আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
হাদীস নং: ৩৯৮৭
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩২৩
২২১৯. আওতাসের যুদ্ধ
৩৯৮৭। মুহাম্মাদ ইবনে আলা (রাহঃ) .... আবু মুসা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুনায়ন যুদ্ধ থেকে নবী কারীম (ﷺ) অবসর হওয়ার পর তিনি আবু আমির (রাযিঃ)- কে একটি সৈন্যবেহিনীর আমীর নিযুক্ত করে আওতাস গোত্রের প্রতি পাঠালেন। যুদ্ধে তিনি (আবু আমির) দুরায়দ ইবনে সিম্মার সাথে মুকাবিলা করলে দুরায়দ নিহত হয় এবং আল্লাহ্ তার সহযোগী যোদ্ধাদেরকেও পরাজিত করেন। আবু মুসা (রাযিঃ) বলেন, নবী কারীম (ﷺ) আবু আমির (রাযিঃ)-এর সাথে আমাকেও পাঠিয়েছিলেন। এ যুদ্ধে আবু আমির (রাযিঃ)- এর হাঁটুতে একটি তীর নিক্ষিপ্ত হয়। জুশাম গোত্রের এক লোক তীরটি নিক্ষেপ করে তাঁর হাঁটুর মধ্যে বসিয়ে দিয়েছিল। তখন আমি তাঁর কাছে গিয়ে বললাম, চাচাজান! কে আপনার উপর তীর ছুঁড়েছে? তখন তিনি আবু মুসা (রাযিঃ)-কে ইশারার মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়ে বললেন, ঐ যে, ঐ ব্যক্তি আমাকে তীর মেরেছে। আমাকে হত্যা করেছে। আমি লোকটিকে লক্ষ করে তার কাছে গিয়ে পৌঁছলাম আর সে আমাকে দেখামাত্র ভাগতে শুরু করলো।
আমি এ কথা বলতে বলতে তার পশ্চাদ্ধাবন করলাম, (পালাচ্ছো কেন,) বেহায়া দাঁড়াও না, দাঁড়াও। লোকটি থেমে গেলো। এবার আমরা দু’জনে তরবারি দিয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করলাম এবং শেষ পর্যন্ত আমি ওকে হত্যা করে ফেললাম। তারপর আমি আবু আমির (রাযিঃ)- কে বললাম, আল্লাহ্ আপনার আঘাতকারীকে হত্যা করেছেন। তিনি বললেন, (ঠিক আছে, এবার তুমি আমার হাঁটু থেকে) তীরটি বের করে দাও। আমি তীরটি বের করে দিলাম। তখন ক্ষতস্থান থেকে কিছু পানিও বেরিয়ে আসলো। তিনি আমাকে বললেন, হে ভাতিজা! (আমি হয়তো বাঁচবো না) তাই তুমি নবী কারীম (ﷺ)- কে আমার সালাম জানাবে এবং আমার মাগফিরাতের জন্য দু'আ করতে বলবে। আবু আমির (রাযিঃ) তাঁর স্থলে আমাকে সেনাবাহিনীর আমীর নিযুক্ত করলেন। এরপর তিনি কিছুক্ষণ বেঁচেছিলেন, তারপর ইন্তিকাল করলেন।
(যুদ্ধ শেষে) আমি ফিরে এসে নবী কারীম (ﷺ)- এর বাড়ি প্রবেশ করলাম। তিনি তখন পাকানো দড়ির তৈরী একটি খাটিয়ায় শায়িত ছিলেন। খাটিয়ার উপর (নামেমাত্র) একটি বিছানা ছিল। কাজেই তাঁর পিঠে এবং পার্শ্বদেশে পাকানো দড়ির দাগ পড়ে গিয়েছিল। আমি তাঁকে আমাদের এবং আবু আমির (রাযিঃ)- এর সংবাদ জানালাম। (তাঁকে এ কথাও বললাম যে) তিনি (মৃত্যুর পূর্বে) বলে গিয়েছেন, তাঁকে [নবী কারীম (ﷺ)- কে] আমার মাগফিরাতের জন্য দু'আ করতে বলবে। এ কথা শুনে নবী কারীম (ﷺ) পানি আনতে বললেন এবং উযু করলেন। তারপর তাঁর দু’হাত উপরে তুলে তিনি দু'আ করে বললেন, হে আল্লাহ্! তোমার প্রিয় বান্দা আবু আমিরকে মাগফিরাত দান করো।
[নবী কারীম (ﷺ) দু'আর মুহূর্তে হাতদ্বয় এত উপরে তুললেন যে] আমি তাঁর বগলদ্বয়ের শুভ্রাংশ পর্যন্ত দেখতে পেয়েছি। তারপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ্! কিয়ামত দিবসে তুমি তাঁকে তোমার অনেক মাখলুকের উপর, অনেক মানুষের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করো। আমি বললামঃ আমার জন্যও (দু'আ করুন)। তিনি দু'আ করলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্! আব্দুল্লাহ ইবনে কায়সের গুনাহ্ ক্ষমা করে দাও এবং কিয়ামত দিবসে তুমি তাঁকে সম্মানিত স্থানে প্রবেশ করাও। বর্ণনাকারী আবু বুরদা (রাযিঃ) বলেন, দু’টি দু'আর একটি ছিল আবু আমির (রাযিঃ)- এর জন্য আর অপরটি ছিলো আবু মুসা (আশআরী) (রাযিঃ)- এর জন্য।
আমি এ কথা বলতে বলতে তার পশ্চাদ্ধাবন করলাম, (পালাচ্ছো কেন,) বেহায়া দাঁড়াও না, দাঁড়াও। লোকটি থেমে গেলো। এবার আমরা দু’জনে তরবারি দিয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করলাম এবং শেষ পর্যন্ত আমি ওকে হত্যা করে ফেললাম। তারপর আমি আবু আমির (রাযিঃ)- কে বললাম, আল্লাহ্ আপনার আঘাতকারীকে হত্যা করেছেন। তিনি বললেন, (ঠিক আছে, এবার তুমি আমার হাঁটু থেকে) তীরটি বের করে দাও। আমি তীরটি বের করে দিলাম। তখন ক্ষতস্থান থেকে কিছু পানিও বেরিয়ে আসলো। তিনি আমাকে বললেন, হে ভাতিজা! (আমি হয়তো বাঁচবো না) তাই তুমি নবী কারীম (ﷺ)- কে আমার সালাম জানাবে এবং আমার মাগফিরাতের জন্য দু'আ করতে বলবে। আবু আমির (রাযিঃ) তাঁর স্থলে আমাকে সেনাবাহিনীর আমীর নিযুক্ত করলেন। এরপর তিনি কিছুক্ষণ বেঁচেছিলেন, তারপর ইন্তিকাল করলেন।
(যুদ্ধ শেষে) আমি ফিরে এসে নবী কারীম (ﷺ)- এর বাড়ি প্রবেশ করলাম। তিনি তখন পাকানো দড়ির তৈরী একটি খাটিয়ায় শায়িত ছিলেন। খাটিয়ার উপর (নামেমাত্র) একটি বিছানা ছিল। কাজেই তাঁর পিঠে এবং পার্শ্বদেশে পাকানো দড়ির দাগ পড়ে গিয়েছিল। আমি তাঁকে আমাদের এবং আবু আমির (রাযিঃ)- এর সংবাদ জানালাম। (তাঁকে এ কথাও বললাম যে) তিনি (মৃত্যুর পূর্বে) বলে গিয়েছেন, তাঁকে [নবী কারীম (ﷺ)- কে] আমার মাগফিরাতের জন্য দু'আ করতে বলবে। এ কথা শুনে নবী কারীম (ﷺ) পানি আনতে বললেন এবং উযু করলেন। তারপর তাঁর দু’হাত উপরে তুলে তিনি দু'আ করে বললেন, হে আল্লাহ্! তোমার প্রিয় বান্দা আবু আমিরকে মাগফিরাত দান করো।
[নবী কারীম (ﷺ) দু'আর মুহূর্তে হাতদ্বয় এত উপরে তুললেন যে] আমি তাঁর বগলদ্বয়ের শুভ্রাংশ পর্যন্ত দেখতে পেয়েছি। তারপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ্! কিয়ামত দিবসে তুমি তাঁকে তোমার অনেক মাখলুকের উপর, অনেক মানুষের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করো। আমি বললামঃ আমার জন্যও (দু'আ করুন)। তিনি দু'আ করলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্! আব্দুল্লাহ ইবনে কায়সের গুনাহ্ ক্ষমা করে দাও এবং কিয়ামত দিবসে তুমি তাঁকে সম্মানিত স্থানে প্রবেশ করাও। বর্ণনাকারী আবু বুরদা (রাযিঃ) বলেন, দু’টি দু'আর একটি ছিল আবু আমির (রাযিঃ)- এর জন্য আর অপরটি ছিলো আবু মুসা (আশআরী) (রাযিঃ)- এর জন্য।
بَابُ غَزْوَةِ أَوْطَاسٍ
4323 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ العَلاَءِ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: لَمَّا فَرَغَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ حُنَيْنٍ بَعَثَ أَبَا عَامِرٍ عَلَى جَيْشٍ إِلَى أَوْطَاسٍ، فَلَقِيَ دُرَيْدَ بْنَ الصِّمَّةِ، فَقُتِلَ دُرَيْدٌ وَهَزَمَ اللَّهُ أَصْحَابَهُ، قَالَ أَبُو مُوسَى: وَبَعَثَنِي مَعَ أَبِي عَامِرٍ، فَرُمِيَ أَبُو عَامِرٍ فِي رُكْبَتِهِ، رَمَاهُ جُشَمِيٌّ بِسَهْمٍ فَأَثْبَتَهُ فِي رُكْبَتِهِ، فَانْتَهَيْتُ إِلَيْهِ فَقُلْتُ: يَا عَمِّ مَنْ رَمَاكَ؟ فَأَشَارَ إِلَى أَبِي مُوسَى فَقَالَ: ذَاكَ قَاتِلِي الَّذِي رَمَانِي، فَقَصَدْتُ لَهُ فَلَحِقْتُهُ، فَلَمَّا رَآنِي وَلَّى، فَاتَّبَعْتُهُ وَجَعَلْتُ أَقُولُ لَهُ [ص:156]: أَلاَ تَسْتَحْيِي، أَلاَ تَثْبُتُ، فَكَفَّ، فَاخْتَلَفْنَا ضَرْبَتَيْنِ بِالسَّيْفِ فَقَتَلْتُهُ، ثُمَّ قُلْتُ لِأَبِي عَامِرٍ: قَتَلَ اللَّهُ صَاحِبَكَ، قَالَ: فَانْزِعْ هَذَا السَّهْمَ فَنَزَعْتُهُ فَنَزَا مِنْهُ المَاءُ، قَالَ: يَا ابْنَ أَخِي أَقْرِئِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ السَّلاَمَ، وَقُلْ لَهُ: اسْتَغْفِرْ لِي. وَاسْتَخْلَفَنِي أَبُو عَامِرٍ عَلَى النَّاسِ، فَمَكُثَ يَسِيرًا ثُمَّ مَاتَ، فَرَجَعْتُ فَدَخَلْتُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِهِ عَلَى سَرِيرٍ مُرْمَلٍ وَعَلَيْهِ فِرَاشٌ، قَدْ أَثَّرَ رِمَالُ السَّرِيرِ بِظَهْرِهِ وَجَنْبَيْهِ، فَأَخْبَرْتُهُ بِخَبَرِنَا وَخَبَرِ أَبِي عَامِرٍ، وَقَالَ: قُلْ لَهُ اسْتَغْفِرْ لِي، فَدَعَا بِمَاءٍ فَتَوَضَّأَ، ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ: «اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِعُبَيْدٍ أَبِي عَامِرٍ» . وَرَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ يَوْمَ القِيَامَةِ فَوْقَ كَثِيرٍ مِنْ خَلْقِكَ مِنَ النَّاسِ» . فَقُلْتُ: وَلِي فَاسْتَغْفِرْ، فَقَالَ: «اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسٍ ذَنْبَهُ، وَأَدْخِلْهُ يَوْمَ القِيَامَةِ مُدْخَلًا كَرِيمًا» قَالَ أَبُو بُرْدَةَ: إِحْدَاهُمَا لِأَبِي عَامِرٍ، وَالأُخْرَى لِأَبِي مُوسَى


বর্ণনাকারী: