মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
হাদীস নং: ৪০৬৩
১১.তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ফাই (বিনাযুদ্ধে প্রাপ্ত শত্রুদের সম্পদ)-এর বর্ণনা
৪০৬৩। হযরত মুগীরা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আযীয (রহঃ) খলীফা নিযুক্ত হইয়াই মারওয়ানের সন্তানদিগকে একত্রিত করিয়া বলিলেন, নিশ্চয় ফাদাকভূমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর জন্যই ছিল, তিনি ফাদাক ভূমির আয় নিজের (পরিবার-পরিজনের) জন্য ব্যয় করিতেন। এতদ্ভিন্ন বনী হাশেমের ছোট ছোট শিশু-কিশোরের জন্য উহা হইতে ব্যয় করিতেন এবং উহা হইতে তাহাদের অবিবাহিতদের বিবাহে ব্যয় করিতেন। হযরত ফাতেমা (রাঃ) হুযূর (ﷺ)-এর কাছে চাহিলেন যে, উক্ত (ফাদাক) ভূমি তাঁহাকে দেওয়া হউক; কিন্তু তিনি অস্বীকার করিলেন। ফলে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর জীবদ্দশায় উহা অনুরূপভাবেই পরিচালিত হইতেছিল। অতঃপর এই অবস্থায় রাখিয়া তিনি ইন্তেকাল করিলেন। যখন হযরত আবু বকর (রাঃ) খলীফা নিযুক্ত হইলেন, তখন তিনিও উহাতে সেই নীতিই অবলম্বন করিলেন যেই নীতি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁহার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অবলম্বন করিয়াছিলেন । অবশেষে এই অবস্থায় রাখিয়া তিনিও ইনতেকাল করিলেন। অতঃপর যখন হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) খলীফা নিযুক্ত হইলেন, তখন তিনিও উহার মধ্যে সেই একই নীতি অবলম্বন করিলেন, যাহা তাহার পূর্বসূরী দুইজন (অর্থাৎ, নবী (ﷺ) ও আবু বকর [রাঃ]) অবলম্বন করিয়াছিলেন। এই অবস্থায় রাখিয়া অবশেষে তিনিও ইন্তেকাল করিলেন।
অতঃপর (হযরত ওসমান [রাঃ]-এর খেলাফত আমলে) মারওয়ান উক্ত ফাদাক ভূমিকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পদের অন্তর্ভুক্ত করিল। অতঃপর উহা ওমর ইবনে আব্দুল আযীযের ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হইল। (পরে যখন হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আযীয় খলীফা নিযুক্ত হইলেন, তখন তিনি এই সম্পর্কে মন্তব্য করিতে যাইয়া বলিলেন) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যাহা তাঁহার কন্যা ফাতেমাকে দেন নাই, আমি দেখিতেছি, উহার মধ্যে কোন অবস্থাতেই আমার ব্যক্তিগত কোন অধিকার নাই। (অতঃপর তিনি উপস্থিত মারওয়ান তথা উমাইয়্যার বংশধরকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন) আমি তোমাদিগকে সাক্ষ্য করিয়া ঘোষণা করিতেছি যে, আমি ফাদাক ভূমিকে পুনরায় ঐ অবস্থায় ফেরত দিয়া নিলাম, যেই অবস্থায় উহা ছিল অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এবং আবু বকর ও ওমর (রাঃ)-এর যামানায়। —আবু দাউদ
অতঃপর (হযরত ওসমান [রাঃ]-এর খেলাফত আমলে) মারওয়ান উক্ত ফাদাক ভূমিকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পদের অন্তর্ভুক্ত করিল। অতঃপর উহা ওমর ইবনে আব্দুল আযীযের ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হইল। (পরে যখন হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আযীয় খলীফা নিযুক্ত হইলেন, তখন তিনি এই সম্পর্কে মন্তব্য করিতে যাইয়া বলিলেন) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যাহা তাঁহার কন্যা ফাতেমাকে দেন নাই, আমি দেখিতেছি, উহার মধ্যে কোন অবস্থাতেই আমার ব্যক্তিগত কোন অধিকার নাই। (অতঃপর তিনি উপস্থিত মারওয়ান তথা উমাইয়্যার বংশধরকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন) আমি তোমাদিগকে সাক্ষ্য করিয়া ঘোষণা করিতেছি যে, আমি ফাদাক ভূমিকে পুনরায় ঐ অবস্থায় ফেরত দিয়া নিলাম, যেই অবস্থায় উহা ছিল অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এবং আবু বকর ও ওমর (রাঃ)-এর যামানায়। —আবু দাউদ
الْفَصْل الثَّالِث
عَن المغيرةِ قَالَ: إِنَّ عمَرَ بنَ عبد العزيزِ جَمَعَ بَنِي مَرْوَانَ حِينَ اسْتُخْلِفَ فَقَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَتْ لَهُ فَدَكُ فَكَانَ يُنْفِقُ مِنْهَا وَيَعُودُ مِنْهَا عَلَى صَغِيرِ بَنِي هَاشِمٍ وَيُزَوِّجُ مِنْهَا أَيِّمَهُمْ وَإِنَّ فَاطِمَةَ سَأَلَتْهُ أَنْ يَجْعَلَهَا لَهَا فَأَبَى فَكَانَتْ كَذَلِكَ فِي حَيَاةَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَيَاتِهِ حَتَّى مَضَى لسبيلِه فَلَمَّا وُلّيَ أَبُو بكرٍ علم فِيهَا بِمَا عَمِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَيَاتِهِ حَتَّى مَضَى لِسَبِيلِهِ فَلَمَّا أَنْ وُلِّيَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ عَمِلَ فِيهَا بِمِثْلِ مَا عَمِلَا حَتَّى مَضَى لِسَبِيلِهِ ثُمَّ اقْتَطَعَهَا مَرْوَانُ ثُمَّ صَارَتْ لِعُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ فَرَأَيْتُ أَمْرًا مَنَعَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاطِمَةَ لَيْسَ لِي بِحَقٍّ وَإِنِّي أُشْهِدُكُمْ أَنِّي رَدَدْتُهَا عَلَى مَا كَانَتْ. يَعْنِي عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبِي بَكْرٍ وعمَرَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এই মারওয়ান হইলেন হযরত ওমর ইবনে আবদুল আযীযের দাদা, মারওয়ান ইবনে হাকাম। তিনি নবী (ﷺ)-এর যমানায় জন্মগ্রহণ করিয়াছেন, তবে তাঁহার সাথে সাক্ষাৎ হয় নাই। اقطع অর্থ, সরকার কর্তৃক ভূমির একটি অংশ যে কোন ব্যক্তিকে বন্দোবস্ত দেওয়া। কিন্তু এইখানে উহার অর্থ হইল নিজের বা নিজের বংশধরদের জন্য কুক্ষিগত করা।
