মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৩- পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
হাদীস নং: ৪৩৬৮
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৬৮। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলিয়াছেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সম্মুখ দিয়া যাইতেছিলাম। সেই সময় আমার ইযার (লুঙ্গী) ঝুলান ছিল। তখন তিনি আমাকে বলিলেনঃ হে আব্দুল্লাহ্! তোমার ইযার উঠাইয়া লও। তখনই আমি উহা উঠাইয়া লইলাম। অতঃপর বলিলেন, আরো উঠাও। সুতরাং আমি আরও উঠাইলাম। ইহার পর হইতে আমি সর্বদা উহা উপরে বাঁধিতে তৎপর থাকিতাম। কেহ কেহ জিজ্ঞাসা করিল, কতটুকু উপরে উঠাইতে হইবে। তিনি বলিলেন, দুই পায়ের অর্ধ নলা পর্যন্ত। —মুসলিম
الْفَصْلُ الثَّالِثُ
عَن ابنِ عمَرِ قَالَ: مَرَرْتُ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي إِزَارِي اسْتِرْخَاءٌ فَقَالَ: «يَا عَبْدَ اللَّهِ ارْفَعْ إِزَارَكَ» فَرَفَعْتُهُ ثُمَّ قَالَ: «زِدْ» فَزِدْتُ فَمَا زِلْتُ أَتَحَرَّاهَا بَعْدُ فَقَالَ: بَعْضُ الْقَوْمِ: إِلَى أَيْنَ؟ قَالَ: «إِلَى أَنْصَافِ السَّاقَيْنِ» . رَوَاهُ مُسلم
হাদীসের ব্যাখ্যা:
১. টাখনার নীচে লুঙ্গী, পেণ্ট, পায়জামা ইত্যাদি ঝুলাইয়া পরা হারাম।
২. এ হাদীছ দ্বারা টাখনুর নিচে লুঙ্গি পরার নিষিদ্ধতা জানার পাশাপাশি তা পায়ের নলার ঠিক কোন বরাবর পরা উত্তম তাও জানা যায়। সেইসঙ্গে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামের আমলের সংশোধন ও তাদের জীবনগঠনের প্রতি কী সতর্ক দৃষ্টি রাখতেন সে সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ অনুসরণে সব সাহাবীরই আগ্রহ-উদ্দীপনা ছিল অসাধারণ। তবে হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি.-এর এ বিষয়ে আলাদা বিশেষত্ব রয়েছে। কেবল শর'ঈ বিষয় নয়; এমনকি স্বভাব-প্রকৃতি ও রুচি-অভিরুচির ক্ষেত্রেও তিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণে সচেষ্ট থাকতেন। কাজেই বলা যায় টাখনুর নিচে তাঁর লুঙ্গি ঝুলে পরাটা ইচ্ছাকৃত ছিল না। অসতর্কতাবশত এমন হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর এ কাজটির সংশোধন করা জরুরি মনে করেছেন। তিনি তাঁকে সতর্ক করে বললেন, হে আব্দুল্লাহ! তোমার লুঙ্গি উপরে উঠাও। তিনি তাঁর লুঙ্গি টাখনুর উপরে উঠালেন। বললেন, আরও উঠাও। তিনি আরও উঠালেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি, পরবর্তীকালে যখন এ ঘটনা বর্ণনা করেন তখন উপস্থিত লোকদের কেউ জিজ্ঞেস করল, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নলার কোন পর্যন্ত উঠাতে বলেছিলেন? তিনি বললেন, নলার মাঝ বরাবর।
হযরত ইবনে উমর রাযি, হাদীছটি বর্ণনা করার পর বলেন- فما زلت أتحراها بعد (তারপর আমি এদিকে মনোযোগ অব্যাহত রাখলাম)। تَحَرِّي অর্থ অনুসন্ধান করা, কোনও বিষয়ে প্রয়াস চালানো ও বিশেষ মনোযোগ দেওয়া। কারও যখন এমন কোনও স্থানে নামাযের ওয়াক্ত হয়, যেখানে তার জানা থাকে না কিবলা কোন দিকে, তখন তার কর্তব্য হল ঠিক কোন দিকে কিবলা তা স্থির করার জন্য সকল উপায়ে অনুসন্ধান চালানো ও চিন্তা-ভাবনা করা। এরূপ অনুসন্ধান ও চিন্তা-ভাবনাকে تَحَرِّي (তাহাররী) বলা হয়ে থাকে। তো হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. বোঝাচ্ছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ আদেশের পর লুঙ্গি পরার সময় আমি সতর্ক দৃষ্টি রাখি ও সচেষ্ট থাকি যাতে আমার লুঙ্গি পায়ের নলার মাঝ বরাবর থাকে, তার নিচে নেমে না যায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. লুঙ্গি, পায়জামা ইত্যাদি পরিধানকালে সতর্ক দৃষ্টি রাখা চাই যাতে তা টাখনুর নিচে নেমে না যায়; বরং পায়ের নলার মাঝ বরাবর থাকে।
খ. প্রতিটি কাজের বেলায় সতর্ক দৃষ্টি রাখা দরকার যাতে তা সুন্নত মোতাবেক হয়।
২. এ হাদীছ দ্বারা টাখনুর নিচে লুঙ্গি পরার নিষিদ্ধতা জানার পাশাপাশি তা পায়ের নলার ঠিক কোন বরাবর পরা উত্তম তাও জানা যায়। সেইসঙ্গে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামের আমলের সংশোধন ও তাদের জীবনগঠনের প্রতি কী সতর্ক দৃষ্টি রাখতেন সে সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ অনুসরণে সব সাহাবীরই আগ্রহ-উদ্দীপনা ছিল অসাধারণ। তবে হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি.-এর এ বিষয়ে আলাদা বিশেষত্ব রয়েছে। কেবল শর'ঈ বিষয় নয়; এমনকি স্বভাব-প্রকৃতি ও রুচি-অভিরুচির ক্ষেত্রেও তিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণে সচেষ্ট থাকতেন। কাজেই বলা যায় টাখনুর নিচে তাঁর লুঙ্গি ঝুলে পরাটা ইচ্ছাকৃত ছিল না। অসতর্কতাবশত এমন হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর এ কাজটির সংশোধন করা জরুরি মনে করেছেন। তিনি তাঁকে সতর্ক করে বললেন, হে আব্দুল্লাহ! তোমার লুঙ্গি উপরে উঠাও। তিনি তাঁর লুঙ্গি টাখনুর উপরে উঠালেন। বললেন, আরও উঠাও। তিনি আরও উঠালেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি, পরবর্তীকালে যখন এ ঘটনা বর্ণনা করেন তখন উপস্থিত লোকদের কেউ জিজ্ঞেস করল, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নলার কোন পর্যন্ত উঠাতে বলেছিলেন? তিনি বললেন, নলার মাঝ বরাবর।
হযরত ইবনে উমর রাযি, হাদীছটি বর্ণনা করার পর বলেন- فما زلت أتحراها بعد (তারপর আমি এদিকে মনোযোগ অব্যাহত রাখলাম)। تَحَرِّي অর্থ অনুসন্ধান করা, কোনও বিষয়ে প্রয়াস চালানো ও বিশেষ মনোযোগ দেওয়া। কারও যখন এমন কোনও স্থানে নামাযের ওয়াক্ত হয়, যেখানে তার জানা থাকে না কিবলা কোন দিকে, তখন তার কর্তব্য হল ঠিক কোন দিকে কিবলা তা স্থির করার জন্য সকল উপায়ে অনুসন্ধান চালানো ও চিন্তা-ভাবনা করা। এরূপ অনুসন্ধান ও চিন্তা-ভাবনাকে تَحَرِّي (তাহাররী) বলা হয়ে থাকে। তো হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. বোঝাচ্ছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ আদেশের পর লুঙ্গি পরার সময় আমি সতর্ক দৃষ্টি রাখি ও সচেষ্ট থাকি যাতে আমার লুঙ্গি পায়ের নলার মাঝ বরাবর থাকে, তার নিচে নেমে না যায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. লুঙ্গি, পায়জামা ইত্যাদি পরিধানকালে সতর্ক দৃষ্টি রাখা চাই যাতে তা টাখনুর নিচে নেমে না যায়; বরং পায়ের নলার মাঝ বরাবর থাকে।
খ. প্রতিটি কাজের বেলায় সতর্ক দৃষ্টি রাখা দরকার যাতে তা সুন্নত মোতাবেক হয়।
২. ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
