মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১৭- কিসাসের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৪৬১
প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৪৬১। হযরত আবু জুহায়ফা (রাঃ) বলেন, আমি আলী (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করিলাম, কোরআন ব্যতীত অন্য কিছু (ওহীলব্ধ) লিখিত জিনিস আপনাদের কাছে আছে কি, যাহা কোরআনে নাই? উত্তরে তিনি বলিলেন, সেই সত্তার কসম যিনি খাদ্য-শস্য অংকুরিত করিয়াছেন এবং মানব জাতিকে সৃষ্টি করিয়াছেন, কোরআনে যাহাকিছু আছে ইহা ছাড়া অন্য কিছু আমাদের কাছে নাই। অবশ্য ঐ জ্ঞান রহিয়াছে, যাহা কিতাব বুঝিবার জন্য মানুষকে আল্লাহ্ পাক দান করিয়া থাকেন এবং এই "সহীফা" (লিখিত লিপি)-এর মধ্যে যাহাকিছু আছে তাহাই রহিয়াছে। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, এই লিপিতে কি লেখা আছে? তিনি (আলী [রাঃ]) জবাবে বলিলেন, দিয়তের বিধান, বন্দীদের মুক্তিপণ এবং এই নীতি যে, কোন মুসলমানকে কেসাসস্বরূপ কোন কাফেরের বদলে হত্যা করা যাইবে না। -বুখারী

"কোন ব্যক্তিকে যুলম ও নির্যাতনমূলক হত্যা করা যাইবে না।” এই প্রসঙ্গে ইবনে মাসউদ (রাঃ) হইতে একটি হাদীস “ইলম” পর্বে বর্ণিত হইয়াছে।
وَعَن أبي جُحيفةَ قَالَ: سَأَلْتُ عَلِيًّا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ هَلْ عِنْدَكُمْ شَيْءٌ لَيْسَ فِي الْقُرْآنِ؟ فَقَالَ: وَالَّذِي فَلَقَ الْحَبَّةَ وَبَرَأَ النَّسَمَةَ مَا عِنْدَنَا إِلَّا مَا فِي الْقُرْآنِ إِلَّا فَهْمًا يُعْطَى رَجُلٌ فِي كِتَابِهِ وَمَا فِي الصَّحِيفَةِ قُلْتُ: وَمَا فِي الصَّحِيفَةِ؟ قَالَ: الْعَقْلُ وَفِكَاكُ الْأَسِيرِ وَأَنْ لَا يُقْتَلَ مُسْلِمٌ بِكَافِرٍ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

وَذَكَرَ حَدِيثَ ابْنِ مَسْعُودٍ: «لَا تُقْتَلُ نَفْسٌ ظُلْمًا» فِي «كتاب الْعلم»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

উল্লিখিত হাদীস হইতে ইমাম শাফেয়ী (রঃ) বলেন, কোন কাফেরের বদলে কেসাসস্বরূপ কোন মুসলমানকে হত্যা করা যাইবে না। কিন্তু ইমাম আবু হানীফা (রঃ) বলেন, "কাফেরে হরবীর” বদলে কোন মুসলিমকে হত্যা করা যাইবে না। কিন্তু যিম্মী অথবা নিরাপত্তা প্রদত্ত কাফেরের বদলে মুসলমানকে কেসাসস্বরূপ হত্যা করা যাইবে। কেননা, অন্য হাদীসে যিম্মী কাফেরের বদলে মুসলমান হইতে কেসাস গ্রহণের নির্দেশ ও নযীর রহিয়াছে। এই হাদীসে বিশেষ একটি ঘটনার প্রতি ইংগিত রহিয়াছে। তাহা হইল এইঃ কিছু লোক এই প্রচারে লিপ্ত ছিল এবং অনেকের ধারণাও ছিল যে হুযূর (ﷺ) ওফাতের সময় খেলাফত সম্পর্কে আহলে বায়তকে বিশেষ অসিয়ত করিয়া গিয়াছেন এবং কোরআনের কিছু অংশ গোপনে হযরত আলীকে অর্পণ করিয়াছেন। এই অমূলক ধারণার উপরেই শিয়া সম্প্রদায়ের ভিত্তি। প্রশ্নকারী ইহাই জানিতে চাহিয়াছিলেন যে, এই জাতীয় কোন কিছু হুযূর আলাদাভাবে আপনাদিগকে অর্পণ করিয়া দিয়া গিয়াছেন কিনা, যাহা অন্যান্য মুসলমানেরা অবহিত নহে। উত্তরে হযরত আলী (রাঃ) এই বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করিয়াছেন।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৩৪৬১ | মুসলিম বাংলা