মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৮৬৮
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৬৮। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) হইতে বর্ণিত, হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) বলিয়াছেন, (হিজরতের সময়) আমি আমাদের মাথার উপরে মুশরিকদের পা দেখিতে পাইলাম, যখন আমরা সওর গুহায় ছিলাম। তখন আমি বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। যদি তাহাদের কেহ নিজের পায়ের দিকে তাকায়, তবে সে আমাদিগকে দেখিয়া ফেলিবে। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেনঃ হে আবু বকর। তুমি এমন দুই ব্যক্তি সম্পর্কে কি ধারণা পোষণ কর, যাহাদের তৃতীয় জন হইলেন স্বয়ং আল্লাহ্। -মোত্তাঃ
كتاب الفضائل والشمائل
بَاب فِي المعجزات: الْفَصْل الأول
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ الصّديق رَضِي الله عَنهُ قا ل: نظرتُ إِلى أقدامِ المشركينَ على رؤوسنا وَنَحْنُ فِي الْغَارِ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ أَنَّ أَحَدَهُمْ نَظَرَ إِلَى قَدَمِهِ أَبْصَرَنَا فَقَالَ: «يَا أَبَا بَكْرٍ مَا ظَنُّكَ بِاثْنَيْنِ اللَّهُ ثالثهما»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

معجزة (মু'জেযা), ইহা একটি আরবী শব্দ, عجز 'আজয' ধাতু হইতে নির্গত। ইহা অপারকতা, অসমর্থতা ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়। ইহার বিপরীত কুদরত বা সামর্থ্য। এই শব্দটির তাৎপর্য হইল, নবী-রাসূলগণ তাঁহাদের নবুওত ও রেসালতের স্বপক্ষে যেই সমস্ত অলৌকিক নিদর্শন পেশ করিয়াছেন, সমস্ত মাখলুক তাহার মুকাবিলা করিতে অক্ষম ও অপারক। কুরআনে সেইসমস্ত মু'জেযাকে الايات - البينات ও البراهين প্রভৃতি শব্দে উল্লেখ করা হইয়াছে। আবার নবী (ﷺ)-এর মু'জেযা তিন প্রকার। (এক) যাহা তাঁহার দেহ হইতে বহির্ভূত। যেমন— চন্দ্র দ্বিখণ্ডিত হওয়া, পাথরের সালাম করা, বৃক্ষ নিকটে আসা, খুঁটির ক্রন্দন করা, হরিণের অভিযোগ করা, মুষ্টির ভিতরের কংকরের সাক্ষ্য দেওয়া ইত্যাদি। (দুই) যাহা তাঁহার দেহের সহিত সম্পৃক্ত, যেমন—তাঁহার পৃথিবীতে আবির্ভাব হওয়া পর্যন্ত পূর্ব বংশ-পরম্পরা একটি নূর বা জ্যোতি তাঁহার মধ্যে বিদ্যমান থাকা। দুই কাঁধের মাঝখানে মোহরে নবুওত বিদ্যমান থাকা ইত্যাদি। (তিন) তাঁহার নৈতিক ও চারিত্রিক গুণাবলী। আর ইহার সংখ্যা অনেক। যেমন—তিনি জীবনে কোন দিন কোন সময়ে মিথ্যা বলেন নাই। জীবনে কোন দিন গর্হিত বা মন্দ কাজ করেন নাই। যুদ্ধের ময়দান বা শত্রুর সম্মুখ হইতে পলায়ন করেন নাই। তিনি ছিলেন নিৰ্ভীক, অকুতোভয়। সর্বাপেক্ষা দানশীল, আত্মনির্ভরশীল, দুনিয়া-বিমুখ, সত্যভাষী ইত্যাদি—তাঁহার দো'আ কোন সময়ই বৃথা যাইত না। ফলকথা, নবী (ﷺ)-এর মু'জেযা ছিল অসংখ্য। আলোচ্য অধ্যায়ে সীমিত কতিপয় মু'জেযার আলোচনা করা হইয়াছে। — অনুবাদক
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান