মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৪- বিবাহ-শাদী সম্পর্কিত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩২৯৫
১২. প্রথম অনুচ্ছেদ - তিন তালাকপ্রাপ্তা রমণীর বর্ণনা
৩২৯৫। বিবি আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট রেফাআ কুরাযীর স্ত্রী আসিয়া বলিল, “হুযূর, আমি রেফাআর নিকট ছিলাম। সে আমাকে তালাক দেয় এবং শেষ করিয়া দেয়। ইহার পর আমি আব্দুর রহমান ইবনে যুবায়রকে স্বামীরূপে গ্রহণ করি, কিন্তু তাহার নিকট কাপড়ের গোছার ন্যায় (নরম পুরুষাঙ্গ) ব্যতীত কিছুই নাই।” হুযূর জিজ্ঞাসা করিলেন, “তবে কি তুমি রেফাআর নিকট ফিরিয়া যাইতে চাহ ?” সে বলিল, “হ্যাঁ।” তিনি বলিলেন, না, পার না, যাবৎ না তুমি আব্দুর রহমানের মধুর স্বাদ গ্রহণ কর আর সে তোমার মধুর স্বাদ গ্রহণ করে (অতঃপর সে তোমাকে ছাড়িয়া দেয় বা মরিয়া যায়)। — মোত্তাঃ
بَابُ الْمُطَلَّقَةِ ثَلَاثًا: الْفَصْل الأول
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: جَاءَتِ امْرَأَةُ رِفَاعَةَ الْقُرَظِيِّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ: إِنِّي كُنْتُ عِنْدَ رِفَاعَةَ فَطَلَّقَنِي فَبَتَّ طَلَاقِي فَتَزَوَّجْتُ بَعْدَهُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الزُّبَيْرِ وَمَا مَعَهُ إِلَّا مِثْلُ هُدْبَةِ الثَّوْبِ فَقَالَ: «أَتُرِيدِينَ أَنْ تَرْجِعِي إِلَى رِفَاعَةَ؟» قَالَتْ: نَعَمْ قَالَ: «لَا حَتَّى تَذُوقِي عُسَيْلَتَهُ وَيَذُوقَ عُسَيْلَتَكِ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
তিন তালাক, ইলা ও যেহার
‘ইলা’—অর্থ, আল্লাহর নামে শপথ করা। শরীঅতে ইহার অর্থ, চারি মাস বা ইহার বেশী কাল নিজের স্ত্রীর সাথে সহবাস করিবে না বলিয়া শপথ করা। এই শপথ পূর্ণ করার জন্য তাহার চারি মাস সহবাস হইতে অপেক্ষা করিতে হইবে। কোরআনে রহিয়াছে—
لِّلَّذِينَ يُؤْلُونَ مِن نِّسَائِهِمْ تَرَبُّصُ أَرْبَعَةِ أَشْهُرٍ » ـ (البقرة ٢٢٦)
“যাহারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে ইলা করে, তাহাদের পক্ষে চারি মাস অপেক্ষা করিতে হইবে।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২২৬)
চারি মাস পূর্ণ হইলে স্ত্রী এক তালাকে বায়েন হইয়া যাইবে। আর চারি মাসের মধ্যে সহবাস করিলে শপথ ভঙ্গের কাফফারা দিতে হইবে — 'ইলা' আর থাকিবে না। চারি মাসের কমের জন্য শপথ করিলে ‘ইলা’ হইবে না। তবে মুদ্দতের মধ্যে সহবাস করিলে শপথ ভঙ্গের কাফফারা দিতে হইবে।
‘যেহার’—শরীঅতে ইহার অর্থ, সর্বদার জন্য বিবাহ হারাম এমন কোন মাহরাম নারীর সাথে বা তাহার পিঠের সাথে নিজের স্ত্রীকে তুলনা করা। যথা— তুমি আমার মায়ের মত বা ঝিয়ের মত' বলা। ইহাতে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা বা তাহাকে স্পর্শ করা ইত্যাদি হারাম হইয়া যায়, যাবৎ না সে ইহার কাফফারা আদায় করে। ইহার কাফফারা হইল একটি গোলাম আযাদ করা অথবা দুই মাস একাধারে রোযা রাখা অথবা ৬০ জন মিসকীনকে দুই বেলা খানা খাওয়ানো । কোরআনে রহিয়াছে—
الَّذِينَ يُظَاهِرُونَ مِنكُم مِّن نِّسَائِهِم مَّا هُنَّ أُمَّهَاتِهِمْ ۖ إِنْ أُمَّهَاتُهُمْ إِلَّا اللَّائِي وَلَدْنَهُمْ ۚ وَإِنَّهُمْ لَيَقُولُونَ مُنكَرًا مِّنَ الْقَوْلِ وَزُورًا ۚ وَإِنَّ اللَّهَ لَعَفُوٌّ غَفُورٌ وَالَّذِينَ يُظَاهِرُونَ مِن نِّسَائِهِمْ ثُمَّ يَعُودُونَ لِمَا قَالُوا فَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مِّن قَبْلِ أَن يَتَمَاسَّا ۚ ذَٰلِكُمْ تُوعَظُونَ بِهِ ۚ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ مِن قَبْلِ أَن يَتَمَاسَّا ۖ فَمَن لَّمْ يَسْتَطِعْ فَإِطْعَامُ سِتِّينَ مِسْكِينًا ۚ ذَٰلِكَ لِتُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ۚ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ ۗ وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ أَلِيمٌ
“তোমাদের মধ্যে যাহারা তাহাদের বিবিদের সাথে ‘যেহার' করে (অর্থাৎ, তাহাদিগকে মায়ের সাথে তুলনা করে) অথচ তাহারা তাহাদের মা নহে। তাহাদের মা হইল তাহারাই যাহারা তাহাদিগকে প্রসব করিয়াছে। ইহাতে তাহারা নিশ্চয়ই অন্যায় ও মিথ্যা কথা বলে। নিশ্চয় আল্লাহ্ হইতেছেন ক্ষমাশীল ও ক্ষমাবান। যাহারা তাহাদের বিবিদের সাথে যেহার করে, অতঃপর যাহা (হইতে বিরত থাকিতে) বলিয়াছে তাহা করিতে ইচ্ছা করে, তাহাদের কাফফারা হইল, সহবাসের পূর্বে একটি গোলাম আযাদ করা। তোমাদেরকে ইহারই উপদেশ দেওয়া হইতেছে। তোমরা যাহা কর আল্লাহ্ তাহা জানেন। যে গোলাম আযাদ করিতে অসমর্থ সে সহবাসের পূর্বে একাধারে দুই মাস রোযা রাখিবে। যে তাহাও পারে না সে ৬০ জন মিসকীনকে খানা খাওয়াইবে।” (সূরা মুজাদালা, আয়াত ১-৪ )
‘একে অন্যের মধু পান করা—অর্থাৎ, সহবাস করা। সহবাস শর্ত, বীর্যপাত শর্ত নহে। সহবাসের পূর্বে দ্বিতীয় স্বামী ছাড়িয়া দিলে বা মরিয়া গেলে পূর্ব স্বামীর পক্ষে তাহাকে বিবাহ করা হালাল হইবে না। মোটকথা, তিন তালাকের হুকুম হইল—দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করা এবং উভয়ের সহবাস পাওয়া যাওয়া। ইহার পূর্বে সে পুনরায় প্রথম স্বামীকে গ্রহণ করিতে পারে না।
‘ইলা’—অর্থ, আল্লাহর নামে শপথ করা। শরীঅতে ইহার অর্থ, চারি মাস বা ইহার বেশী কাল নিজের স্ত্রীর সাথে সহবাস করিবে না বলিয়া শপথ করা। এই শপথ পূর্ণ করার জন্য তাহার চারি মাস সহবাস হইতে অপেক্ষা করিতে হইবে। কোরআনে রহিয়াছে—
لِّلَّذِينَ يُؤْلُونَ مِن نِّسَائِهِمْ تَرَبُّصُ أَرْبَعَةِ أَشْهُرٍ » ـ (البقرة ٢٢٦)
“যাহারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে ইলা করে, তাহাদের পক্ষে চারি মাস অপেক্ষা করিতে হইবে।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২২৬)
চারি মাস পূর্ণ হইলে স্ত্রী এক তালাকে বায়েন হইয়া যাইবে। আর চারি মাসের মধ্যে সহবাস করিলে শপথ ভঙ্গের কাফফারা দিতে হইবে — 'ইলা' আর থাকিবে না। চারি মাসের কমের জন্য শপথ করিলে ‘ইলা’ হইবে না। তবে মুদ্দতের মধ্যে সহবাস করিলে শপথ ভঙ্গের কাফফারা দিতে হইবে।
‘যেহার’—শরীঅতে ইহার অর্থ, সর্বদার জন্য বিবাহ হারাম এমন কোন মাহরাম নারীর সাথে বা তাহার পিঠের সাথে নিজের স্ত্রীকে তুলনা করা। যথা— তুমি আমার মায়ের মত বা ঝিয়ের মত' বলা। ইহাতে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা বা তাহাকে স্পর্শ করা ইত্যাদি হারাম হইয়া যায়, যাবৎ না সে ইহার কাফফারা আদায় করে। ইহার কাফফারা হইল একটি গোলাম আযাদ করা অথবা দুই মাস একাধারে রোযা রাখা অথবা ৬০ জন মিসকীনকে দুই বেলা খানা খাওয়ানো । কোরআনে রহিয়াছে—
الَّذِينَ يُظَاهِرُونَ مِنكُم مِّن نِّسَائِهِم مَّا هُنَّ أُمَّهَاتِهِمْ ۖ إِنْ أُمَّهَاتُهُمْ إِلَّا اللَّائِي وَلَدْنَهُمْ ۚ وَإِنَّهُمْ لَيَقُولُونَ مُنكَرًا مِّنَ الْقَوْلِ وَزُورًا ۚ وَإِنَّ اللَّهَ لَعَفُوٌّ غَفُورٌ وَالَّذِينَ يُظَاهِرُونَ مِن نِّسَائِهِمْ ثُمَّ يَعُودُونَ لِمَا قَالُوا فَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مِّن قَبْلِ أَن يَتَمَاسَّا ۚ ذَٰلِكُمْ تُوعَظُونَ بِهِ ۚ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ مِن قَبْلِ أَن يَتَمَاسَّا ۖ فَمَن لَّمْ يَسْتَطِعْ فَإِطْعَامُ سِتِّينَ مِسْكِينًا ۚ ذَٰلِكَ لِتُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ۚ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ ۗ وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ أَلِيمٌ
“তোমাদের মধ্যে যাহারা তাহাদের বিবিদের সাথে ‘যেহার' করে (অর্থাৎ, তাহাদিগকে মায়ের সাথে তুলনা করে) অথচ তাহারা তাহাদের মা নহে। তাহাদের মা হইল তাহারাই যাহারা তাহাদিগকে প্রসব করিয়াছে। ইহাতে তাহারা নিশ্চয়ই অন্যায় ও মিথ্যা কথা বলে। নিশ্চয় আল্লাহ্ হইতেছেন ক্ষমাশীল ও ক্ষমাবান। যাহারা তাহাদের বিবিদের সাথে যেহার করে, অতঃপর যাহা (হইতে বিরত থাকিতে) বলিয়াছে তাহা করিতে ইচ্ছা করে, তাহাদের কাফফারা হইল, সহবাসের পূর্বে একটি গোলাম আযাদ করা। তোমাদেরকে ইহারই উপদেশ দেওয়া হইতেছে। তোমরা যাহা কর আল্লাহ্ তাহা জানেন। যে গোলাম আযাদ করিতে অসমর্থ সে সহবাসের পূর্বে একাধারে দুই মাস রোযা রাখিবে। যে তাহাও পারে না সে ৬০ জন মিসকীনকে খানা খাওয়াইবে।” (সূরা মুজাদালা, আয়াত ১-৪ )
‘একে অন্যের মধু পান করা—অর্থাৎ, সহবাস করা। সহবাস শর্ত, বীর্যপাত শর্ত নহে। সহবাসের পূর্বে দ্বিতীয় স্বামী ছাড়িয়া দিলে বা মরিয়া গেলে পূর্ব স্বামীর পক্ষে তাহাকে বিবাহ করা হালাল হইবে না। মোটকথা, তিন তালাকের হুকুম হইল—দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করা এবং উভয়ের সহবাস পাওয়া যাওয়া। ইহার পূর্বে সে পুনরায় প্রথম স্বামীকে গ্রহণ করিতে পারে না।
