মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১৮- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৬৩০
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - সাবধানতা অবলম্বনে শাস্তি প্রদান
৩৬৩০। হযরত আবু বুরদা ইবনে নিয়ার (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন : আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তি ব্যতীত অন্য কোন অপরাধে দশ চাবুকের বেশী প্রয়োগ করা জায়েয নাই। —মোত্তাঃ
كتاب الحدود
بَابُ التَّعْزِيْر: الْفَصْل الأول
عَن أبي بردة بن ينار عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يُجْلَدُ فَوْقَ عَشْرِ جَلَدَاتٍ إِلَّا فِي حد من حُدُود الله»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

التعزير শব্দের আভিধানিক অর্থ হইল, তিরস্কার করা ও শাস্তির মাধ্যমে সতর্ক করা। তবে শরীঅতের পরিভাষায় শরীঅতের নির্ধারিত ‘হদ্' ব্যতীত সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে যে কোন ধরনের সাজা দেওয়া। তবে 'তা’যীরের' সাজা কি পরিমাণ হইবে ইমামগণের মধ্যে এই ব্যাপারে মতভেদ রহিয়াছে। ফেকাহর প্রসিদ্ধ কিতাব হেদায়ার মধ্যে উল্লেখ আছে— التعزير اكثره تسعة وثلثون سوطا অর্থঃ তা'যীর-এর পরিমাণ হইল, ঊর্ধ্বে ঊনচল্লিশ দোররা মারা, আর কমপক্ষে তিন দোররা মারা। ইহাই ইমাম আবু হানীফার অভিমত। ইমাম আবু ইউসুফ বলেন, পঁচাত্তর চাবুক মারা। ইমাম শাফেয়ী বলেন, ঊনিশ চাবুক মারা। আর ইমাম মালেক বলেন, ইহার ঊর্ধ্ব সংখ্যার কোন সীমা নির্ধারিত নাই। বিচারক যাহাই ভাল মনে করেন তাহা দিতে পারেন। সুতরাং তিনি যদি শাস্তির সাথে কয়েদ করাও উচিত মনে করেন, তাহাও করিতে পারেন। তবে ইহা সকলের কাছে স্বীকৃত যে, তা'যীরের শাস্তি শরয়ী হদের সমপরিমাণ হইতে পারিবে না; বরং উহা হইতে কম হইতে হইবে।

ইমাম লাইস, আহমদ ও ইসহাক-এর আমল এই হাদীস মতই; কিন্তু অন্যান্য তিন ইমাম বলেন, দশের অধিক প্রয়োগ করা জায়েয আছে। ইমাম নববী বলিয়াছেন, এই হাদীসটি পরবর্তীকালে মসৃখ (রহিত) হইয়া গিয়াছে। সাহাবায়ে কেরামদের আমল দ্বারা ইহার প্রমাণ পাওয়া যায়, যদি উহার হুকুম বহাল থাকিত, তাহা হইলে হযরত ওমর ও হযরত আলী (রাঃ)-এর খেলাফত যুগে তাঁহারা যে ইহার ব্যতিক্রম করিয়াছিলেন, কেহ না কেহ ইহার প্রতিবাদ করিতেন। অথচ কোথাও কোন প্রতিবাদ হইয়াছে বলিয়া প্রমাণ পাওয়া যায় না।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান