মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৬- শপথ ও মান্নতের অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৪১১
প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৪১১। হযরত আবু মুসা আশআরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ আল্লাহর কসম! আমি যখন (কোন ব্যাপারে) কসম করিব এবং পরে উহার বিপরীত জিনিসকে উত্তম বলিয়া মনে করিব, তখন ইনশাআল্লাহ আমি আমার কসমের কাফ্ফারা আদায় করিয়া দিব এবং যেই কাজটি উত্তম তাহাই করিব। -মোত্তাঃ
وَعَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنِّي وَاللَّهِ إِنْ شَاءَ اللَّهُ لَا أَحْلِفُ عَلَى يَمِينٍ فَأَرَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا إِلَّا كَفَّرْتُ عَنْ يَمِينِي وَأَتَيْتُ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হানেস হওয়ার অর্থাৎ কসম ভাঙ্গার পূর্বে কাফ্ফারা আদায় করিলে এবং পরে কসম ভাঙ্গিলে উক্ত আদায়কৃত কাফ্ফারা সেই কসমের জন্য প্রয়োজ্য হইবে কিনা এই ব্যাপারে ইমামদের মধ্যে মতভেদ রহিয়াছে। ইমাম শাফেয়ী, মালেক ও আহমদ বলেন, এইরূপ করা জায়েয আছে। বর্ণিত হাদীসসহ আরও কতিপয় হাদীস তাঁহাদের সপক্ষে প্রমাণ হিসাবে পেশ করা হয়। কিন্তু ইমাম আবু হানীফা (রঃ) বলেন, কসম ভাঙ্গার আগে কাফ্ফারা আদায় করা জায়েয নাই। কেননা, কসম ভাঙ্গার কারণে উহার কাফ্ফারা আদায় করা ওয়াজিব, কসম ভাঙ্গার পূর্বে কাফ্ফারা আদায় করার প্রশ্নই উঠে না। অন্যথায় বলিতে হইবে যে, 'কসম করাটাই' হইল গুনাহ্। অথচ কসম করা গুনাহ্ নহে, যাহার উপর কাফ্ফারা বর্তিবে। কাজেই প্রথমে কসম ভাঙ্গিবে পরে কাফ্ফারা আদায় করিবে। বর্ণিত হাদীসের জওয়াব এই যে, এমনও অনেক হাদীস আছে যেইখানে বলা হইয়াছে ; এম এ উত্তম কাজটি করিয়া ফেল এবং উহার পর কসমের কাফ্ফারা আদায় কর। যদি কসম করিলেই কাফ্ফারা আদায় করা ওয়াজিব হইত, তাহা হইলে নবী (ﷺ) বলিতেন, যে ব্যক্তি শপথ করিবে, সে যেন কাফ্ফারা আদায় করে, অথচ তিনি সেইরূপ বলেন নাই। কাজেই ইমাম আযম (রঃ) যাহা বলিয়াছেন, উহাই যুক্তিসঙ্গত।
