মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৭- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৩৩৯
প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না
৫৩৩৯। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আবুল কাসেম (মুহাম্মাদ) ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন সেই মহান সত্তার শপথ। (নাফরমানদের জন্য আল্লাহর আযাব এবং হিসাব-নিকাশের দিনের ভয়াবহতা সম্পর্কে) আমি যাহা জানি, যদি তোমরা তাহা জানিতে, তাহা হইলে তোমরা কাদিতে বেশী এবং হাসিতে কম। বুখারী
بَاب الْبكاء وَالْخَوْف: الْفَصْل الأول
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا وَلَضَحِكْتُمْ قَلِيلا» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
ভয় ও কান্না এই দুইটি একটির সহিত অপরটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বস্তুতঃ যখন কোন ব্যক্তির অন্তরে ভয় ঢুকে তখন আপনাআপনিই তাহার কান্না আসে। ফলে চোখের অশ্রুই প্রমাণ করে যে, তাহার অন্তরে ভীতির সঞ্চার হইয়াছে। এখানে আল্লাহর আযাব ও গযবের ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হইয়া ক্রন্দন করাকে বুঝান হইয়াছে। কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে উল্লেখ করা হইয়াছে যে, আল্লাহর নেক বান্দাদের মধ্যে ইহা সর্বদা বিদ্যমান থাকে। ইহা যেন তাহাদের ভূষণস্বরূপ। পক্ষান্তরে ফাসেক ও পাপিষ্ঠ বান্দাদের মধ্যে ইহা পরিলক্ষিত হয় না। সুতরাং আল্লাহর ভয়ে কাঁদা ও সর্বদা ভীত থাকা ঈমানদারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও মহৎ গুণ।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রিয় সাহাবীদের এমন একটা অবস্থা দেখেছিলেন, যা তাঁর কাছে প্রীতিকর বোধ হয়নি। সম্ভবত তারা কোনও বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করছিলেন। তিনি বেশি হাসাহাসি পসন্দ করতেন না। বেশি হাসিতে অন্তরে উদাসীনতা জন্ম নেয় । এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন لا تكثر الضحك، فإن كثرة الضحك تميت القلب "বেশি হাসবে না। কেননা হাসির আধিক্য অন্তরের মৃত্যু ঘটায়।”
তিনি সাহাবায়ে কেরামের সে অবস্থা দেখে ইসলাহের প্রয়োজন মনে করলেন। তিনি তো তাঁর প্রিয় সঙ্গীদের এভাবেই তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলেন। সুতরাং সে লক্ষ্যে তিনি এক হৃদয়গ্রাহী ভাষণ দেন। তাতে তিনি এই বলে তাদের উপদেশ দিয়েছিলেন যে لو تعلمون ما أعلم لضحكتم قليلا ولبكيتم كثيرا (তোমরা যদি জানতে যা আমি জানি, তবে অবশ্যই তোমরা কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে)। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা পাপীদের জন্য কী কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছেন, কী কঠিন কিয়ামতের বিভীষিকা এবং কত কঠিন হাশরের ময়দানের পরিস্থিতি, তা আমি যেমনটা জানি তেমনি তোমরাও যদি জানতে, তবে অবশ্যই কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে। এক বর্ণনায় এরপর আছে ولما ساغ لكم الطعام ولا الشراب، ولما نمتم على الفرش ولهجرتم النساء، ولخرجتم إلى الصعدات تجأرون "তোমাদের কাছে পানাহার ভালো লাগত না। তোমরা বিছানায় ঘুমাতে পারতে না। তোমরা নারীদের থেকে দূরে থাকতে। তোমরা চিৎকার করতে করতে রাস্তাঘাটে বের হয়ে পড়তে।
হাদীছটি দ্বারা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে পার্থিব জীবনযাপন সম্পর্কে এ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন যে, দুনিয়া আনন্দে মেতে থাকার জায়গা নয়। তা থাকা উচিতও নয়। তার সামনে আখিরাত আছে। সেখানকার পরিস্থিতি বড় কঠিন। সে কঠিন পরিস্থিতির ব্যাপারে চিন্তিত থাকা উচিত। মনে ভয় রাখা উচিত। উচিত আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি বেশি কাঁদা, যাতে তিনি সেখানে নাজাত দান করেন। যেন তিনি নিজ রহমতের ছায়ায় আশ্রয় দান করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ওয়াজ-নসীহতে হাসানো নয়; বরং কাঁদানোই প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তরিকা।
খ. অল্প হাসি দোষের নয়, যদি অন্তরে আখিরাতের ভয় থাকে এবং সে ভয়ে ক্রন্দনও করা হয়।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রিয় সাহাবীদের এমন একটা অবস্থা দেখেছিলেন, যা তাঁর কাছে প্রীতিকর বোধ হয়নি। সম্ভবত তারা কোনও বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করছিলেন। তিনি বেশি হাসাহাসি পসন্দ করতেন না। বেশি হাসিতে অন্তরে উদাসীনতা জন্ম নেয় । এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন لا تكثر الضحك، فإن كثرة الضحك تميت القلب "বেশি হাসবে না। কেননা হাসির আধিক্য অন্তরের মৃত্যু ঘটায়।”
তিনি সাহাবায়ে কেরামের সে অবস্থা দেখে ইসলাহের প্রয়োজন মনে করলেন। তিনি তো তাঁর প্রিয় সঙ্গীদের এভাবেই তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলেন। সুতরাং সে লক্ষ্যে তিনি এক হৃদয়গ্রাহী ভাষণ দেন। তাতে তিনি এই বলে তাদের উপদেশ দিয়েছিলেন যে لو تعلمون ما أعلم لضحكتم قليلا ولبكيتم كثيرا (তোমরা যদি জানতে যা আমি জানি, তবে অবশ্যই তোমরা কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে)। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা পাপীদের জন্য কী কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছেন, কী কঠিন কিয়ামতের বিভীষিকা এবং কত কঠিন হাশরের ময়দানের পরিস্থিতি, তা আমি যেমনটা জানি তেমনি তোমরাও যদি জানতে, তবে অবশ্যই কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে। এক বর্ণনায় এরপর আছে ولما ساغ لكم الطعام ولا الشراب، ولما نمتم على الفرش ولهجرتم النساء، ولخرجتم إلى الصعدات تجأرون "তোমাদের কাছে পানাহার ভালো লাগত না। তোমরা বিছানায় ঘুমাতে পারতে না। তোমরা নারীদের থেকে দূরে থাকতে। তোমরা চিৎকার করতে করতে রাস্তাঘাটে বের হয়ে পড়তে।
হাদীছটি দ্বারা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে পার্থিব জীবনযাপন সম্পর্কে এ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন যে, দুনিয়া আনন্দে মেতে থাকার জায়গা নয়। তা থাকা উচিতও নয়। তার সামনে আখিরাত আছে। সেখানকার পরিস্থিতি বড় কঠিন। সে কঠিন পরিস্থিতির ব্যাপারে চিন্তিত থাকা উচিত। মনে ভয় রাখা উচিত। উচিত আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি বেশি কাঁদা, যাতে তিনি সেখানে নাজাত দান করেন। যেন তিনি নিজ রহমতের ছায়ায় আশ্রয় দান করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ওয়াজ-নসীহতে হাসানো নয়; বরং কাঁদানোই প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তরিকা।
খ. অল্প হাসি দোষের নয়, যদি অন্তরে আখিরাতের ভয় থাকে এবং সে ভয়ে ক্রন্দনও করা হয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
