মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২৩- পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা

হাদীস নং: ৪৩৯৫
১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আংটির বর্ণনা
৪৩৯৫। হযরত মুআবিয়া (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) চিতা বাঘের চামড়ার তৈয়ারী গদিতে সওয়ার হইতে নিষেধ করিয়াছেন এবং তিনি পুরুষদিগকে স্বর্ণ ব্যবহার করিতে নিষেধ করিয়াছেন। তবে কর্তিত উহার মিহিন অংশ বিশেষ ব্যবহারের অনুমতি দিয়াছেন। – আবু দাউদ ও নাসায়ী
وَعَن مُعَاوِيَةُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ رُكُوبِ النُّمُورِ وَعَنْ لُبْسِ الذَّهَبِ إِلَّا مُقَطَّعًا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

১. হাদীসের শব্দ مقطعا অর্থ, কর্তিত অংশ এত সামান্য যে, উহার পরিমাণ নামেমাত্র রহিয়াছে। উহা আংটি ইত্যাদিতে মিশ্রিতভাবে ব্যবহারের অনুমতি রহিয়াছে।

২. এ হাদীছটিতে বাঘ ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণীর চামড়াকে বিছানা বানাতে কিংবা পশুর পিঠে বিছিয়ে তার উপর সওয়ার হতে নিষেধ করা হয়েছে। সেকালে অনারবরা এটা করত। এটা এক রকম অহমিকা। বিলাসিতাও বটে। অহংকারী লোক মানুষকে দেখানোর জন্য এ জাতীয় বিলাসিতা সেকালেও করত, এখনও করে থাকে। গৌরব দেখানো ভালো নয়। বিলাসিতাও পসন্দনীয় নয়। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতকে নিষেধ করে দিয়েছেন যে, তারা যেন বাঘ বা অন্য কোনও হিংস্র পশুর চামড়াকে বিছানা বানিয়ে তার উপর না বসে কিংবা তাতে সওয়ার না হয় অর্থাৎ তা দ্বারা সওয়ারীর জিন না বানায়। সারকথা একজন মুমিনের দৃষ্টি থাকবে সর্বদা আখিরাতের দিকে। কীভাবে আখিরাতের মুক্তিলাভ হতে পারে, তার যাবতীয় কাজকর্ম সে লক্ষ্যেই সম্পাদিত হবে। সে ভোগ-বিলাসিতায় লিপ্ত হয়ে আখিরাত থেকে উদাসীন হবে না। তার পোশাক-আশাক ও অন্যান্য ব্যবহার্য সামগ্রী হবে সাদামাটা। এসব বস্তু অতিরিক্ত দামি বা বিলাসিতাপূর্ণ হলে অন্তরে তার প্রতি ভালোবাসার সৃষ্টি হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে এগুলো মানুষের সেবক থাকে না, উল্টো মানুষ এর সেবক হয়ে যায়। এভাবে মানুষ আখিরাত থেকে উদাসীন হয়ে এসব সামগ্রী সংগ্রহ ও এর সেবাযত্নে লিপ্ত হয়ে পড়ে, যা কিনা মানবসৃষ্টির উদ্দেশ্যেরও পরিপন্থি এবং দুনিয়ার বস্তুসামগ্রী সৃষ্টির উদ্দেশ্যের সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

মুমিনদের উচিত সর্বপ্রকার বিলাসসামগ্রী ও অহমিকাজনক বস্তুর ব্যবহার থেকে বেঁচে থাকা।
২. ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান