মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২৮- ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের আলামতের বর্ণনা

হাদীস নং: ৫৪৭৫
- ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের আলামতের বর্ণনা
প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের পূর্বলক্ষণসমূহ এবং দাজ্জালের বর্ণনা
৫৪৭৫। হযরত নাওয়াস ইবনে সামআন (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্ল আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাজ্জালের আলোচনা করিয়া বলিলেন যদি তাহার আবির্ভাব হয় আর আমি তোমাদের মাঝে বিদ্যমান থাকি, তখন তোমাদের মধ্যে আমিই তাহার সহিত দলীল-প্রমাণে বিজয়ী হইব। আর যদি তাহার আবির্ভাব ঘটে এবং আমি বিদ্যমান না থাকি, তখন তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তিই সরাসরি দলীল-প্রমাণে তাহার মুকাবিলা করিবে। তখন প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আমার পরিবর্তে আল্লাহই হইবেন সহায়ক। সে হইবে একজন জওয়ান, মাথার চুল কোঁকড়ান, ফোলা চক্ষুবিশিষ্ট। আমি তাহাকে (ইহুদী) আব্দুল উযযা ইবনে কাতানের সহিত তুলনা করিতে পারি। সুতরাং যে কেহ তাহাকে পাইবে, সে যেন তাহার সম্মুখে সূরায়ে কাহফের শুরুর আয়াত গুলি পাঠ করে। অপর এক বর্ণনায় আছে—সে যেন তাহার সম্মুখে সূরায়ে কাহফের প্রথমাংশ হইতে পাঠ করে। কেননা, এই আয়াতগুলি তোমাদিগকে দাজ্জালের ফিতনা হইতে নিরাপদে রাখিবে। সে সিরিয়া এবং ইরাকের মধ্যবর্তী রাস্তা দিয়া বাহির হইবে এবং চলার পথে ডানে ও বামে (-এর অঞ্চলসমূহে) ধ্বংসাত্মক ফ্যাসাদ সৃষ্টি করিবে। হে আল্লাহর বান্দাসকল। তোমরা (ঈমান ও আকীদায়) দ্বীনের উপর অটল থাকিবে। আমরা জিজ্ঞাসা করিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ । সে কত দিন যমীনে অবস্থান করিবে? তিনি বলিলেন চল্লিশ দিন। তবে তখনকার একদিন হইবে এক বৎসরের সমান এবং একদিন হইবে এক মাসের সমান আর একদিন হইবে এক সপ্তাহের সমান। আর অন্যান্য দিনগুলি হইবে তোমাদের স্বাভাবিক দিনগুলির ন্যায়। আমরা জিজ্ঞাসা করিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আচ্ছা বলুন তো! সেই একদিন, যাহা এক বৎসরের সমান হইবে, সেই দিবসে কি আমাদের পক্ষে এক দিনের নামাযই যথেষ্ট হইবে? তিনি বলিলেন, না। বরং সেই দিবসে এক একদিন পরিমাণ হিসার করিয়া নামায আদায় করিতে হইবে। আমরা জিজ্ঞাসা করিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। যমীনে তাহার চলার গতি কি পরিমাণ দ্রুত হইবে। তিনি বলিলেন; সেই মেঘের ন্যায় যাহার পিছনে প্রবল বায়ু রহিয়াছে। অতঃপর সে কোন এক সম্প্রদায়ের নিকট আসিবে এবং তাহাদিগকে (তাহার অনুসরণের আহ্বান করিবে। অতএব, লোকেরা তাহার প্রতি ঈমান আনিবে। তখন সে আকাশকে নির্দেশ করিবে, ফলে আকাশ বৃষ্টিবর্ষণ করিবে। যমীনকে নির্দেশ করিবে, ফলে যমীন (ঘাস-ফসলাদি ) উৎপাদন করিবে। লোকদের গবাদিপশু (সেই চারণভূমি হইতে) সন্ধ্যায় যখন ফিরিবে, তখন উচ্চ কুঁজবিশিষ্ট এবং দুধে স্তন ভর্তি (অবস্থায়) কোমর টানাইয়া ফিরিবে। অতঃপর সে (দাজ্জাল) অপর এক কওমের নিকট আসিয়া তাহাদিগকে নিজের খোদায়ীর দিকে আহ্বান করিবে, কিন্তু তাহারা তাহার দাবী প্রত্যাখ্যান করিবে। তখন সে উহাদের নিকট হইতে প্রত্যাবর্তন করিবে। অতএব, সেই কওমের লোকেরা মহা দুর্ভিক্ষে নিপতিত হইবে। ফলে তাহাদের হাতে মাল-সম্পদ কিছুই থাকিবে না। অতঃপর সে (দাজ্জাল) একটি অনাবাদ বিরান জায়গা অতিক্রম করিবে এবং উহাকে লক্ষ্য করিয়া বলিবে, তোমার অভ্যন্তরে যে সমস্ত গুপ্ত সম্পদ রহিয়াছে তাহা বাহির করিয়া দাও। অতঃপর উক্ত ধন-সম্পদ এমনিভাবে তাহার পশ্চাতে ছুটিতে থাকিবে, যেমনিভাবে মৌমাছির দল তাহাদের নেতা মৌমাছির পিছনে ছুটিয়া চলে। অতঃপর দাজ্জাল যৌবনে পরিপূর্ণ এক যুবককে তাহার (আনুগত্যের) প্রতি আহ্বান করিবে, (কিন্তু সে তাহা প্রত্যাখ্যান করিবে। ইহাতে দাজ্জাল তাহাকে তরবারির আঘাতে দ্বি-খণ্ডিত করিয়া ফেলিবে এবং উভয় খণ্ডকে এত দূরে দূরে নিক্ষেপ করিবে যে, একটি নিক্ষিপ্ত তীরের দূরত্ব পরিমাণ উহাদের মধ্যে ব্যবধান হইবে। অতঃপর সে উভয় খণ্ডকে নিজের কাছে ডাকিবে, ফলে উক্ত যুবক জীবিত হইয়া তাহার সম্মুখে উপস্থিত হইবে, তখন তাহার মুখমণ্ডল হাস্যোজ্জ্বল হইয়া উঠিবে। যখন সে এই সমস্ত কাণ্ডে লিপ্ত, ঠিক এমনি সময়ে আল্লাহ্ তা'আলা হঠাৎ হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ)-কে (আকাশ হইতে) প্রেরণ করিবেন এবং তিনি দামেশকের পূর্বপ্রান্তের শ্বেত মিনারা হইতে হলুদ বর্ণের দুইটি কাপড় পরিহিত অবস্থায় দুই জন ফেরেস্তার পাখায় হাত রাখিয়া অবতরণ করিবেন। তিনি যখন মাথা নীচু করিবেন তখন ফোঁটা ফোঁটা ঘর্ম ঝরিবে, আর যখন মাথা উঁচু করিবেন তখন উহা স্বচ্ছ মুক্তার ন্যায় করিতে থাকিবে। যে কোন কাফের তাহার শ্বাসের বায়ু পাইবে সে তৎক্ষণাৎ মৃত্যুবরণ করিবে। অথচ তাঁহার শ্বাস বায়ু তাহার দৃষ্টির প্রান্তসীমা পর্যন্ত পৌঁছিয়া যাইবে। এই অবস্থায় তিনি দাজ্জালকে খোঁজ করিতে থাকিবেন, অবশেষে তিনি তাহাকে (বায়তুল মুকাদ্দাসের 'লুদ্দ' নামক দরজার কাছে পাইয়া তাহাকে হত্যা করিবেন। অতঃপর এমন একটি সম্প্রদায় হযরত ঈসা (আঃ)-এর নিকট আসিবে যাহাদিগকে আল্লাহ্ তা'আলা দাজ্জালের ফিতনা হইতে নিরাপদে রাখিয়াছিলেন। তখন তিনি তাহাদের মুখ মণ্ডলে হাত ফিরাইবেন এবং জান্নাতে তাহাদের জন্য কি পরিমাণ বুলন্দ মর্তবা রহিয়াছে সেই সুসংবাদও প্রদান করিবেন। এদিকে তিনি এই সমস্ত কাজে লিপ্ত থাকিতেই আল্লাহ্ তা'আলা হযরত ঈসা (আঃ)-এর নিকট এই সংবাদ পাঠাইবেন যে, আমি আমার এমন কিছুসংখ্যক বান্দা সৃষ্টি করিয়া রাখিয়াছি, যাহাদের মুকাবিলা করিবার শক্তি কাহারও নাই। অতএব, তুমি আমার বান্দাদিগকে 'তুর' পর্বতে নিয়া হেফাযত (একত্রিত) কর।
অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা ইয়াজুজ ও মাজুজকে পাঠাইবেন। তাহারা প্রত্যেক উঁচু জায়গা হইতে নীচে যমীনে নামিয়া খুব দ্রুত বিচরণ করিতে থাকিবে এবং তাহাদের প্রথম দল 'তাবারিয়া' নদী (সিরিয়ার একটি নদী) অতিক্রম করিবে এবং তাহারা উহার সবটুকু পানি পান করিয়া ফেলিবে। পরে তাহাদের সর্বশেষ দল সেস্থান অতিক্রম করিবার সময় বলিবে, হয়তো কোন একসময় এখানে পানি ছিল। অতঃপর তাহারা সম্মুখে অগ্রসর হইয়া 'খামার' নামক পাহাড় পর্যন্ত পৌঁছিবে। উহা বায়তুল মুকাদ্দাসের নিকটে অবস্থিত পাহাড়। এখানে পৌঁছিয়া তাহারা বলিবে, যমীনে যাহারা বসবাস করিত ইতিমধ্যে আমরা নিশ্চিত সবাইকে হত্যা করিয়া ফেলিয়াছি। আস! এইবার আমরা আকাশবাসীদিগকে হত্যা করিয়া ফেলি। এই বলিয়া তাহারা আকাশের দিকে তীর নিক্ষেপ করিবে। আর আল্লাহ্ তা'আলা তাহাদের তীরগুলিকে রক্তমাখা অবস্থায় তাহাদের প্রতি ফিরাইয়া দিবেন। এই সময় আল্লাহর নবী [হযরত ঈসা (আঃ)] ও তাহার সঙ্গীগণকে তুর পর্বতে চরম দুরবস্থায় অবরোধ করা হইবে। (অর্থাৎ, তাহারা ভীষণ খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হইবেন) এমন কি তাঁহাদের কাহারও জন্য একটি গরুর মাথা এ যুগের একশত দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) অপেক্ষা অধিক মূল্যবান হইবে। এই চরম অবস্থায় আল্লাহর নবী ঈসা এবং তাঁহার সঙ্গীগণ আল্লাহর দিকে রুজু হইবেন। (এবং ইয়াজুজ ও মাজুজের ধ্বংসের জন্য ফরিয়াদী দো'আ করিবেন) অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা উহাদের গর্দানের উপর বিষাক্ত কীটের আযাব নাযিল করিবেন। (ইহা উট, বক্রীর নাকের মধ্যে জন্মে) ফলে উহারা মুহূর্তের মধ্যে সমূলে ধ্বংস হইয়া যাইবে।

অতঃপর আল্লাহর নবী হযরত ঈসা (আঃ) ও তাঁহার সঙ্গীগণ পর্বত হইতে নীচে যমীনে নামিয়া আসিবেন। কিন্তু ইয়াজুজ ও মাজুজের মরদেহের চর্বি ও দুর্গন্ধ হইতে মুক্ত, এমন একবিঘত যমীনও খালি পাইবেন না। তখন আল্লাহর নবী ঈসা (আঃ) ও তাঁহার সঙ্গীগণ (উক্ত মুছিবত হইতে নাজাত পাওয়ার জন্য) আল্লাহ্ তা'আলার নিকট ফরিয়াদ করিবেন। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা বখ্তী উটের গর্দানের ন্যায় লম্বা লম্বা গর্দানবিশিষ্ট পাখীর ঝাঁক প্রেরণ করিবেন। পাখীর দল উহাদের মরদেহসমূহকে তুলিয়া লইবে এবং যেখানে আল্লাহর ইচ্ছা সেখানে নিয়া নিক্ষেপ করিবে। অবশ্য অপর এক রেওয়ায়তে আছে— উহাদিগকে 'নহবল' নামক স্থানে নিয়া ফেলিয়া দিবে। এবং মুসলমানগণ উহাদের ধনুক, তীর এবং তীর রাখার কোষ পর্যন্ত লাড়িস্বরূপ জ্বালাইতে থাকিবে। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা প্রচণ্ড বৃষ্টি বর্ষণ করিবেন।যদ্দরুন জনবসতির কোন একটি অংশ, চাই উহা মাটির ঘর হউক কিংবা পশমের হউক বাদ থাকিবে না, ধৌত করিয়া পরিষ্কার করিয়া দিবে। অবশেষে উহা আয়নার ন্যায় স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন হইয়া যাইবে। তারপর যমীনকে বলা হইবে, তোমার ফল-ফলাদি বাহির করিয়া দাও এবং তোমার কল্যাণ ও বরকত ফিরাইয়া আন। ফলে সেই সময় এক জামাত লোক একটি ডালিম পরিতৃপ্ত হইয়া খাইবে এবং উহার খোসা দ্বারা লোকেরা ছায়া গ্রহণ করিবে। আর দুগ্ধের মধ্যে বরকত দান করা হইবে। এমন কি একটি উষ্ট্রীর দুগ্ধ একদল লোকের জন্য যথেষ্ট হইবে এবং একটি গাভীর দুধ এক গোত্রের মানুষের জন্য যথেষ্ট হইবে এবং একটি বকরীর দুধ একটি পরিবারের লোকের জন্য যথেষ্ট হইবে।

(মোটকথা, লোকেরা সার্বিকভাবে খোশহাল ও সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করিতে থাকিবে) ঠিক এমনি সময়ে হঠাৎ একদিন আল্লাহ্ তা'আলা একটি স্নিগ্ধ বায়ু প্রবাহিত করিবেন। উহা তাহাদের বগল স্পর্শ করিবে এবং উক্ত বায়ু প্রতিটি মু'মেন মুসলমানের রূহ্ কবয করিবে অতঃপর কেবলমাত্র পাপী ও মন্দ লোকেরাই অবশিষ্ট থাকিবে এবং উহারা গাধার ন্যায় পরস্পর দ্বন্দ্ব-কলহে লিপ্ত হইয়া পড়িবে, তখন তাহাদের উপরেই কিয়ামত কায়েম হইবে। —মুসলিম। তবে রেওয়ায়তের দ্বিতীয়াংশ অর্থাৎ হইতে পর্যন্ত তিরমিযী বর্ণনা করিয়াছেন।
كتاب الفتن
وَعَن النوَّاس بن سمْعَان قَالَ: ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الدَّجَّالَ فَقَالَ: «إِنْ يَخْرُجْ وَأَنَا فِيكُمْ فَأَنَا حَجِيجُهُ دُونَكُمْ وَإِنْ يَخْرُجْ وَلَسْتُ فِيكُمْ فَامْرُؤٌ حَجِيجُ نَفْسِهِ وَاللَّهُ خَلِيفَتِي عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ إِنَّهُ شَابٌّ قَطَطٌ عَيْنُهُ طَافِيَةٌ كَأَنِّي أُشَبِّهُهُ بِعَبْدِ الْعُزَّى بْنِ قَطَنٍ فَمَنْ أَدْرَكَهُ مِنْكُمْ فَلْيَقْرَأْ عَلَيْهِ فَوَاتِحَ سُورَةِ الْكَهْفِ» . وَفِي رِوَايَةٍ «فَلْيَقْرَأْ عَلَيْهِ بِفَوَاتِحِ سُورَةِ الْكَهْفِ فَإِنَّهَا جوارُكم من فتنته إِنَّه خَارج خلة بِي الشَّامِ وَالْعِرَاقِ فَعَاثَ يَمِينًا وَعَاثَ شِمَالًا يَا عِبَادَ اللَّهِ فَاثْبُتُوا» . قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا لَبْثُهُ فِي الْأَرْضِ؟ قَالَ: «أَرْبَعُونَ يَوْمًا يَوْمٌ كَسَنَةٍ وَيَوْمٌ كَشَهْرٍ وَيَوْمٌ كَجُمُعَةٍ وَسَائِرُ أَيَّامِهِ كَأَيَّامِكُمْ» . قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَذَلِكَ الْيَوْمُ الَّذِي كَسَنَةٍ أَتَكْفِينَا فِيهِ صَلَاةُ يَوْمٍ. قَالَ: «لَا اقْدُرُوا لَهُ قَدَرَه» . قُلْنَا: يَا رسولَ اللَّهِ وَمَا إِسْرَاعُهُ فِي الْأَرْضِ؟ قَالَ: كَالْغَيْثِ اسْتَدْبَرَتْهُ الرِّيحُ فَيَأْتِي عَلَى الْقَوْمِ فَيَدْعُوهُمْ فَيُؤْمِنُونَ بِهِ فَيَأْمُرُ السَّمَاءَ فَتُمْطِرُ وَالْأَرْضَ فَتُنْبِتُ فَتَرُوحُ عَلَيْهِمْ سَارِحَتُهُمْ أَطْوَلَ مَا كَانَتْ ذُرًى وَأَسْبَغَهُ ضُرُوعًا وَأَمَدَّهُ خَوَاصِرَ ثُمَّ يَأْتِي الْقَوْمَ فَيَدْعُوهُمْ فَيَرُدُّونَ عَلَيْهِ قَوْله فَيَنْصَرِف عَنْهُم فيصبحون مملحين لَيْسَ بِأَيْدِيهِمْ شَيْءٌ مِنْ أَمْوَالِهِمْ وَيَمُرُّ بِالْخَرِبَةِ فَيَقُولُ لَهَا: أَخْرِجِي كُنُوزَكِ فَتَتْبَعُهُ كُنُوزُهَا كَيَعَاسِيبِ النَّحْلِ ثُمَّ يَدْعُو رَجُلًا مُمْتَلِئًا شَبَابًا فَيَضْرِبُهُ بِالسَّيْفِ فَيَقْطَعُهُ جَزْلَتَيْنِ رَمْيَةَ الْغَرَضِ ثُمَّ يَدْعُوهُ فَيُقْبِلُ وَيَتَهَلَّلُ وَجْهُهُ يَضْحَكُ فَبَيْنَمَا هُوَ كَذَلِكَ إِذْ بَعَثَ اللَّهُ الْمَسِيحَ بْنَ مَرْيَمَ فَيَنْزِلُ عِنْد المنارة الْبَيْضَاء شرقيّ دمشق بَين مهروذتين وَاضِعًا كَفَّيْهِ عَلَى أَجْنِحَةِ مَلَكَيْنِ إِذَا طَأْطَأَ رَأسه قطر وَإِذا رَفعه تحدرمنه مثل جُمان كَاللُّؤْلُؤِ فَلَا يحل لكافرٍ يَجِدَ مِنْ رِيحِ نَفَسِهِ إِلَّا مَاتَ وَنَفَسُهُ يَنْتَهِي حَيْثُ يَنْتَهِي طَرْفُهُ فَيَطْلُبُهُ حَتَّى يُدْرِكَهُ بِبَاب لُدٍّ فيقتُلُه ثمَّ يَأْتِي عِيسَى إِلى قَوْمٌ قَدْ عَصَمَهُمُ اللَّهُ مِنْهُ فَيَمْسَحُ عَنْ وُجُوهِهِمْ وَيُحَدِّثُهُمْ بِدَرَجَاتِهِمْ فِي الْجَنَّةِ فَبَيْنَمَا هُوَ كَذَلِكَ إِذْ أَوْحَى اللَّهُ إِلَى عِيسَى: أَنِّي قَدْ أَخْرَجْتُ عِبَادًا لِي لَا يَدَانِ لِأَحَدٍ بِقِتَالِهِمْ فَحَرِّزْ عِبَادِيَ إِلَى الطُّورِ وَيَبْعَثُ اللَّهُ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ (وَهُمْ مِنْ كُلِّ حَدَبٍ يَنْسِلُونَ) فَيَمُرُّ أَوَائِلُهُمْ عَلَى بُحَيْرَةِ طَبَرِيَّةَ فَيَشْرَبُونَ مَا فِيهَا ويمر آخِرهم وَيَقُول: لَقَدْ كَانَ بِهَذِهِ مَرَّةً مَاءٌ ثُمَّ يَسِيرُونَ حَتَّى يَنْتَهُوا إِلَى جَبَلِ الْخَمَرِ وَهُوَ جَبَلُ بَيْتِ الْمَقْدِسِ فَيَقُولُونَ لَقَدْ قَتَلْنَا مَنْ فِي الْأَرْضِ هَلُمَّ فَلْنَقْتُلْ مَنْ فِي السَّمَاءِ فَيَرْمُونَ بِنُشَّابِهِمْ إِلَى السَّمَاءِ فَيَرُدُّ اللَّهُ عَلَيْهِمْ نُشَّابَهُمْ مَخْضُوبَةً دَمًا وَيُحْصَرُ نَبِيُّ اللَّهِ وَأَصْحَابُهُ حَتَّى يَكُونَ رَأْسُ الثَّوْرِ لِأَحَدِهِمْ خَيْرًا مِنْ مِائَةِ دِينَارٍ لِأَحَدِكُمُ الْيَوْمَ فَيَرْغَبُ نَبِيُّ اللَّهِ عِيسَى وَأَصْحَابُهُ فَيُرْسِلُ اللَّهُ عَلَيْهِمُ النَّغَفَ فِي رِقَابِهِمْ فَيُصْبِحُونَ فَرْسَى كَمَوْتِ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ ثُمَّ يَهْبِطُ نَبِيُّ اللَّهِ عِيسَى وَأَصْحَابُهُ إِلَى الْأَرْضِ فَلَا يَجِدُونَ فِي الْأَرْضِ مَوْضِعَ شِبْرٍ إِلَّا مَلَأَهُ زَهَمُهُمْ وَنَتْنُهُمْ فَيَرْغَبُ نَبِيُّ اللَّهِ عِيسَى وَأَصْحَابُهُ إِلَى اللَّهِ فَيُرْسِلُ اللَّهُ طَيْرًا كَأَعْنَاقِ الْبُخْتِ فَتَحْمِلُهُمْ فَتَطْرَحُهُمْ حَيْثُ شَاءَ اللَّهُ «. وَفِي رِوَايَةٍ» تَطْرَحُهُمْ بِالنَّهْبَلِ وَيَسْتَوْقِدُ الْمُسْلِمُونَ مِنْ قِسِيِّهِمْ وَنُشَّابِهِمْ وَجِعَابِهِمْ سَبْعَ سِنِينَ ثُمَّ يُرْسِلُ اللَّهُ مَطَرًا لَا يَكُنُّ مِنْهُ بَيْتُ مَدَرٍ وَلَا وَبَرٍ فَيَغْسِلُ الْأَرْضَ حَتَّى يَتْرُكَهَا كَالزَّلَفَةِ ثُمَّ يُقَالُ لِلْأَرْضِ: أَنْبِتِي ثَمَرَتَكِ وَرُدِّي بَرَكَتَكِ فَيَوْمَئِذٍ تَأْكُلُ الْعِصَابَةُ مِنَ الرُّمَّانَةِ وَيَسْتَظِلُّونَ بِقِحْفِهَا وَيُبَارَكُ فِي الرِّسْلِ حَتَّى إِنَّ اللِّقْحَةَ مِنَ الْإِبِلِ لَتَكْفِي الْفِئَامَ مِنَ النَّاسِ وَاللِّقْحَةَ مِنَ الْبَقَرِ لَتَكْفِي الْقَبِيلَةَ مِنَ النَّاسِ وَاللِّقْحَةَ مِنَ الْغَنَمِ لَتَكْفِي الْفَخْذَ مِنَ النَّاسِ فَبَيْنَا هُمْ كَذَلِكَ إِذْ بَعَثَ اللَّهُ رِيحًا طَيِّبَةً فَتَأْخُذُهُمْ تَحْتَ آبَاطِهِمْ فَتَقْبِضُ رُوحَ كُلِّ مؤمنٍ وكلِّ مسلمٍ وَيَبْقَى شِرَارُ النَّاسِ يَتَهَارَجُونَ فِيهَا تَهَارُجَ الْحُمُرِ فَعَلَيْهِمْ تَقُومُ السَّاعَةُ رَوَاهُ مُسْلِمٌ إِلَّا الرِّوَايَةَ الثَّانِيَةَ وَهِيَ قَوْلُهُ: تَطْرَحُهُمْ بِالنَّهْبَلِ إِلَى قَوْلِهِ: سبع سِنِين . رَوَاهَا التِّرْمِذِيّ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান