মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৪- বিবাহ-শাদী সম্পর্কিত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩২৭৪
১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৭৪। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, সাবেত ইবনে কায়সের স্ত্রী নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসিয়া বলিল, ইয়া রাসুলাল্লাহ্। সাবেত ইবনে কায়সের ব্যবহার ও দ্বীনদারী সম্পর্কে আমার কোন অভিযোগ নাই, কিন্তু আমি ইসলামে থাকিয়া (স্বামীর) অবাধ্যতাকে পছন্দ করি না। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, তবে কি তুমি তাহার বাগান তাহাকে ফেরত দিবে, (যাহা সে তোমাকে মহররূপে দিয়াছে)? সে বলিল, হা। তখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাবেতকে বলিলেন, তুমি তোমার বাগান গ্রহণ কর এবং তাহাকে এক তালাক দিয়া দাও। – বোখারী
بَابُ الْخُلْعِ وَالطَّلَاقِ: الْفَصْل الأول
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ امْرَأَةَ ثَابِتِ بْنِ قِيسٍ أَتَتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ثَابِتُ بْنُ قَيْسٍ مَا أَعْتِبُ عَلَيْهِ فِي خُلُقٍ وَلَا دِينٍ وَلَكِنِّي أَكْرَهُ الْكُفْرَ فِي الْإِسْلَامِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَتَرُدِّينَ عَلَيْهِ حَدِيقَتَهُ؟» قَالَتْ: نَعَمْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اقْبَلِ الْحَدِيقَةَ وَطَلِّقْهَا تَطْلِيقَةً» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
খোলা ও তালাক
'খোলা'—অর্থ, খসাইয়া লওয়া, টানিয়া লওয়া। শরীঅতে ইহার অর্থ, স্বামীকে মাল দিয়া তাহার বন্ধন হইতে ‘খোলা' শব্দ দ্বারা নিজেকে খসাইয়া বা মুক্ত করিয়া লওয়া। খোলা করা শরীআতে জায়েয। কোরআনে রহিয়াছে—
وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ أَن تَأْخُذُوا مِمَّا آتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلَّا أَن يَخَافَا أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَعْتَدُوهَا
“তোমরা স্ত্রীদিগকে (মহররূপে) যাহা দিয়াছ তাহার কিছুই লইয়া লওয়া তোমাদের পক্ষে হালাল নহে; কিন্তু যখন তাহারা (স্বামী-স্ত্রী) আশংকা করে যে, তাহারা আল্লাহর নির্ধারিত সীমা ঠিক রাখিতে পারিবে না, তবে তাহাদের প্রতি গোনাহ্ বর্তাইবে না—যদি স্ত্রী স্বামীকে মাল (অর্থাৎ, মহর ছাড়িয়া) দিয়া নিজেকে ছাড়াইয়া লয়। ইহা আল্লাহর সীমা। সুতরাং ইহা লঙ্ঘন করিও না। (সূরা বাকারা, আয়াত ২২৯) খোলাতে মহর ছাড়া অতিরিক্ত মাল লওয়া গোনাহর কাজ ও মাকরূহ।
ইমাম আবু হানীফা ও ইমাম মালেকের মতে 'খোলা' আসলে তালাক। সুতরাং তিনবার খোলা করার পর সে আবার স্বামীর বিবাহবন্ধনে যাইতে পারে না, যাবৎ না সে অন্য স্বামী গ্রহণ করে আর সে স্বামী তাহাকে তালাক দেয় বা মরিয়া যায়। পক্ষান্তরে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের মতে ‘খোলা' হইল ‘ফসখ', তালাক নহে। সুতরাং যতবারই খোলা করা হউক না কেন অন্য স্বামী গ্রহণ করা ব্যতীতই সে প্রথম স্বামীকে গ্রহণ করিতে পারে।
‘তালাক'—অর্থ, ছাড়িয়া দেওয়া; বন্ধন মুক্ত করা। শরীঅতে ইহার অর্থ, স্ত্রীকে বিবাহবন্ধন হইতে মুক্ত করা। তালাকের অধিকার একমাত্র পুরুষের। নারীর অধিকার শুধু খোলার। সম্ভবত নারীর মধ্যে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার অভাবের কারণেই তাহাকে তালাকের অধিকার দেওয়া হয় নাই। তাহাকে তালাকের অধিকার দেওয়া হইলে তালাকের সংখ্যা বাড়িয়া যাইত -যেমন পাশ্চাত্য দেশের খৃষ্টান সমাজে দেখা যায়।
‘তালাক প্রথমত দুই প্রকারঃ সুন্নী—যাহা সুন্নতের অনুযায়ী এবং বেদয়ী — যাহা সুন্নতের খেলাফ। সুন্নী তালাক আবার দুই রকমেরঃ 'আহসান' ও 'হাসান'। (১) যে তোহরে সহবাস করা হয় নাই এমন তোহরে এক তালাক দেওয়া, অতঃপর ইদ্দত অর্থাৎ, তিন ঋতু গোজারিতে দেওয়া, ইহাকে 'তালাকে—আহসান' বলে। ইদ্দত গোজারিয়া গেলে সে আপনা আপনিই 'বায়েন' হইয়া যাইবে। (২) সহবাস করা হয় নাই এমন তিন তোহরে তিন তালাক দেওয়াকে 'তালাকে হাসান' বলে। আর (৩) এক তোহরে তিন তালাক অথবা একসাথে তিন তালাক অথবা ঋতুকালে তালাক দেওয়াকে 'তালাকে বেদয়ী' বলে। 'তোহর’—অর্থ, পাক অবস্থা, ঋতুকাল নহে এমন কাল। তালাক আবার তিন রকমেরঃ রাজয়ী; বায়েন ও মুগাল্লাযা। (ক) যে তালাক দেওয়ার পর বিনা বিবাহে পুনঃ রাখা যায় তাহাকে তালাকে 'রাজয়ী' বলে। তালাকের জন্য নির্ধারিত সুষ্ঠু শব্দ অথবা রাজয়ী শব্দ দ্বারা এইরূপ তালাক হয়। যেমন, 'আমি তোমাকে তালাক দিলাম বা রাজয়ী তালাক দিলাম।' এইরূপ তালাকের পর ইদ্দত থাকিতে অর্থাৎ, তিন ঋতু না গোজারিতে তাহাকে ফেরত রাখা যায়। ইহাকে 'রাজআত' বলে। ইদ্দতের মধ্যে তাহার সহিত সহবাস করিলে বা তাহাকে উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করিলে অথবা 'রাজআত' করিলাম অর্থাৎ, তাহাকে বা তোমাকে ফেরত রাখিলাম বলিলেই 'রাজআত' হইয়া যায়। (খ) যে তালাকের পর বিনা বিবাহে রাখা যায় না, তাহাকে তালাকে বায়েন বলে। 'বায়েন' শব্দ বা তালাকের ইঙ্গিতবহ শব্দ (যেমন— তোমার হাতের ভাত আমার জন্য হারাম) দ্বারা এইরূপ তালাক হয়। এবং (গ) যে তালাকের পর অন্য স্বামী গ্রহণ ছাড়া তাহাকে পুনঃ বিবাহ করা যায় না, তাহাকে 'তালাকে মুগাল্লাযা' বলে। তিন তালাকের দ্বারাই এইরূপ তালাক হয়—চাই উহা একসাথে দেওয়া হউক চাই ভিন্ন ভিন্নভাবে। তিন তালাকের পর অন্য স্বামী গ্রহণ ছাড়া তাহাকে পুনঃ বিবাহ করা যায় না। কোরআনে বলা হইয়াছে—
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ
“অতঃপর (অর্থাৎ, দুই তালাকের পর) যদি তাহাকে তালাক দেয়, তবে সে নারী তাহার পক্ষে হালাল হইবে না যাবত না সে অন্য স্বামী গ্রহণ করে।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৩০ )
নারী ছাড়া যেমন জীবন থাকে অতৃপ্ত ও অশান্ত, তেমন নারী মুয়াফেক না হইলেও জীবন হয় তিক্ত ও বিষাক্ত। এ অশান্তি হইতে নিষ্কৃতির জন্যই শরীঅত তালাককে বৈধ করিয়াছে, কিন্তু শরীআত তালাককে কখনও পছন্দ করে না। শরীআতের দৃষ্টিতে একেবারে অপরিহার্য না হইলে কখনও নারীকে তালাক দেওয়া উচিত নহে। নবী করীম (ﷺ) বলিয়াছেন, “সমস্ত বৈধ বিষয়সমূহের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ঘৃণিত বৈধ বিষয় হইল তালাক ।”
ঋতুকালে স্বাভাবিক ঘৃণার কারণে যাহাতে তালাক দিয়া না বসে, তজ্জন্যই তোহরকালে তালাক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হইয়াছে এবং তিন তোহরে তিন তালাক দিতে বলা হইয়াছে, যাহাতে কেহ ঝুঁকিতে পড়িয়া মুগাল্লাযা তালাক দিয়া না বসে এবং ভাবনা-চিন্তার সুযোগ হারায়।
'ইসলামে থাকিয়া স্বামীর অবাধ্যতাকে পছন্দ করি না'—অথচ তাহাকে আমি স্বভাবত ভালবাসি না বিধায় তাহার অবাধ্যতা করার সম্ভাবনাই অধিক। তাই আমি তাহার সহিত খোলা করিতে চাই। ‘এক তালাক দিয়া দাও' এবং 'রাজআত' করিও না। তাহাতে সে ইদ্দত পালনের পর আপনা আপনিই বায়েন হইয়া যাইবে।
'খোলা'—অর্থ, খসাইয়া লওয়া, টানিয়া লওয়া। শরীঅতে ইহার অর্থ, স্বামীকে মাল দিয়া তাহার বন্ধন হইতে ‘খোলা' শব্দ দ্বারা নিজেকে খসাইয়া বা মুক্ত করিয়া লওয়া। খোলা করা শরীআতে জায়েয। কোরআনে রহিয়াছে—
وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ أَن تَأْخُذُوا مِمَّا آتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلَّا أَن يَخَافَا أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَعْتَدُوهَا
“তোমরা স্ত্রীদিগকে (মহররূপে) যাহা দিয়াছ তাহার কিছুই লইয়া লওয়া তোমাদের পক্ষে হালাল নহে; কিন্তু যখন তাহারা (স্বামী-স্ত্রী) আশংকা করে যে, তাহারা আল্লাহর নির্ধারিত সীমা ঠিক রাখিতে পারিবে না, তবে তাহাদের প্রতি গোনাহ্ বর্তাইবে না—যদি স্ত্রী স্বামীকে মাল (অর্থাৎ, মহর ছাড়িয়া) দিয়া নিজেকে ছাড়াইয়া লয়। ইহা আল্লাহর সীমা। সুতরাং ইহা লঙ্ঘন করিও না। (সূরা বাকারা, আয়াত ২২৯) খোলাতে মহর ছাড়া অতিরিক্ত মাল লওয়া গোনাহর কাজ ও মাকরূহ।
ইমাম আবু হানীফা ও ইমাম মালেকের মতে 'খোলা' আসলে তালাক। সুতরাং তিনবার খোলা করার পর সে আবার স্বামীর বিবাহবন্ধনে যাইতে পারে না, যাবৎ না সে অন্য স্বামী গ্রহণ করে আর সে স্বামী তাহাকে তালাক দেয় বা মরিয়া যায়। পক্ষান্তরে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের মতে ‘খোলা' হইল ‘ফসখ', তালাক নহে। সুতরাং যতবারই খোলা করা হউক না কেন অন্য স্বামী গ্রহণ করা ব্যতীতই সে প্রথম স্বামীকে গ্রহণ করিতে পারে।
‘তালাক'—অর্থ, ছাড়িয়া দেওয়া; বন্ধন মুক্ত করা। শরীঅতে ইহার অর্থ, স্ত্রীকে বিবাহবন্ধন হইতে মুক্ত করা। তালাকের অধিকার একমাত্র পুরুষের। নারীর অধিকার শুধু খোলার। সম্ভবত নারীর মধ্যে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার অভাবের কারণেই তাহাকে তালাকের অধিকার দেওয়া হয় নাই। তাহাকে তালাকের অধিকার দেওয়া হইলে তালাকের সংখ্যা বাড়িয়া যাইত -যেমন পাশ্চাত্য দেশের খৃষ্টান সমাজে দেখা যায়।
‘তালাক প্রথমত দুই প্রকারঃ সুন্নী—যাহা সুন্নতের অনুযায়ী এবং বেদয়ী — যাহা সুন্নতের খেলাফ। সুন্নী তালাক আবার দুই রকমেরঃ 'আহসান' ও 'হাসান'। (১) যে তোহরে সহবাস করা হয় নাই এমন তোহরে এক তালাক দেওয়া, অতঃপর ইদ্দত অর্থাৎ, তিন ঋতু গোজারিতে দেওয়া, ইহাকে 'তালাকে—আহসান' বলে। ইদ্দত গোজারিয়া গেলে সে আপনা আপনিই 'বায়েন' হইয়া যাইবে। (২) সহবাস করা হয় নাই এমন তিন তোহরে তিন তালাক দেওয়াকে 'তালাকে হাসান' বলে। আর (৩) এক তোহরে তিন তালাক অথবা একসাথে তিন তালাক অথবা ঋতুকালে তালাক দেওয়াকে 'তালাকে বেদয়ী' বলে। 'তোহর’—অর্থ, পাক অবস্থা, ঋতুকাল নহে এমন কাল। তালাক আবার তিন রকমেরঃ রাজয়ী; বায়েন ও মুগাল্লাযা। (ক) যে তালাক দেওয়ার পর বিনা বিবাহে পুনঃ রাখা যায় তাহাকে তালাকে 'রাজয়ী' বলে। তালাকের জন্য নির্ধারিত সুষ্ঠু শব্দ অথবা রাজয়ী শব্দ দ্বারা এইরূপ তালাক হয়। যেমন, 'আমি তোমাকে তালাক দিলাম বা রাজয়ী তালাক দিলাম।' এইরূপ তালাকের পর ইদ্দত থাকিতে অর্থাৎ, তিন ঋতু না গোজারিতে তাহাকে ফেরত রাখা যায়। ইহাকে 'রাজআত' বলে। ইদ্দতের মধ্যে তাহার সহিত সহবাস করিলে বা তাহাকে উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করিলে অথবা 'রাজআত' করিলাম অর্থাৎ, তাহাকে বা তোমাকে ফেরত রাখিলাম বলিলেই 'রাজআত' হইয়া যায়। (খ) যে তালাকের পর বিনা বিবাহে রাখা যায় না, তাহাকে তালাকে বায়েন বলে। 'বায়েন' শব্দ বা তালাকের ইঙ্গিতবহ শব্দ (যেমন— তোমার হাতের ভাত আমার জন্য হারাম) দ্বারা এইরূপ তালাক হয়। এবং (গ) যে তালাকের পর অন্য স্বামী গ্রহণ ছাড়া তাহাকে পুনঃ বিবাহ করা যায় না, তাহাকে 'তালাকে মুগাল্লাযা' বলে। তিন তালাকের দ্বারাই এইরূপ তালাক হয়—চাই উহা একসাথে দেওয়া হউক চাই ভিন্ন ভিন্নভাবে। তিন তালাকের পর অন্য স্বামী গ্রহণ ছাড়া তাহাকে পুনঃ বিবাহ করা যায় না। কোরআনে বলা হইয়াছে—
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ
“অতঃপর (অর্থাৎ, দুই তালাকের পর) যদি তাহাকে তালাক দেয়, তবে সে নারী তাহার পক্ষে হালাল হইবে না যাবত না সে অন্য স্বামী গ্রহণ করে।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৩০ )
নারী ছাড়া যেমন জীবন থাকে অতৃপ্ত ও অশান্ত, তেমন নারী মুয়াফেক না হইলেও জীবন হয় তিক্ত ও বিষাক্ত। এ অশান্তি হইতে নিষ্কৃতির জন্যই শরীঅত তালাককে বৈধ করিয়াছে, কিন্তু শরীআত তালাককে কখনও পছন্দ করে না। শরীআতের দৃষ্টিতে একেবারে অপরিহার্য না হইলে কখনও নারীকে তালাক দেওয়া উচিত নহে। নবী করীম (ﷺ) বলিয়াছেন, “সমস্ত বৈধ বিষয়সমূহের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ঘৃণিত বৈধ বিষয় হইল তালাক ।”
ঋতুকালে স্বাভাবিক ঘৃণার কারণে যাহাতে তালাক দিয়া না বসে, তজ্জন্যই তোহরকালে তালাক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হইয়াছে এবং তিন তোহরে তিন তালাক দিতে বলা হইয়াছে, যাহাতে কেহ ঝুঁকিতে পড়িয়া মুগাল্লাযা তালাক দিয়া না বসে এবং ভাবনা-চিন্তার সুযোগ হারায়।
'ইসলামে থাকিয়া স্বামীর অবাধ্যতাকে পছন্দ করি না'—অথচ তাহাকে আমি স্বভাবত ভালবাসি না বিধায় তাহার অবাধ্যতা করার সম্ভাবনাই অধিক। তাই আমি তাহার সহিত খোলা করিতে চাই। ‘এক তালাক দিয়া দাও' এবং 'রাজআত' করিও না। তাহাতে সে ইদ্দত পালনের পর আপনা আপনিই বায়েন হইয়া যাইবে।
