মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২৬- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৯৭১
১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ
৪৯৭১। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে যুবক কোন বৃদ্ধকে বার্ধক্যের কারণে সম্মান করিবে, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা'আলা তাহার বৃদ্ধাবস্থায় এমন লোক নিয়োজিত করিবেন যে তাহাকে সম্মান করিবে। – তিরমিযী
وَعَنْ

أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا أَكْرَمَ شَابٌّ شَيْخًا مِنْ أَجْلِ سِنِّهِ إِلَّا قَيَّضَ اللَّهُ لَهُ عِنْد سنه من يُكرمهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছটিতে বয়স্ক ব্যক্তিদের সম্মান করতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। হাদীছটির অর্থ হচ্ছে, কোনও যুবক যদি কোনও বৃদ্ধলোককে সম্মান করে কেবল তার বার্ধক্যের কারণে, বুযুর্গীর কারণে নয়, ক্ষমতার কারণে নয় কিংবা আত্মীয়তা বা অন্য কোনও কারণেও নয়; কেবলই বার্ধক্যের কারণে, তবে সে যুবক যখন বৃদ্ধ হবে, তখন আল্লাহ তাআলা তাকে ভক্তি-সম্মান করার মত লোক দাঁড় করিয়ে দেবেন। কোনও বৃদ্ধ ব্যক্তি বুযুর্গ, আত্মীয় কিংবা উস্তায ও শায়খ হলে সে কারণে তার বাড়তি সম্মান প্রাপ্য। সেটি আলাদা কথা। এসব ব্যক্তিবর্গ বৃদ্ধ না হলেও তারা স্বতন্ত্র মর্যাদা পাওয়ার হকদার। এ হাদীছের বক্তব্য অনুযায়ী বিবেচ্য বিষয় কেবল বার্ধক্য। কাজেই প্রত্যেক যুবকের কর্তব্য কেবল বার্ধক্যের বিবেচনায়ও সকল বৃদ্ধকে সম্মান করা।

হাদীছটি দ্বারা একটা সতর্কবাণী পাওয়া যায়। তা এই যে, প্রবীণদের সম্মান না করলে ভবিষ্যতে নিজের অসম্মানিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যে যুবক বৃদ্ধ লোকের সম্মান করবে না, সে যখন বৃদ্ধ হবে তখন তাকেও কেউ সম্মান করবে না।

হাদীছটি দ্বারা ইঙ্গিত পাওয়া যায়, বৃদ্ধ লোককে সম্মান করলে আয়ু বাড়ে। কারণ বলা হয়েছে, সম্মানদাতা যুবকের বার্ধক্যকালে তাকে সম্মান দেওয়ার মত লোক তৈরি করে দেওয়া হবে। বোঝা যাচ্ছে সেও বার্ধক্যের বয়সে পৌঁছবে, যদিও এটা অবধারিত নয়।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. প্রবীণ ও বয়স্কদের সম্মান করা চাই।

খ. বৃদ্ধ লোকদের সম্মান করলে নিজ বার্ধক্যকালে সম্মানপ্রাপ্তির আশা থাকে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান