মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৯৫৮
৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধাভিযানে হত্যার বর্ণনা
৩৯৫৮হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদিগকে একটি সেনাদলে পাঠাইলেন। কিন্তু আমাদের লোকজন (শত্রুর মোকাবিলায় টিকিয়া থাকিতে না পারিয়া) পলায়ন করিল এবং আমরা মদীনায় ফিরিয়া আসিয়া আত্মগোপন করিলাম। আর (মনে মনে) বলিতে লাগিলাম, আমরা ধ্বংস হইয়া গিয়াছি । অতঃপর আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খেদমতে হাযির হইয়া (গ্লানির সুরে) বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা পলায়নকারী। তিনি (সান্ত্বনাস্বরূপ) বলিলেনঃ বরং তোমরা তো প্রতিআক্রমণকারী, আর আমি তোমাদের পশ্চাৎ দলে রহিয়াছি। – তিরমিযী
আর আবু দাউদের রেওয়ায়তও অনুরূপ। (অবশ্য সেখানে হাদীসের শেষ বাক্য হইল,) তিনি বলিলেনঃ না, তোমরা পলায়নকারী নও; বরং তোমরা হইলে পুনঃ আক্রমণকারী। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমরা হুযূর (ﷺ)-এর সন্নিকটে যাইয়া তাঁহার হাতে চুম্বন করিলাম। তখন তিনি বলিলেন, আমিই মুসলমানদের পশ্চাতের দল (কাজেই আমার দিকে ফিরিয়া আসা পলায়ন নহে, বরং নতুন শক্তি অর্জন করিয়া পুনঃ আক্রমণের প্রস্তুতিতে গণ্য)। গ্রন্থকার বলেন, অচিরেই আমরা উমাইয়্যা ইবনে আব্দুল্লাহর বর্ণিত হাদীস, (যেই হাদীসের সূচনা হইল—) ( كان يستفتح এবং আবুদ্দারদার বর্ণিত হাদীস, (যেই হাদীসের সূচনা হইল) — ابغونى فى ضعفائكم ফকীর-গরীবদের ফযীলত অধ্যায়ে ইনশাআল্লাহ্ বর্ণনা করিব।
আর আবু দাউদের রেওয়ায়তও অনুরূপ। (অবশ্য সেখানে হাদীসের শেষ বাক্য হইল,) তিনি বলিলেনঃ না, তোমরা পলায়নকারী নও; বরং তোমরা হইলে পুনঃ আক্রমণকারী। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমরা হুযূর (ﷺ)-এর সন্নিকটে যাইয়া তাঁহার হাতে চুম্বন করিলাম। তখন তিনি বলিলেন, আমিই মুসলমানদের পশ্চাতের দল (কাজেই আমার দিকে ফিরিয়া আসা পলায়ন নহে, বরং নতুন শক্তি অর্জন করিয়া পুনঃ আক্রমণের প্রস্তুতিতে গণ্য)। গ্রন্থকার বলেন, অচিরেই আমরা উমাইয়্যা ইবনে আব্দুল্লাহর বর্ণিত হাদীস, (যেই হাদীসের সূচনা হইল—) ( كان يستفتح এবং আবুদ্দারদার বর্ণিত হাদীস, (যেই হাদীসের সূচনা হইল) — ابغونى فى ضعفائكم ফকীর-গরীবদের ফযীলত অধ্যায়ে ইনশাআল্লাহ্ বর্ণনা করিব।
وَعَن ابنِ عُمر قَالَ: بَعَثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَرِيَّةٍ فَحَاصَ النَّاسُ حَيْصَةً فَأَتَيْنَا الْمَدِينَةَ فَاخْتَفَيْنَا بِهَا وَقُلْنَا: هَلَكْنَا ثُمَّ أَتَيْنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْنَا: يَا رَسُول الله نَحن الفارون. قَالَ: «بَلْ أَنْتُمُ الْعَكَّارُونَ وَأَنَا فِئَتُكُمْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ. وَفِي رِوَايَةِ أَبِي دَاوُدَ نَحْوَهُ وَقَالَ: «لَا بَلْ أَنْتُمُ الْعَكَّارُونَ» قَالَ: فَدَنَوْنَا فَقَبَّلْنَا يَده فَقَالَ: «أَنا فِئَة من الْمُسْلِمِينَ»
وَسَنَذْكُرُ حَدِيثَ أُمَيَّةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ: كَانَ يَسْتَفْتِحُ وَحَدِيثُ أَبِي الدَّرْدَاءِ «ابْغُونِي فِي ضُعَفَائِكُمْ» فِي بَابِ «فَضْلِ الْفُقَرَاءِ» إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى
وَسَنَذْكُرُ حَدِيثَ أُمَيَّةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ: كَانَ يَسْتَفْتِحُ وَحَدِيثُ أَبِي الدَّرْدَاءِ «ابْغُونِي فِي ضُعَفَائِكُمْ» فِي بَابِ «فَضْلِ الْفُقَرَاءِ» إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ ঘটনা ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সাহাবায়ে কেরাম নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে চুম্বন করেছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন হযরত উসামা ইবন শারীক রাযি. বলেন, আমরা উঠে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলাম এবং তাঁর হাতে চুম্বন করলাম।
হযরত জাবির রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে আছে, উমর রাযি. উঠে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলেন এবং তাঁর হাতে চুম্বন করলেন। (ফাতহুল বারী, ১১ খণ্ড, ৫৭ পৃষ্ঠা।)
আব্দুর রহমান ইবন রাযীন রহ. বলেন, সালামা ইবনুল আকওয়া' রাযি. আমাদের সামনে তাঁর বৃহৎ পাঞ্জা বের করলেন। আমরা উঠে গিয়ে তাতে চুম্বন করলাম। (বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ: ৯৭৩)
বিখ্যাত তাবি'ঈ ছাবিত রহ. একবার হযরত আনাস ইবন মালিক রাযি.-কে বললেন, আপনি কি আপনার এ হাত দিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কে চুম্বন করেছেন? তিনি বললেন, হাঁ। তখন ছাবিত তাঁর হাতে চুম্বন করলেন। (বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ: ৯৭৪)
একবার তাবি'ঈ আবূ মালিক আশজা'ঈ রহ. হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আবী আওফা রাযি.-কে বললেন, আপনি যে হাত দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে বায়'আত গ্রহণ করেছিলেন, সেই হাত আমাকে দিন। তিনি হাত বাড়িয়ে দিলে আবূ মালিক তাতে চুম্বন করলেন। (ফাতহুল বারী, ১১ খণ্ড, ৫৭ পৃষ্ঠা।)
হযরত উমর রাযি. সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, যখনই তিনি শামে আসতেন, হযরত আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ রাযি. সামনে অগ্রসর হয়ে তাঁকে সংবর্ধনা জানাতেন এবং তাঁর হাতে চুম্বন করতেন। (বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান: ৮৫৫৯)
ইমাম নববী রহ. বলেন, কোনও ব্যক্তির যুহ্দ, পরহেযগারী, ইলম, দীনী মর্যাদা এবং এ জাতীয় দীনী কোনও বিশেষত্বের কারণে তার হাতে চুমু খাওয়া মাকরূহ নয়: বরং মুস্তাহাব। যদি কারও ধন-দৌলত কিংবা দুনিয়াদারদের কাছে তার প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে চুম্বন করা হয়, তবে তা অবশ্যই কঠিন মাকরূহ কাজ বলে গণ্য হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ভক্তি-ভালোবাসার প্রকাশস্বরূপ পিতা-মাতা এবং মুত্তাকী-পরহেযগার ব্যক্তির হাতে চুম্বন করা জায়েয।
হযরত জাবির রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে আছে, উমর রাযি. উঠে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলেন এবং তাঁর হাতে চুম্বন করলেন। (ফাতহুল বারী, ১১ খণ্ড, ৫৭ পৃষ্ঠা।)
আব্দুর রহমান ইবন রাযীন রহ. বলেন, সালামা ইবনুল আকওয়া' রাযি. আমাদের সামনে তাঁর বৃহৎ পাঞ্জা বের করলেন। আমরা উঠে গিয়ে তাতে চুম্বন করলাম। (বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ: ৯৭৩)
বিখ্যাত তাবি'ঈ ছাবিত রহ. একবার হযরত আনাস ইবন মালিক রাযি.-কে বললেন, আপনি কি আপনার এ হাত দিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কে চুম্বন করেছেন? তিনি বললেন, হাঁ। তখন ছাবিত তাঁর হাতে চুম্বন করলেন। (বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ: ৯৭৪)
একবার তাবি'ঈ আবূ মালিক আশজা'ঈ রহ. হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আবী আওফা রাযি.-কে বললেন, আপনি যে হাত দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে বায়'আত গ্রহণ করেছিলেন, সেই হাত আমাকে দিন। তিনি হাত বাড়িয়ে দিলে আবূ মালিক তাতে চুম্বন করলেন। (ফাতহুল বারী, ১১ খণ্ড, ৫৭ পৃষ্ঠা।)
হযরত উমর রাযি. সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, যখনই তিনি শামে আসতেন, হযরত আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ রাযি. সামনে অগ্রসর হয়ে তাঁকে সংবর্ধনা জানাতেন এবং তাঁর হাতে চুম্বন করতেন। (বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান: ৮৫৫৯)
ইমাম নববী রহ. বলেন, কোনও ব্যক্তির যুহ্দ, পরহেযগারী, ইলম, দীনী মর্যাদা এবং এ জাতীয় দীনী কোনও বিশেষত্বের কারণে তার হাতে চুমু খাওয়া মাকরূহ নয়: বরং মুস্তাহাব। যদি কারও ধন-দৌলত কিংবা দুনিয়াদারদের কাছে তার প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে চুম্বন করা হয়, তবে তা অবশ্যই কঠিন মাকরূহ কাজ বলে গণ্য হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ভক্তি-ভালোবাসার প্রকাশস্বরূপ পিতা-মাতা এবং মুত্তাকী-পরহেযগার ব্যক্তির হাতে চুম্বন করা জায়েয।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
