মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২৭- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৩৪৩
প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না
৫৩৪৩। হযরত আবু আমের অথবা আবু মালেক আশ'আরী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলিতে শুনিয়াছি, আমার উম্মতের মধ্যে কতিপয় সম্প্রদায় পয়দা হইবে যাহারা রেশমী কাতান এবং রেশমী কাপড় ব্যবহার করা, মদ্যপান করা এবং গান-বাদ্য করা হালাল মনে করিবে। আর অনেক সম্প্রদায় এমনও হইবে যাহারা পর্বতের পাদদেশে বসবাস করিবে। সন্ধ্যায় যখন তাহারা পশুপাল লইয়া বাড়ী-ঘরে ফিরিবে, এমনি সময় তাহাদের নিকট কোন ব্যক্তি তাহার প্রয়োজন লইয়া আসিলে তাহারা বলিবে; আগামীকাল সকালে আমাদের কাছে আসিও; কিন্তু রাত্রের অন্ধকারেই আল্লাহ্ তাহাদিগকে ধ্বংস করিয়া দিবেন এবং পর্বতটিকে (তাহাদের উপর) ধসাইয়া দিবেন। আর কাহারও কাহারও আকৃতিকে বানর ও শূকরে পরিবর্তিত করিয়া দিবেন, যাহা কিয়ামত পর্যন্ত থাকিবে। -বুখারী। মাসাবীহর কোন কোন গ্রন্থে الخز -এর স্থলেالحر হা ও রা দ্বারা গঠিত শব্দ রহিয়াছে। কিন্তু উহা অশুদ্ধ। বস্তুতঃ এখানে الخز অর্থাৎ, خ ও ز সংযুক্ত শব্দই হইবে। হোমাইদী ও ইবনে আসীর অত্র হাদীসের বর্ণনায় অনুরূপই বলিয়াছেন। আর হোমাইদীর কিতাবে বুখারী হইতে এবং অনুরূপ ভাবে বুখারীর শরাহ গ্রন্থে ইমাম খাত্তাবী হইতে হাদীসে বর্ণিত বাক্যটি নিম্নে উল্লেখিত শব্দে
وَعَنْ أَبِي عَامِرٍ أَوْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: لَيَكُونَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّونَ الْخَزَّ وَالْحَرِيرَ وَالْخَمْرَ وَالْمَعَازِفَ وَلَيَنْزِلَنَّ أَقْوَامٌ إِلَى جَنْبِ عَلَمٍ يَرُوحُ عَلَيْهِمْ بِسَارِحَةٍ لَهُمْ يَأْتِيهِمْ رَجُلٌ لِحَاجَةٍ فَيَقُولُونَ: ارْجِعْ إِلَيْنَا غَدًا فَيُبَيِّتُهُمُ اللَّهُ وَيَضَعُ الْعَلَمَ وَيَمْسَخُ آخَرِينَ قِرَدَةً وَخَنَازِيرَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ «. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ. وَفَى بَعْضِ نُسَخِ» الْمَصَابِيحِ : «الْحَرَّ» بِالْحَاءِ وَالرَّاءِ الْمُهْمَلَتَيْنِ وَهُوَ تَصْحِيفٌ وَإِنَّمَا هُوَ بِالْخَاءِ وَالزَّايِ الْمُعْجَمَتَيْنِ نَصَّ عَلَيْهِ الْحُمَيْدِيُّ وَابْنُ الْأَثِيرِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ. وَفَى كِتَابِ «الْحُمَيْدِيِّ» عَنِ الْبُخَارِيِّ وَكَذَا فِي «شَرحه» للخطابي: «تروح سارحة لَهُم يَأْتِيهم لحَاجَة»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী বলিয়াছেন الخز এবং الحر উভয় শব্দের যে কোনটি হওয়াই শুদ্ধ। কেননা, বুখারীর অধিকাংশ গ্রন্থে الحر উল্লেখ রহিয়াছে। যাহার অর্থ যিনা-ব্যভিচার। অর্থাৎ, 'তাহারা যিনাকে বৈধ মনে করিবে।' হাদীসটির মোক্ষম অর্থ হইল— কিয়ামতের নিকটবর্তী যমানায় অধিকাংশ লোকের অন্তরে খোদাভীতি থাকিবে না। ফলে হারাম বস্তুকে হালাল মনে করিয়া নির্বিঘ্নে উহাতে লিপ্ত হইবে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৫৩৪৩ | মুসলিম বাংলা