মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৬- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৬৯৫
৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - দণ্ডায়মান হওয়া
৪৬৯৫। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, যখন বনু কুরাইযা হযরত সা'দ ইবনে মুয়ায (রাঃ)-এর ফয়সালায় সম্মতি প্রকাশ করিল তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহাকে ডাকিয়া পাঠাইলেন। আর হযরত সা'দ হুযুরের (গৃহের নিকটেই অবস্থান করিতে ছিলেন। তিনি একটি গাধার উপরে সওয়ার হইয়াই আসিলেন। যখন তিনি মসজিদের নিকটে পৌঁছিলেন, তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদিগকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন: তোমরা তোমাদের সর্দারের প্রতি দাড়াইয়া যাও। –মোত্তাঃ। অত্র হাদীসের বিস্তারিত বর্ণনা ‘কয়েদীদের বিধান' সম্পর্কীয় অধ্যায়ে পূর্বেই বর্ণিত হইয়াছে।
بَابُ الْقِيَامِ: الْفَصْل الأول
عَن أبي سعيد الْخُدْرِيّ قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ بَنُو قُرَيْظَةَ عَلَى حُكْمِ سَعْدٍ بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْهِ وَكَانَ قَرِيبًا مِنْهُ فَجَاءَ عَلَى حِمَارٍ فَلَمَّا دَنَا مِنَ الْمَسْجِدِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلْأَنْصَارِ: «قُومُوا إِلَى سيِّدكم» . مُتَّفق عَلَيْهِ. وَمَضَى الْحَدِيثُ بِطُولِهِ فِي «بَابِ حِكَمِ الْإِسْرَاءِ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
قيام ‘কিয়াম' শব্দের আভিধানিক অর্থ দণ্ডায়মান হওয়া। কাহারও সম্মানার্থে দাঁড়ানোর ব্যাপারে মতভেদ রহিয়াছে। কাহারও মতে ইহা মাকরূহ। কেননা, হযরত আনাস (রাঃ)-এর হাদীসে বর্ণিত আছে—নবী (ﷺ) এইভাবে দাঁড়ানো অপছন্দ করিতেন। কেননা, ইহা অমুসলিম মজুসী, আ'জমীদের আচরণ। আবার কাহারও মতে ইহা মুস্তাহাব। কেননা, স্বয়ং নবী (ﷺ) ইকরামা ইবনে আবু জাহল, জা'ফর ইবনে আবু তালিব প্রমুখের আগমনে দাঁড়াইয়া অভ্যর্থনা জানাইয়াছেন। অনুরূপভাবে ফাতিমার আগমনে নবী (ﷺ) এবং নবী (ﷺ)-এর আগমনে ফাতিমার দাঁড়ানো বর্ণিত আছে। তাই ইমাম গাযালী (রহঃ) বলেন, আগত সম্মানিত ব্যক্তির সম্মানার্থে তাহার সম্মুখে একটানা দাঁড়াইয়া থাকা, যেমন আজমীরা তাহাদের রাজা-বাদশাহ্ কিংবা মোড়ল সর্দারদের সম্মানে দাড়াইয়া থাকিত, এই পর্যায়ের ‘কিয়াম' মাকরূহ ও নিষিদ্ধ। কিন্তু কাহারও উচ্চ মর্যাদা ও বুযুর্গীর খাতিরে দাঁড়ানো কিংবা মহব্বতের জোশে দণ্ডায়মান হওয়া, যেমন পিতা-মাতা, উস্তাদ, পীর-বুযুর্গ, মুরশেদ, উলামা, সুলাহাদের আগমনে বা প্রস্থানে দণ্ডায়মান হওয়া জায়েয ।
হযরত সা'দ (রাঃ) ছিলেন এই সময় অসুস্থ, তাই তাঁহাকে সওয়ারী হইতে অবতরণে সাহায্য করণার্থে লোকদিগকে দাড়াইতে নির্দেশ দিয়াছিলেন। অথবা তিনি ছিলেন একদিকে কওমের সম্মানিত নেতা, অপরদিকে সেই দিনের বিচারক। সুতরাং তাঁহার সম্মানে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়াছিলেন। মোটকথা, স্থান, কাল ও ব্যক্তিবিশেষে কাহারও কাহারও সম্মানে দাঁড়ানো জায়েয আছে। আর বিচারকও ইহার অন্তর্ভুক্ত।
হযরত সা'দ (রাঃ) ছিলেন এই সময় অসুস্থ, তাই তাঁহাকে সওয়ারী হইতে অবতরণে সাহায্য করণার্থে লোকদিগকে দাড়াইতে নির্দেশ দিয়াছিলেন। অথবা তিনি ছিলেন একদিকে কওমের সম্মানিত নেতা, অপরদিকে সেই দিনের বিচারক। সুতরাং তাঁহার সম্মানে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়াছিলেন। মোটকথা, স্থান, কাল ও ব্যক্তিবিশেষে কাহারও কাহারও সম্মানে দাঁড়ানো জায়েয আছে। আর বিচারকও ইহার অন্তর্ভুক্ত।
