মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৯১৩
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৯১৩। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, যখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিবি যয়নবের বিবাহে বর ছিলেন, তখন আমার মা উম্মে সুলাইম (কিছু হাদিয়া পাঠাইবার ইচ্ছা করিলেন, সুতরাং তিনি) কিছু খেজুর, মাখন এবং পনীরের সংমিশ্রণে হাইসা প্রস্তুত করিলেন। তারপর উহাকে তিনি একটি পাত্রে রাখিয়া বলিলেন, হে আনাস। ইহা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে লইয়া যাও এবং বলিও, এইগুলি আমার মা আপনার খেদমতে পাঠাইয়াছেন এবং তিনি আপনাকে সালাম জানাইয়াছেন। আর তিনি ইহাও বলিয়াছেন যে, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। ইহা আমাদের পক্ষ হইতে আপনার জন্য অতি সামান্য হাদিয়া। আনাস বলেন, আমি উহা লইয়া গেলাম এবং আমার মা যাহাকিছু বলিবার জন্য আমাকে আদেশ করিয়াছিলেন, আমি তাহাও বলিলাম।তখন রাসুলুল্লাহ্ (ছাঃ) আমাকে বলিলেন এইগুলি রাখ। অতঃপর আমাকে কতিপয় লোকের নাম উল্লেখ করিয়া বলিলেন, যাও এবং অমুক, অমুক ও অমুককে, আর ইহা ছাড়াও যাহার সহিত তোমার দেখা হইবে তাহাদিগকেও দাওয়াত দিবে। সুতরাং তিনি যাহাদের নাম উল্লেখ করিয়াছেন তাহাদিগকে এবং আমার সাথে যাহার যাহার দেখা হইয়াছে তাহাকে দাওয়াত দিলাম। অতঃপর আমি ফিরিয়া আসিয়া দেখিলাম, ঘরভর্তি লোকজন।
হযরত আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হইল; তথায় আপনাদের সংখ্যা কতজন ছিল। তিনি বলিলেন, প্রায় তিনশত। আমি দেখিতে পাইলাম, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম "হাইসার" পাত্রের মধ্যে নিজের হাত রাখিলেন এবং আল্লাহর যাহা ইচ্ছা তাহা পাঠ করিলেন। তারপর দশ দশজনের দলকে উহা হইতে খাইবার জন্য ডাকিতে থাকিলেন। আর তাহাদিগকে বলিলেন, তোমরা আল্লাহর নাম লইয়া প্রত্যেকে নিজ নিজ সম্মুখ হইতে খাওয়া শুরু কর। আনাস বলেন, তাহারা সকলে পরিতৃপ্ত হইয়া খাইলেন। একদল খাইয়া বাহির হইতেন এবং আরেক দল প্রবেশ করিতেন, এইভাবে সমস্ত লোকই খানা খাইলেন। অতঃপর নবী (ছাঃ) আমাকে বলিলেন, হে আনাস। পাত্রটি উঠাও। তখন আমি পাত্রটি উঠাইলাম, কিন্তু আমি সঠিকভাবে বলিতে পারিতেছি না, যখন আমি পাত্রটি রাখিয়াছিলাম, তখন পাত্রটিতে “মালীদা” বেশী ছিল নাকি এখন, যখন আমি উহাকে উঠাইলাম। মোত্তাঃ
كتاب الفضائل والشمائل
وَعَن أَنَسٍ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَرُوسًا بِزَيْنَبَ فَعَمَدَتْ أُمِّي أُمُّ سُلَيْمٍ إِلَى تَمْرٍ وَسَمْنٍ وَأَقِطٍ فَصَنَعَتْ حَيْسًا فَجَعَلَتْهُ فِي تَوْرٍ فَقَالَتْ يَا أَنَسُ اذْهَبْ بِهَذَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْ بَعَثَتْ بِهَذَا إِلَيْكَ أُمِّي وَهِيَ تُقْرِئُكَ السَّلَامَ وَتَقُولُ إِنَّ هَذَا لَكَ مِنَّا قَلِيلٌ يَا رَسُولَ الله قَالَ فَذَهَبْتُ فَقُلْتُ فَقَالَ ضَعْهُ ثُمَّ قَالَ اذْهَبْ فَادْعُ لِي فُلَانًا وَفُلَانًا وَفُلَانًا رِجَالًا سَمَّاهُمْ وَادْعُ مَنْ لَقِيتَ فَدَعَوْتُ مَنْ سَمَّى وَمَنْ لَقِيتُ فَرَجَعْتُ فَإِذَا الْبَيْتُ غَاصٌّ بِأَهْلِهِ قِيلَ لأنس عدد كم كَانُوا؟ قَالَ زهاء ثَلَاث مائَة. فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَضَعَ يَدَهُ عَلَى تِلْكَ الْحَيْسَةِ وَتَكَلَّمَ بِمَا شَاءَ اللَّهُ ثُمَّ جَعَلَ يَدْعُو عَشَرَةً عَشَرَةً يَأْكُلُونَ مِنْهُ وَيَقُول لَهُم: «اذْكروا اسْم الله وليأكلْ كُلُّ رَجُلٍ مِمَّا يَلِيهِ» قَالَ: فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا. فَخَرَجَتْ طَائِفَةٌ وَدَخَلَتْ طَائِفَةٌ حَتَّى أَكَلُوا كُلُّهُمْ قَالَ لِي يَا أَنَسُ ارْفَعْ. فَرَفَعْتُ فَمَا أَدْرِي حِينَ وَضَعْتُ كَانَ أَكْثَرَ أَمْ حِين رفعت. مُتَّفق عَلَيْهِ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

“হাইসা” এক প্রকারের মিশ্রিত খাদ্য। খেজুরের কুচি কুচি টুকরা, ঘি ও দুধের সংমিশ্রণে তৈয়ার করা হয়। আমাদের অত্রাঞ্চলে ইহাকে “পায়েস” এবং উর্দূভাষীগণ “মালীদা” বলেন। ইহা একদিকে সুস্বাদু, অপর দিকে বলকারকও বটে। সামান্য পরিমাণের খাদ্যে প্রায় তিন শত লোকের পরিতৃপ্ত হওয়া ছিল রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর বিশেষ মু'জেযা।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান