মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২৪- রোগব্যধি ও রুকইয়া,চিকিৎসা অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৫৭৬
- রোগব্যধি ও রুকইয়া,চিকিৎসা অধ্যায়
১. প্রথম অনুচ্ছেদ - শুভ ও অশুভ লক্ষণ
৪৫৭৬। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাকে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলেনঃ কোন কিছুকে অশুভ গণ্য করিও না। অবশ্য কিছু দ্বারা শুভ লক্ষণ গ্রহণ করা উত্তম। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করিলেন, শুভ লক্ষণ কি? তিনি বলিলেন, তোমাদের কাহারও (তাহার অবস্থা ও পরিস্থিতি মোতাবেক তাহার) পক্ষে কোন ভাল কথা, যাহা সে শুনিতে পায়। মোত্তাঃ
كتاب الطب والرقى
بَابُ الْفَأْلِ وَالطِّيَرَةِ: الْفَصْل الأول
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا طِيَرَةَ وَخَيْرُهَا الْفَأْلُ» قَالُوا: وَمَا الْفَأْلُ؟ قَالَ: «الْكَلِمَةُ الصَّالِحَة يسْمعهَا أحدكُم»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

فأل (ফাল), অর্থ, শুভ লক্ষণ। ইসলামে ইহার বৈধতা স্বীকার করা হইয়াছে। যেমন, কোন রুগ্ন ব্যক্তি শুনিতে পাইল, হে সুস্থ লোক! কিংবা কোন পথহারা পথিক শুনিল, হে পথিক! পথ পাইয়া গিয়াছ। কোন অভিযানের যাত্রীর কানে বাজিয়া উঠিল, কে যেন বলিতেছে, হে বিজয়ী ইত্যাদি। এইরূপ শব্দ শুনিলে রুগ্ন ব্যক্তি, পথিক ও অভিযাত্রীর মনে রোগমুক্তি ও উদ্দিষ্ট পথপ্রাপ্তির এবং যাত্রীর মনে একটা শুভ ধারণা জন্ম নেয় এবং তাহারা মানসিক শক্তি অর্জনে সক্ষম হয়। বিশেষত রোগ নিরাময়ের জন্য রোগীর মানসিক শক্তি ও মনোবল একটি প্রধান উপায়। নবী (ﷺ) এইরূপ শুভ লক্ষণ গ্রহণ করিতেন।
طيرة (তিয়ারাহ), অর্থ, অশুভ লক্ষণ। জাহেলী যুগে নিশাচর পাখী পেঁচক সম্পর্কে নানারূপ কু-ধারণা পোষণ করা হইত। আরবের লোকেরা ইহাকে নানা অশুভের প্রতীক বলিয়া মনে করিত। এতদ্ভিন্ন তাহাদের মধ্যে এই রেওয়াজ বিদ্যমান ছিল, যখন তাহারা কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজে বাহির হইত, তখন নিজেদের পোষা পাখীকে ছাড়িয়া দিত কিংবা অপোষা বন্য পাখীকে ঢিল ছুঁড়িত। যদি উহা ডান দিকে উড়িয়া যাইত, তখন নিজের উদ্দেশ্য সফলজনক হইবে বলিয়া ধারণা করিত এবং স্বতঃস্ফূর্ত সেই কাজে অগ্রসর হইত। কিন্তু যদি পাখীটি বাম দিকে উড়িয়া যাইত, তখন উহাকে অশুভ লক্ষণ মনে করিত এবং সেই কাজ হইতে বিরত থাকিত, তবে ইসলাম এই ধারণাটিকে পাল্টাইয়া দিয়াছে এবং বলিয়াছে, পেঁচক কিংবা অন্য কোন পাখীর উড়ানোর মধ্যে শুভ-অশুভ লক্ষণ বলিতে কিছুই নাই। এইরূপ করাকে নবী (ﷺ) অপছন্দ করিয়াছেন। এই অধ্যায়ের হাদীসগুলিতে এই জাতীয় বিভিন্ন কুসংস্কার সম্পর্কে আলোচনা করা হইয়াছে।

যেমন কোন ব্যবসায়ী ব্যক্তি শুনিতে পাইল; কেহ বলিতেছে, ইয়া রাযেকু, ইয়া রাবাহু! কোন মুসাফির শুনিল, ইয়া সালেমু! ইত্যাদি।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান