মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২৪- রোগব্যধি ও রুকইয়া,চিকিৎসা অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৬০১
২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জ্যোতিষীর গণনা
৪৬০১। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ)-এর জনৈক আনসারী সাহাবী আমাকে বর্ণনা করিয়াছেন যে, এক রাত্রে তাঁহারা (সাহাবীরা) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাথে বসা ছিলেন ৷ তখনই হঠাৎ একটি তারকা (আকাশ হইতে) ছুটিল এবং উহাতে চতুর্দিক আলোকিত হইয়া গেল। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, আচ্ছা এইভাবে তারকা ছুটাকে জাহেলিয়াতের যুগে তোমরা কি বলিতে? তাঁহারা বলিলেন, আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূল অধিক অবগত। তবে আমরা বলিতাম; আজ কোন একজন বড় লোকের জন্ম হইয়াছে অথবা কোন একজন বড় লোকের মৃত্যু ঘটিয়াছে। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যুর দরুন তারকা নিক্ষেপ করা হয় না। তবে প্রকৃত ব্যাপার হইল, আমাদের রবু, যাঁহার নাম অতীব বরকতময়, যখন কোন নির্দেশ দেন তখন সর্বপ্রথম আল্লাহর আরশ বহনকারী ফিরিশতাগণ তাসবীহ পাঠ করেন। অতঃপর তাহাদের নিকটবর্তী আসমানের ফিরিশতাগণ তাীহ পাঠ করেন, এইভাবে তাসবীহ পাঠ করার সিলসিলা পর্যায় ক্রমে দুনিয়ার আকাশে অবস্থানরত ফিরিশতাগণ পর্যন্ত পৌঁছিয়া যায়, অতঃপর আরশবহনকারী ফিরিশতাগণের নিকটবর্তী ফিরিশতাগণ আরশবহনকারীদেরকে জিজ্ঞাসা করেন তোমাদের প্রভু কি বলিয়াছেন? তখন তাহারা আল্লাহ্ যাহা বলিয়াছেন তাহা তাহাদিগকে বলিয়া দেন এবং সাথে সাথে পরস্পরের জানাজানির মধ্যে দুনিয়ার আকাশে অবস্থানরত ফিরিশতাগণ পর্যন্ত পৌঁছিয়া যায় এবং চোরা পথে খবর সংগ্রহকারী জ্বিন শয়তান তড়িৎ গতিতে আকাশের সেই খবরটি সংগ্রহ করিয়া লয় এবং তাহাদের বন্ধুদের কাছে পৌঁছাইয়া দেয়। সুতরাং যেই সমস্ত কথা উহার অবিকল বর্ণনা করে, উহা সঠিক ও সত্য। কিন্তু গণক ও জাদুকররা উহার সাথে আরো অনেক (মিথ্যা) মিশাইয়া প্রকাশ করিতে থাকে। —মুসলিম
وَعَن ابنِ عبَّاسٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْأَنْصَارِ: أَنَّهُمْ بَيْنَا جُلُوسٌ لَيْلَةً مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رُمِيَ بِنَجْمٍ وَاسْتَنَارَ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا كُنْتُمْ تَقُولُونَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ إِذَا رُمِيَ بِمِثْلِ هَذَا؟» قَالُوا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ كُنَّا نَقُولُ: وُلِدَ اللَّيْلَةَ رَجُلٌ عَظِيمٌ وَمَاتَ رَجُلٌ عَظِيمٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَإِنَّهَا لَا يُرْمَى بِهَا لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ وَلَكِنَّ رَبَّنَا تَبَارَكَ اسْمُهُ إِذَا قَضَى أَمر سَبَّحَ حَمَلَةُ الْعَرْشِ ثُمَّ سَبَّحَ أَهْلُ السَّمَاءِ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ حَتَّى يَبْلُغَ التَّسْبِيحُ أَهْلَ هَذِهِ السَّمَاء الدُّنْيَا ثمَّ قَالَ الَّذِي يَلُونَ حَمَلَةَ الْعَرْشِ لِحَمَلَةِ الْعَرْشِ: مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ؟ فَيُخْبِرُونَهُمْ مَا قَالَ: فَيَسْتَخْبِرُ بَعْضُ أَهْلِ السَّمَاوَاتِ بَعْضًا حَتَّى يَبْلُغَ هَذِهِ السَّمَاءَ الدُّنْيَا فَيَخْطَفُ الْجِنُّ السَّمْعَ فَيَقْذِفُونَ إِلَى أَوْلِيَائِهِمْ وَيُرْمَوْنَ فَمَا جاؤوا بِهِ عَلَى وَجْهِهِ فَهُوَ حَقٌّ وَلَكِنَّهُمْ يَقْرِفُونَ فِيهِ وَيزِيدُونَ . رَوَاهُ مُسلم

হাদীসের ব্যাখ্যা:

সুতরাং নক্ষত্র নিক্ষেপের সাথে কোন বড় লোকের জন্ম মৃত্যুর সম্পর্ক থাকার ধারণা অমূলক; বরং চোর শয়তানদের বিতাড়িত করার জন্যই নক্ষত্র হইতে আগুনের ফুলকি নিক্ষেপ করা হয়।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৪৬০১ | মুসলিম বাংলা