মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৯৮৯
৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৩৯৮৯। হযরত সালামা ইবনে আকৃওয়া (রাঃ) বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় গোলাম রাবাহকে স্বীয় উষ্ট্রীসহ পাঠাইলেন। আমিও তাহার সঙ্গে ছিলাম। ভোর হইতে না হইতে হঠাৎ আব্দুর রহমান ফাযারী রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উটগুলি লুট করিয়া লইয়া গেল। (সালামাহ্ বলেন,) তখন আমি একটি উচ্চ টিলার উপরে উঠিয়া মদীনাকে সম্মুখে রাখিয়া খুব জোরে ইয়া সাবাহাহ্ (প্রত্যুষে শত্রু আক্রমণ প্রতিহত করিতে আস) বলিয়া তিনবার ডাক দিলাম। অতঃপর আমি ছিনতাইকারী শত্রুদলের প্রতি তীর নিক্ষেপ করিতে করিতে তাহাদের পশ্চাতে ধাওয়া করিলাম। আর এই ছন্দটি আবৃত্তি করিতে থাকিলাম। অর্থ : আমি হইলাম আকওয়ার স্বনামধন্য পুত্র, আজ মাতৃদুগ্ধ স্মরণের দিন। অবশেষে আমি তাহাদের প্রতি অবিরাম তীর নিক্ষেপ করিতে করিতে এবং তাহাদেরে ঘায়েল করিতে করিতে সম্মুখে অগ্রসর হইতে লাগিলাম। শেষ নাগাদ রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমস্ত উট (তাহাদের নিকট হইতে ছিনাইয়া) আমার পশ্চাতে রাখিয়া পুনরায় তীর নিক্ষেপ করিতে করিতে তাহাদের পিছনে ছুটিলাম। অবশেষে তাহারা শরীরের বোঝা হাল্কা করিবার নিমিত্ত ত্রিশখানারও বেশী চাদর এবং ত্রিশটি বর্শা ফেলিয়া গেল। আর এদিকে আমি প্রতিটি চাদর ও তীরের উপর পাথর চাপা দিয়া এই চিহ্ন রাখিয়া গেলাম যেন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাহার সঙ্গীরা এই কথা বুঝিতে পারেন যে, এই সমস্ত জিনিসগুলি আমিই শত্রুদের নিকট হইতে ছিনাইয়া লইয়াছি। অবশেষে আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সওয়ারীদিগকে দেখিতে পাইলাম। ( ইত্যবসরে) রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘোড়সওয়ার আবু কাতাদাহ্, আব্দুর রহমান (ফাযারী)-কে নাগালে পাইয়া তৎক্ষণাৎ তাহাকে কতল করিলেন। (তখন) রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেনঃ আবু কাতাদাহ্ই হইল আজ আমাদের ঘোড়সওয়ারদের মধ্যে উত্তম এবং পদাতিকের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম হইল সালামা ইবনুল আকওয়া। সালামা বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দুই অংশ দিলেন। এক অংশ সওয়ারীর আর এক অংশ পদাতিকের। অর্থাৎ, একত্রে উভয় অংশই আমাকে প্রদান করিলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনার দিকে প্রত্যাবর্তনকালে আমাকে তাঁহার আযবা নামক সওয়ারীর উপরে তাহার পিছনে বসাইয়া লইলেন। -মুসলিম
وَعَنْ سَلَمَةَ بْنِ الْأَكْوَعِ قَالَ: بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِظَهْرِهِ مَعَ رَبَاحٍ غُلَامِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا مَعَهُ فَلَمَّا أَصْبَحْنَا إِذَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ الْفَزَارِيُّ قَدْ أَغَارَ عَلَى ظَهْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُمْتُ عَلَى أَكَمَةٍ فَاسْتَقْبَلْتُ الْمَدِينَةَ فَنَادَيْتُ ثَلَاثًا يَا صَبَاحَاهْ ثُمَّ خَرَجْتُ فِي آثَارِ الْقَوْمِ أَرْمِيهِمْ بِالنَّبْلِ وَأَرْتَجِزُ وَأَقُولُ:
أَنَا ابْنُ الْأَكْوَعْ وَالْيَوْمُ يَوْمُ الرُّضَّعْ
فَمَا زِلْتُ أَرْمِيهِمْ وَأَعْقِرُ بِهِمْ حَتَّى مَا خلَقَ اللَّهُ مِنْ بَعِيرٍ مِنْ ظَهْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَّا خَلَّفْتُهُ وَرَاءَ ظَهْرِي ثُمَّ اتَّبَعْتُهُمْ أَرْمِيهِمْ حَتَّى أَلْقَوْا أَكْثَرَ مِنْ ثَلَاثِينَ بُرْدَةً وَثَلَاثِينَ رُمْحًا يَسْتَخِفُّونَ وَلَا يَطْرَحُونَ شَيْئًا إِلَّا جَعَلْتُ عَلَيْهِ آرَامًا مِنَ الْحِجَارَةِ يَعْرِفُهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابُهُ حَتَّى رَأَيْتُ فَوَارِسَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَحِقَ أَبُو قَتَادَةَ فَارِسُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَبْدِ الرَّحْمَنِ فَقَتَلَهُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خَيْرُ فُرْسَانِنَا الْيَوْمَ أَبُو قَتَادَةَ وَخَيْرُ رَجَّالَتِنَا سَلَمَةُ» . قَالَ: ثُمَّ أَعْطَانِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَهْمَيْنِ: سَهْمَ الْفَارِسِ وَسَهْمَ الرَّاجِلِ فَجَمَعَهُمَا إِلَيَّ جَمِيعًا ثُمَّ أَرْدَفَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَاءَهُ عَلَى الْعَضْبَاءِ رَاجِعَيْنِ إِلَى الْمَدِينَةِ. رَوَاهُ مُسلم
أَنَا ابْنُ الْأَكْوَعْ وَالْيَوْمُ يَوْمُ الرُّضَّعْ
فَمَا زِلْتُ أَرْمِيهِمْ وَأَعْقِرُ بِهِمْ حَتَّى مَا خلَقَ اللَّهُ مِنْ بَعِيرٍ مِنْ ظَهْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَّا خَلَّفْتُهُ وَرَاءَ ظَهْرِي ثُمَّ اتَّبَعْتُهُمْ أَرْمِيهِمْ حَتَّى أَلْقَوْا أَكْثَرَ مِنْ ثَلَاثِينَ بُرْدَةً وَثَلَاثِينَ رُمْحًا يَسْتَخِفُّونَ وَلَا يَطْرَحُونَ شَيْئًا إِلَّا جَعَلْتُ عَلَيْهِ آرَامًا مِنَ الْحِجَارَةِ يَعْرِفُهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابُهُ حَتَّى رَأَيْتُ فَوَارِسَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَحِقَ أَبُو قَتَادَةَ فَارِسُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَبْدِ الرَّحْمَنِ فَقَتَلَهُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خَيْرُ فُرْسَانِنَا الْيَوْمَ أَبُو قَتَادَةَ وَخَيْرُ رَجَّالَتِنَا سَلَمَةُ» . قَالَ: ثُمَّ أَعْطَانِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَهْمَيْنِ: سَهْمَ الْفَارِسِ وَسَهْمَ الرَّاجِلِ فَجَمَعَهُمَا إِلَيَّ جَمِيعًا ثُمَّ أَرْدَفَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَاءَهُ عَلَى الْعَضْبَاءِ رَاجِعَيْنِ إِلَى الْمَدِينَةِ. رَوَاهُ مُسلم
হাদীসের ব্যাখ্যা:
يا صباحاء আরবের প্রচলিত নিয়ম রহিয়াছে যে, বিপদকালে সাহায্য কামনার্থে আপনজনকে এই বাক্য দ্বারা উচ্চ স্বরে আহ্বান করে। يوم الرضع ইহা প্রবাদ বাক্যস্বরূপ ব্যবহৃত হয়। l অর্থ দুগ্ধপোষ্য শিশু। অর্থাৎ, আজই প্রমাণিত হইবে, কে বীর আর কে ভীরু।
