মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়

হাদীস নং: ৪০৩০
৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০৩০। হযরত সা'দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) একদল লোককে কিছু দান করিলেন, আর আমি তথায় উপবিষ্ট ছিলাম, কিন্তু রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) উহাদের একজনকে দিলেন না। অথচ আমার ধারণা মতে সেই লোকটিই ছিল সর্বাপেক্ষা উত্তম ও যোগ্য ব্যক্তি। সুতরাং আমি দাঁড়াইলাম এবং বলিলাম, অমুক লোকটিকে আপনি বাদ দিলেন কেন? আল্লাহর কসম, আমি তো তাহাকে মু'মিন বলিয়া জানি। জবাবে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ বরং মুসলমান (বল)। এইভাবে হযরত সা'দ উক্ত কথাটিকে তিনবার পুনরাবৃত্তি করিলেন, আর হুযূর (ﷺ)-ও তাহাকে অনুরূপ উত্তর দিলেন। অতঃপর হুযূর (ﷺ) বলিলেন, (হে সা'দ!) আমি অবশ্য ব্যক্তিবিশেষকে দান করি, অথচ অন্য লোক (যাহাকে আমি দান করিতেছি না) সে আমার নিকট ঐ লোক অপেক্ষা অধিক প্রিয়। (তবুও আমি এই আশংকায় এইরূপ করি, যেন আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে উল্টা মুখে আগুনে ফেলিয়া না দেন। – মোত্তাঃ
বুখারী ও মুসলিমের অন্য রেওয়ায়তে আছে, ইমাম যুহরী বলিয়াছেন, আমরা মনে করি, ইসলাম হইল মুখে কালেমা উচ্চারণ করা। আর ঈমান হইল নেক আমল করা।
وَعَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ: أَعْطَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَهْطًا وَأَنَا جَالِسٌ فَتَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مِنْهُم رَجُلًا وَهُوَ أَعْجَبُهُمْ إِلَيَّ فَقُمْتُ فَقُلْتُ: مَا لَكَ عَنْ فُلَانٍ؟ وَاللَّهِ إِنِّي لَأُرَاهُ مُؤْمِنًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أوْ مُسلما» ذكرَ سَعْدٌ ثَلَاثًا وَأَجَابَهُ بِمِثْلِ ذَلِكَ ثُمَّ قَالَ: «إِنِّي لَأُعْطِي الرَّجُلَ وَغَيْرُهُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْهُ خَشْيَةَ أَنْ يُكَبَّ فِي النَّارِ عَلَى وَجْهِهِ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا: قَالَ الزُّهْرِيُّ: فترى: أَن الْإِسْلَام الْكَلِمَة وَالْإِيمَان الْعَمَل الصَّالح

হাদীসের ব্যাখ্যা:

বঞ্চিত ব্যক্তি ছিলেন জুয়াইল ইবনে আমের যুমাইরী। মূলত অন্তরে বিশ্বাসীকে বলে মু'মিন। কাজেই ঈমানের সম্পর্ক হইল অন্তরের সাথে। আর বাহ্যিকভাবে ইসলামের অনুকূলে কাজ করিলে তাহাকে বলা হয়, মুসলিম। সুতরাং বাহ্যিক অবস্থার সাথে ইসলামের সম্পর্ক। ফলে হুযূর (ﷺ)-এর কথার তাৎপর্য হইল, তুমি তো তাহার অন্তরের অবস্থা জান না, কাজেই শপথ করিয়া দৃঢ় তার সাথে তাহাকে মু'মিন বলিয়া সাক্ষ্য দেওয়া উচিত নহে; বরং মুসলিম বলাই উচিত। আর হুযূর (ﷺ)-এর শেষ বাক্যের অর্থ হইল, যাহার ঈমান সবল, আল্লাহর রাসূল তাহাকে তো অধিক ভালবাসেনই। সুতরাং তাহাকে মাল-সম্পদ কিছু না দিলেও সে বীতশ্রদ্ধ হইয়া কোন গুনাহ কিংবা কুফরীর দিকে পা বাড়াইবে না, পক্ষান্তরে দুর্বল ঈমানদারকে মাল না দিলে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তনের আশংকা আছে। তাই تاليفا للقلوب ঈমান রক্ষার্থে তাহাকে মাল দেওয়া হইয়াছে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৪০৩০ | মুসলিম বাংলা