মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৬- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
হাদীস নং: ৫০১১
১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তাআলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তাআলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা
৫০১১। হযরত মু'য়ায ইবনে জাবাল (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, আল্লাহ্ তা'আলা বলিয়াছেন যাহারা আমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে পরস্পরকে ভালবাসে, আমার উদ্দেশে সমাবেশে মিলিত হয়, আমার উদ্দেশে পরস্পরে সাক্ষাৎ করে এবং আমার উদ্দেশ্যেই নিজেদের মাল-সম্পদ ব্যয় করে—আমার ভালবাসা তাহাদের জন্য অবধারিত। —মালেক। আর তিরমিযীর এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ আমার মর্যাদার খাতিরে যাহারা পরস্পর ভালবাসা স্থাপন করে, তাহাদের জন্য (পরকালে) নূরের এমন সুউচ্চ মিনার হইবে যে, তাহাদের জন্য নবী এবং শহীদগণও ঈর্ষা করিবেন।
الْفَصْل الثَّانِي
وَعَن مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: وَجَبَتْ مَحَبَّتِي لِلْمُتَحَابِّينَ فِيَّ وَالْمُتَجَالِسِينَ فِيَّ وَالْمُتَزَاوِرِينَ فِيَّ وَالْمُتَبَاذِلِينَ فِيَّ . رَوَاهُ مَالِكٌ. وَفِي رِوَايَةِ التِّرْمِذِيَّ قَالَ: يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: الْمُتَحَابُّونَ فِي جَلَالِي لَهُمْ مَنَابِرُ مِنْ نُورٍ يَغْبِطُهُمُ النَّبِيُّونَ وَالشُّهَدَاء
হাদীসের ব্যাখ্যা:
১. ‘নবী শহীদের ঈর্ষা হইবে'—ইহার অর্থ হইল, তাঁহারাও এই সমস্ত ব্যক্তির প্রশংসা ও আনন্দ প্রকাশ করিবেন। বাহ্যতঃ মনে হইবে তাহারাও যেন এইরূপ মর্তবার প্রত্যাশা রাখেন।
২. এ হাদীছে আল্লাহ তাআলার জন্য যারা একে অন্যকে ভালোবাসে, আখেরাতে তারা কী উচ্চমর্যাদার অধিকারী হবে তা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, তাদের জন্য থাকবে নূরের মিম্বর। তাতে তারা সমাসীন হবে। তাদের এ উচ্চমর্যাদা দেখে নবী ও শহীদগণ পর্যন্ত ঈর্ষাবোধ করবেন। হাদীছটির শব্দ হচ্ছে-
يَغْبِطُهُمُ النَّبِيُّونَ وَالشُّهَدَاءُ (নবী ও শহীদগণও তাদের প্রতি ঈর্ষাবোধ করবেন)। يَغْبِطُ ক্রিয়াপদটির উৎপত্তি غبطة থেকে। গিবতা (غبطة) হলো অন্যের প্রাপ্ত নিআমতের অনুরূপ নিজের জন্য আকাঙ্ক্ষা করা, কিন্তু তার থেকে তা বিলুপ্তি কামনা না করা। আরেক হচ্ছে হাসাদ। হাসাদ বলা হয় অন্যের থেকে নিআমতের বিলুপ্তি কামনার সঙ্গে নিজের জন্য তা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করা। হাসাদ করা কঠিন পাপ। গিবতা পাপ নয়; বরং ফযীলতের ক্ষেত্রে তা প্রশংসনীয়। যেমন অন্যের ইলমী যোগ্যতা দেখে নিজের জন্যও অনুরূপ যোগ্যতা কামনা করা, অন্যের তাকওয়া-পরহেযগারী দেখে নিজের জন্যও অনুরূপ তাকওয়া-পরহেযগারী কামনা করা ইত্যাদি।
প্রশ্ন হতে পারে, নবী ও শহীদদের মর্যাদা তো আরও উপরে, তারা কেন এদের প্রতি গিবতা বা ঈর্ষা বোধ করবেন?
এর উত্তর হলো, নবী ও শহীদদের ঈর্ষাবোধের কথাটি বলা হয়েছে কেবলই আল্লাহর জন্য পরস্পরে ভালোবাসা পোষণকারীদের উচ্চমর্যাদা ফুটিয়ে তোলা ও সে মর্যাদার কারণে তাদের প্রতি নবী ও শহীদদের মুগ্ধতা প্রকাশের জন্য। এটি একটি বাকশৈলী। এর দ্বারা উদ্দেশ্য এ কথা বোঝানো নয় যে, তারাও অনুরূপ মর্যাদা কামনা করবেন। এরকম বাকশৈলী সব ভাষায়ই আছে। ছাত্র বা শিষ্যকে পুরস্কৃত হতে দেখে তার মুগ্ধ উস্তায বা গুরুজন অনেক সময় বলে থাকে, এরকম পুরস্কৃত যদি আমিও হতে পারতাম! বাস্তবে হয়তো তিনি তারচে'ও বড় পুরস্কার পেয়েছিলেন। তার এ কথা বলার উদ্দেশ্য কেবলই তাকে উৎসাহ দেওয়া ও বাহবা জানানো।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছ দ্বারা জানা যায়, আল্লাহ তাআলার কাছে ওই সকল লোকের কত উচ্চমর্যাদা, যারা কেবল আল্লাহরই জন্য একে অন্যকে ভালোবাসে। সুতরাং আমরাও কেবল আল্লাহর জন্যই একে অন্যকে ভালোবাসব।
২. এ হাদীছে আল্লাহ তাআলার জন্য যারা একে অন্যকে ভালোবাসে, আখেরাতে তারা কী উচ্চমর্যাদার অধিকারী হবে তা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, তাদের জন্য থাকবে নূরের মিম্বর। তাতে তারা সমাসীন হবে। তাদের এ উচ্চমর্যাদা দেখে নবী ও শহীদগণ পর্যন্ত ঈর্ষাবোধ করবেন। হাদীছটির শব্দ হচ্ছে-
يَغْبِطُهُمُ النَّبِيُّونَ وَالشُّهَدَاءُ (নবী ও শহীদগণও তাদের প্রতি ঈর্ষাবোধ করবেন)। يَغْبِطُ ক্রিয়াপদটির উৎপত্তি غبطة থেকে। গিবতা (غبطة) হলো অন্যের প্রাপ্ত নিআমতের অনুরূপ নিজের জন্য আকাঙ্ক্ষা করা, কিন্তু তার থেকে তা বিলুপ্তি কামনা না করা। আরেক হচ্ছে হাসাদ। হাসাদ বলা হয় অন্যের থেকে নিআমতের বিলুপ্তি কামনার সঙ্গে নিজের জন্য তা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করা। হাসাদ করা কঠিন পাপ। গিবতা পাপ নয়; বরং ফযীলতের ক্ষেত্রে তা প্রশংসনীয়। যেমন অন্যের ইলমী যোগ্যতা দেখে নিজের জন্যও অনুরূপ যোগ্যতা কামনা করা, অন্যের তাকওয়া-পরহেযগারী দেখে নিজের জন্যও অনুরূপ তাকওয়া-পরহেযগারী কামনা করা ইত্যাদি।
প্রশ্ন হতে পারে, নবী ও শহীদদের মর্যাদা তো আরও উপরে, তারা কেন এদের প্রতি গিবতা বা ঈর্ষা বোধ করবেন?
এর উত্তর হলো, নবী ও শহীদদের ঈর্ষাবোধের কথাটি বলা হয়েছে কেবলই আল্লাহর জন্য পরস্পরে ভালোবাসা পোষণকারীদের উচ্চমর্যাদা ফুটিয়ে তোলা ও সে মর্যাদার কারণে তাদের প্রতি নবী ও শহীদদের মুগ্ধতা প্রকাশের জন্য। এটি একটি বাকশৈলী। এর দ্বারা উদ্দেশ্য এ কথা বোঝানো নয় যে, তারাও অনুরূপ মর্যাদা কামনা করবেন। এরকম বাকশৈলী সব ভাষায়ই আছে। ছাত্র বা শিষ্যকে পুরস্কৃত হতে দেখে তার মুগ্ধ উস্তায বা গুরুজন অনেক সময় বলে থাকে, এরকম পুরস্কৃত যদি আমিও হতে পারতাম! বাস্তবে হয়তো তিনি তারচে'ও বড় পুরস্কার পেয়েছিলেন। তার এ কথা বলার উদ্দেশ্য কেবলই তাকে উৎসাহ দেওয়া ও বাহবা জানানো।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছ দ্বারা জানা যায়, আল্লাহ তাআলার কাছে ওই সকল লোকের কত উচ্চমর্যাদা, যারা কেবল আল্লাহরই জন্য একে অন্যকে ভালোবাসে। সুতরাং আমরাও কেবল আল্লাহর জন্যই একে অন্যকে ভালোবাসব।
২. ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
