মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৭- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
হাদীস নং: ৫১৮১
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮১। হযরত কা'ব ইবনে মালেক তাঁহার পিতা হইতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ দুইটি ক্ষুধার্ত বাঘকে মেষ-বকরীর পালের মধ্যে ছাড়িয়া দিলে ততটুকু ক্ষতিসাধন করে না, যতটুকু কোন ব্যক্তির ধন-সম্পদের মোহ ও মর্যাদার লালসা তাহার দ্বীনের ক্ষতি করিয়া থাকে। —তিরমিযী ও দারেমী
وَعَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا ذِئْبَانِ جَائِعَانِ أُرْسِلَا فِي غَنَمٍ بِأَفْسَدَ لَهَا مِنْ حِرْصِ الْمَرْءِ عَلَى الْمَالِ والشرف لدينِهِ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ والدارمي
হাদীসের ব্যাখ্যা:
১. মেশকাত শরীফের অধিকাংশ গ্রন্থে عن ابيه উল্লেখ থাকিলেও ইহা কোন এক বর্ণনাকারীর ভুল হইয়াছে। কারণ, হযরত কা'বের পিতা 'মালেক' ইসলাম গ্রহণ করে নাই। সুতরাং সহীহ্ বর্ণনা হইল— عن ابن كعب بن مالك عن ابيه অর্থাৎ, হযরত কা'বের পুত্র আবদুল্লাহ্ তাহার পিতা কা'ব ইবনে মালেক হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। অবশ্য তিরমিযীর অপর এক বর্ণনায় عن ابيه ছাড়াই বর্ণিত হইয়াছে।
২. এ হাদীছে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অর্থ-সম্পদ ও সম্মান-সুখ্যাতির লোভ দীনের পক্ষে কী ভয়ানক ক্ষতিকর সে ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। তিনি ক্ষুধার্ত দু'টি নেকড়েকে একপাল বকরির মধ্যে ছেড়ে দিলে সে নেকড়েদু'টি বকরির যে ক্ষতি করতে পারে, এ লোভের ক্ষতিকে তারচে'ও বেশি মারাত্মক সাব্যস্ত করেছেন। কেননা মাল ও মর্যাদার লালসা যখন কাউকে পেয়ে বসে, তখন সে এ লালসার কাছে সম্পূর্ণ বশীভূত হয়ে যায়। এ লালসা পূরণ করার জন্য জায়েয-নাজায়েয নির্বিচারে সকল পন্থা অবলম্বন করে। আবার লালসা যখন পূরণ হতে থাকে, তখন তার মধ্যে অহংকার-অহমিকাও জন্ম নিতে থাকে। যতবেশি পূরণ হয় ততবেশি অহংকার জন্মায়। তখন কাউকে মানুষ বলে গণ্য করে না। এ অবস্থায় সে দীন ও ঈমানের দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মানুষের চোখেও মর্যাদাহীন হয়ে পড়ে। সেইসঙ্গে অন্যসব মানুষের পক্ষেও সে সাক্ষাত আযাব ও মসিবত হয়ে দাঁড়ায়।
বস্তুত লোভ-লালসা সৃষ্টিগতভাবেই মানবস্বভাবের মধ্যে নিহিত থাকে। এটা মানুষের জন্য পরীক্ষা। দুনিয়া পরীক্ষারই জায়গা। লোভ-লালসার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রয়োজন এ খাসলাতকে বশীভূত রাখার চেষ্টা করা। সে চেষ্টার একটা দিক হল আল্লাহ তা'আলার উপর ভরসা রাখা, তাকদীরের উপর গভীর বিশ্বাস রাখা, লোভ-লালসার ক্ষতি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করা এবং লোভ-লালসা পূরণ থেকে বিরত থাকা। এ রিপু দমনের সর্বাপেক্ষা কার্যকর ওষুধ হল এটা পূরণ করা হতে বিরত থাকা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
সম্পদ ও ইজ্জত-সম্মানের লোভ যেহেতু দীন ও ঈমানের পক্ষে ভয়ানক ক্ষতিকর, তাই আমাদেরকে অবশ্যই এ লোভ পরিহার করে চলতে হবে।
২. এ হাদীছে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অর্থ-সম্পদ ও সম্মান-সুখ্যাতির লোভ দীনের পক্ষে কী ভয়ানক ক্ষতিকর সে ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। তিনি ক্ষুধার্ত দু'টি নেকড়েকে একপাল বকরির মধ্যে ছেড়ে দিলে সে নেকড়েদু'টি বকরির যে ক্ষতি করতে পারে, এ লোভের ক্ষতিকে তারচে'ও বেশি মারাত্মক সাব্যস্ত করেছেন। কেননা মাল ও মর্যাদার লালসা যখন কাউকে পেয়ে বসে, তখন সে এ লালসার কাছে সম্পূর্ণ বশীভূত হয়ে যায়। এ লালসা পূরণ করার জন্য জায়েয-নাজায়েয নির্বিচারে সকল পন্থা অবলম্বন করে। আবার লালসা যখন পূরণ হতে থাকে, তখন তার মধ্যে অহংকার-অহমিকাও জন্ম নিতে থাকে। যতবেশি পূরণ হয় ততবেশি অহংকার জন্মায়। তখন কাউকে মানুষ বলে গণ্য করে না। এ অবস্থায় সে দীন ও ঈমানের দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মানুষের চোখেও মর্যাদাহীন হয়ে পড়ে। সেইসঙ্গে অন্যসব মানুষের পক্ষেও সে সাক্ষাত আযাব ও মসিবত হয়ে দাঁড়ায়।
বস্তুত লোভ-লালসা সৃষ্টিগতভাবেই মানবস্বভাবের মধ্যে নিহিত থাকে। এটা মানুষের জন্য পরীক্ষা। দুনিয়া পরীক্ষারই জায়গা। লোভ-লালসার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রয়োজন এ খাসলাতকে বশীভূত রাখার চেষ্টা করা। সে চেষ্টার একটা দিক হল আল্লাহ তা'আলার উপর ভরসা রাখা, তাকদীরের উপর গভীর বিশ্বাস রাখা, লোভ-লালসার ক্ষতি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করা এবং লোভ-লালসা পূরণ থেকে বিরত থাকা। এ রিপু দমনের সর্বাপেক্ষা কার্যকর ওষুধ হল এটা পূরণ করা হতে বিরত থাকা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
সম্পদ ও ইজ্জত-সম্মানের লোভ যেহেতু দীন ও ঈমানের পক্ষে ভয়ানক ক্ষতিকর, তাই আমাদেরকে অবশ্যই এ লোভ পরিহার করে চলতে হবে।
২. ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
