নয়। এটা অবিরত সুন্নতের বরখেলাফ কাজ। এটা দীনী অবক্ষয় ও ঈমানী অধঃপতনের পরিচায়ক। এর থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। আমাদের দীনী চেতনা জাগ্রত করতে হবে। ঈমান বলীয়ান করতে হবে। আর তা করা যাবে সুন্নতের অনুসরণ দ্বারা। সুন্নতের অনুসরণ বাদ দিয়ে আমরা কোনওদিনই ঈমানী বলে বলীয়ান হতে পারব না। সুতরাং অন্যান্য সুন্নতের মতো হাতের ব্যবহারেও আমাদেরকে অবশ্যই সুন্নতের পাবন্দি করতে হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. আমরা অবশ্যই পানাহার ও পোশাক-আশাক পরিধানসহ প্রতিটি উত্তম ও রুচিকর কাজে ডানহাতের ব্যবহার করব।
খ. শৌচকর্ম এবং নাপাকি ও ময়লা পরিষ্কার করব বামহাত দিয়ে।
