মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৩১- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল

হাদীস নং: ৬০৮০
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৮০। ওসমান ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে মওয়াহব (রহঃ) বলেন, একদা মিসরের এক ব্যক্তি হজ্জে বায়তুল্লাহ্র উদ্দেশ্যে (মক্কায়) আসিল। তখন সে সেইখানে একদল লোককে উপবিষ্ট দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিল, ইহারা কে? লোকেরা বলিল, ইহারা কোরাইশ। সে আবার জিজ্ঞাসা করিল, ইহাদের মধ্যে এই প্রবীণ বয়স্ক ব্যক্তি কে? লোকেরা বলিল, আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ)। তখন সে বলিল, হে ইবনে ওমর! আমি আপনাকে কিছু কথা জিজ্ঞাসা করিতে চাই। আপনি আমাকে বলুন, আপনি কি জানেন যে, ওহুদ যুদ্ধের দিন হযরত ওসমান (যুদ্ধক্ষেত্র হইতে) পলায়ন করিয়াছিলেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করিল, আপনি কি ইহাও জানেন যে, ওসমান বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত হন নাই? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। লোকটি পুনরায় জিজ্ঞাসা করিল, আপনি কি জানেন যে, ওসমান বায়আতে রেযওয়ান (হোদায়বিয়াতে অনুষ্ঠিত বায়আত) হইতে অনুপস্থিত ছিলেন এবং উহাতে যোগদান করেন নাই। তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। [ঐ লোকটি ছিল হযরত ওসমান (রাঃ)-এর প্রতি বিদ্বেষী, তাই ওসমানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের স্বীকৃতি শুনিয়া আনন্দে] সে বলিয়া উঠিল, “আল্লাহু আকবর।” তখন ইবনে ওমর (রাঃ) বলিলেন, এইবার আস! প্রকৃত ব্যাপারটি তোমাকে বুঝাইয়া দিতেছি। ওহুদের দিন তাঁহার পলায়নের ব্যাপারটি—সেই সম্পর্কে আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, তাঁহার সেই ত্রুটিটি আল্লাহ্ তা'আলা মাফ করিয়া দিয়াছেন। আর বদর যুদ্ধ হইতে তাহার অনুপস্থিতির ব্যাপার হইল, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কন্যা হযরত রোকাইয়া ছিলেন হযরত ওসমানের স্ত্রী। আর তিনি ছিলেন ঐ সময় রোগশয্যায়। তাই রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) (তাঁহার সেবা-শুশ্রূষার জন্য) ওসমানকে বলিয়াছিলেনঃ এই যুদ্ধে যাহারা যোগদান করিবে, তাহাদের সমপরিমাণ সওয়াব তুমি পাইবে এবং (অনুরূপভাবে) গনীমতের অংশ হইতেও তাহাদের সমপরিমাণ অংশ তুমি লাভ করিবে।
আর “বায়আতে রেযওয়ান” হইতে তাঁহার অনুপস্থিতির ব্যাপার হইল——মক্কার অধিবাসীদের নিকট ওসমান অপেক্ষা অধিকতর সম্মানিত যদি অপর কেহ থাকিত, তাহা হইলে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ওসমানের স্থলে নিশ্চয় তাহাকেই পাঠাইতেন। (কিন্তু ঐরূপ কোন ব্যক্তিই ছিল না।) তাই রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) (দূত হিসাবে) ওসমানকেই পাঠাইয়াছিলেন। ওসমানের মক্কায় চলিয়া যাওয়ার পর “বায়আতুর রেফওয়ান” অনুষ্ঠিত হয়। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আপন ডান হাতের দিকে ইংগিত করিয়া বলিলেন, ইহা ওসমানের হাত। তারপর তিনি সেই হাতটি নিজের অপর হাতের উপর স্থাপন করিয়া বলিলেন, “ইহা ওসমানের বায়আত।” অতঃপর ইবনে ওমর (রাঃ) লোকটিকে বলিলেন, এখন তুমি এই বিবরণ সঙ্গে লইয়া যাও। —বুখারী
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَوْهَبٍ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ مِصْرَ يُرِيدُ حَجَّ الْبَيْتِ فَرَأَى قَوْمًا جُلُوسًا فَقَالَ: مَنْ هَؤُلَاءِ الْقَوْمُ؟ قَالُوا: هَؤُلَاءِ قُرَيْشٌ. قَالَ فَمَنِ الشَّيْخُ فِيهِمْ؟ قَالُوا: عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ. قَالَ: يَا ابْنَ عُمَرَ إِنِّي سَائِلُكَ عَنْ شَيْءٍ فَحَدِّثْنِي: هَلْ تَعْلَمُ أَنَّ عُثْمَانَ فَرَّ يَوْمَ أُحُدٍ؟ قَالَ: نَعَمْ. قَالَ: هَلْ تَعْلَمُ أَنَّهُ تَغَيَّبَ عَنْ بَدْرٍ وَلَمْ يَشْهَدْهَا؟ قَالَ: نَعَمْ. قَالَ: هَلْ تَعْلَمُ أَنَّهُ تَغَيَّبَ عَنْ بَيْعَةِ الرِّضْوَانِ فَلَمْ يَشْهَدْهَا؟ قَالَ: نَعَمْ؟ قَالَ: اللَّهُ أَكْبَرُ قَالَ ابْنُ عُمَرَ: تَعَالَ أُبَيِّنْ لَك أما فِراره يَوْم أُحد فأشهدُ أَن اللَّهَ عَفَا عَنْهُ وَأَمَّا تَغَيُّبُهُ عَنْ بَدْرٍ فَإِنَّهُ كَانَتْ تَحْتَهُ رُقَيَّةُ بِنْتُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَتْ مَرِيضَةً فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ لَكَ أَجْرَ رَجُلٍ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا وَسَهْمَهُ» . وَأَمَّا تَغَيُّبُهُ عَنْ بَيْعَةِ الرِّضْوَانِ فَلَوْ كَانَ أَحَدٌ أَعَزَّ بِبَطْنِ مَكَّةَ مِنْ عُثْمَانَ لَبَعَثَهُ فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عُثْمَان وَكَانَت بَيْعةُ الرضْوَان بعدَ مَا ذَهَبَ عُثْمَانُ إِلَى مَكَّةَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ الْيُمْنَى: «هَذِهِ يَدُ عُثْمَانَ» فَضَرَبَ بِهَا عَلَى يَدِهِ وَقَالَ: «هَذِه لعُثْمَان» . فَقَالَ لَهُ ابْنُ عُمَرَ: اذْهَبْ بِهَا الْآنَ مَعَكَ. رَوَاهُ البُخَارِيّ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হযরত ওসমানের প্রকৃত অবস্থান আমি তোমাকে বলিয়া দিয়াছি, যাহার প্রেক্ষিতে তাহার উপর কোন অভিযোগ থাকে না। এখন তুমি ওসমান সম্পর্কে যাহা ইচ্ছা তাহা আকীদা লইয়া যাইতে পার।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৬০৮০ | মুসলিম বাংলা