মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৮৫১
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৫১। ইয়াহইয়া ইবনে আবু কাসীর (রহঃ) বলেন, একদা আমি আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ)-কে কোরআনের সর্বপ্রথম নাযিল হওয়া আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলাম। তিনি বলিলেন, يَا أَيهَا المدثر আমি বলিলাম, লোকেরা তো বলে— اقْرَأ باسم ربِّك আবু সালামা বলিলেন; এই বিষয়ে আমি হযরত জাবেরকে জিজ্ঞাসা করিয়া ছিলাম এবং তুমি আমাকে যাহা বলিলে, আমিও তাঁহাকে অবিকল তাহাই বলিয়াছিলাম। জবাবে হযরত জাবের আমাকে বলিলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদের কাছে যাহা বলিয়াছেন, আমিও তোমাকে হুবহু তাহাই বলিব। রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আমি হেরা গুহায় (দিবা-রাত্র) এক নাগাড়ে একমাস অতিবাহিত করিয়াছি। সেখানের অবস্থানকাল শেষ করিয়া আমি সমতল ভূমিতে অবতরণ করিলাম। এই সময় আমাকে কেহ ডাক দিল। আমি ডানে তাকাইলাম, কিন্তু কিছুই দেখিতে পাইলাম না, আবার বামদিকে তাকাইলাম তখনও কিছু দেখিলাম না, আবার পিছনে তাকাইলাম এইবারও কিছুই দেখিলাম না। ইহার পর আমি মাথা তুলিয়া উপরের দিকে তাকাইলাম। এইবার বিরাট কিছু (জিবরাঈলকে তাঁহার আসল আকৃতিতে) দেখিতে পাইলাম। অতঃপর আমি বিবি খাদীজার কাছে আসিয়া বলিলাম, 'আমাকে কম্বল দ্বারা আবৃত কর' তাহারা আমাকে কম্বল দ্বারা আবৃত করিল এবং আমার গায়ে ঠাণ্ডা পানি ঢালিল, তখন নাযিল হইল—(অর্থাৎ,) “হে কম্বল আচ্ছাদিত ব্যক্তি! উঠ! সকলকে সতর্ক-সাবধান কর। তোমার রবের মাহাত্ম্য ঘোষণা কর। তোমার পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র রাখ এবং অপবিত্রতা (মূর্তিপূজা) হইতে পৃথক থাক।” ইহা নামায ফরয হওয়ার পূর্বের ঘটনা। — মোত্তাঃ
كتاب الفضائل والشمائل
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ قَالَ: سَأَلْتُ أَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَوَّلِ مَا نزل من الْقُرْآن؟ قَالَ: [يَا أَيهَا المدثر] قلت: يَقُولُونَ: [اقْرَأ باسم ربِّك] قَالَ أَبُو سَلَمَةَ: سَأَلْتُ جَابِرًا عَنْ ذَلِكَ. وَقُلْتُ لَهُ مِثْلَ الَّذِي قُلْتَ لِي. فَقَالَ لِي جَابِرٌ: لَا أُحَدِّثُكَ إِلَّا بِمَا حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: جَاوَرْتُ بِحِرَاءٍ شَهْرًا فَلَمَّا قَضَيْتُ جِوَارِي هَبَطْتُ فَنُودِيتُ فَنَظَرْتُ عَنْ يَمِينِي فَلَمْ أَرَ شَيْئًا وَنَظَرْتُ عَنْ شِمَالِي فَلَمْ أَرَ شَيْئًا وَنَظَرْتُ عَنْ خَلْفِي فَلَمْ أَرَ شَيْئًا فَرَفَعْتُ رَأْسِي فَرَأَيْتُ شَيْئًا فَأَتَيْتُ خَدِيجَةَ فَقُلْتُ: دَثِّرُونِي فَدَثَّرُونِي وصبُّوا عليَّ مَاء بَارِدًا فَنزلت: [يَا أَيهَا الْمُدَّثِّرُ. قُمْ فَأَنْذِرْ وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ. وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ. وَالرجز فاهجر] وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ تُفْرَضَ الصَّلَاةُ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

অর্থাৎ, নবী (ﷺ) হেরা গুহায় যেই এবাদত করিতেন, সেখানের এবাদতে পাঁচ ওয়াক্তের নামায ছিল না। মুহাক্কেক উলামাদের মতে সহীহ হাদীস অনুযায়ী اقْرَأ باسم ربِّك হইতে পাঁচটি আয়াত সর্বপ্রথম নাযিল হয়। ইহার পর ২/৩ বৎসর অহী অবতরণ বন্ধ থাকে, সেই সময় আবার নবী (ﷺ) অহীর অপেক্ষায় হেরা পাহাড়ে যাতায়াত করেন। অবশেষে পুনরায় ধারাবাহিকভাবে অহী আসিতে থাকে। হযরত জাবেরের এই হাদীসে অহী বন্ধ হওয়ার পর সর্বপ্রথম পুনঃ অহী নাযিল হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করা হইয়াছে। সুতরাং প্রথমোক্ত মতের সাথে ইহার কোন সংঘর্ষ থাকে না।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান