মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৪- বিবাহ-শাদী সম্পর্কিত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩২৬৯
১০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদের প্রত্যেকের (স্বামী-স্ত্রীর) পারস্পরিক হক ও অধিকার সংক্রান্ত
৩২৬৯। হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রাঃ) বলেন, একদা একটি স্ত্রীলোক আসিয়া রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর নিকট বলিল, – আমরা তখন তাঁহার নিকট ছিলাম—হুযুর! আমার স্বামী সাফওয়ান ইবনে মুআত্তাল আমাকে মারেন যখন আমি নামায পড়ি, আমাকে রোযা ভাঙ্গিতে বাধ্য করেন যখন আমি রোযা রাখি এবং তিনি ফজরের নামায পড়েন না সূর্য উঠা ব্যতীত। আবু সায়ীদ বলেন, তখন সাফওয়ানও হুযূরের নিকট ছিল। হুযূর তাহাকে তাহার বিবির অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলেন। সাফওয়ান বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! সে যে বলিয়াছে, সে যখন নামায পড়ে আমি তাহাকে মারি—ইহার কথা হইল এই যে, সে এক সাথে (বড় বড়) দুইটি সূরা পড়ে, অথচ আপনি তাহা নিষেধ করিয়াছেন। আবু সায়ীদ বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাহাকে বলিলেনঃ একটি সূরাই সকল লোকের জন্য যথেষ্ট। অতঃপর সাফওয়ান বলিল, সে যে বলিয়াছে, আমি তাহাকে রোযা ভাঙ্গিতে বাধ্য করি—উহার ব্যাপার হইল এই যে, সে একাধারে রোযা রাখিতে শুরু করে, অথচ আমি একজন যুবক পুরুষ, আমি সংযম রক্ষা করিতে পারি না। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলিলেন, কোন নারী যেন নফল রোযা না রাখে তাহার স্বামীর অনুমতি ব্যতীত। এইরূপে সে যে বলিয়াছে—আমি সূর্য উঠা ছাড়া ফজরের নামায পড়ি না—ইহার কারণ হইল, (আমরা অধিক রাত্রি পর্যন্ত সেচের কাজ করি—তাই) দেরীতে উঠার অভ্যাস আমাদের পরিবারের রহিয়াছে, আমরা প্রায় জাগরিত হই না যাবৎ না সূর্য উঠে। হুযুর বলিলেন, সাফওয়ান, যখনই তুমি উঠিবে তখনই নামায পড়িবে। –আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ্
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ عِنْده فَقَالَت: زَوْجِي صَفْوَانُ بْنُ الْمُعَطَّلِ يَضْرِبُنِي إِذَا صَلَّيْتُ وَيُفَطِّرُنِي إِذَا صُمْتُ وَلَا يُصَلِّي الْفَجْرَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ قَالَ: وَصَفْوَانُ عِنْدَهُ قَالَ: فَسَأَلَهُ عَمَّا قَالَت فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمَّا قَوْلُهَا: يَضْرِبُنِي إِذَا صَلَّيْتُ فَإِنَّهَا تَقْرَأُ بِسُورَتَيْنِ وَقَدْ نَهَيْتُهَا قَالَ: فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ كَانَتْ سُورَةً وَاحِدَةً لَكَفَتِ النَّاسَ» . قَالَ: وَأَمَّا قَوْلُهَا يُفَطِّرُنِي إِذَا صُمْتُ فَإِنَّهَا تَنْطَلِقُ تَصُوم وَأَنا رجل شَاب فَلَا أَصْبِر فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَصُومُ امْرَأَةٌ إِلَّا بِإِذْنِ زَوْجِهَا» وَأَمَّا قَوْلُهَا: إِنِّي لَا أُصَلِّي حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ فَإنَّا أهل بَيت قد عرف لنا ذَاك لَا نَكَادُ نَسْتَيْقِظُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ قَالَ: «فَإِذَا اسْتَيْقَظْتَ يَا صَفْوَانُ فَصَلِّ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه
হাদীসের ব্যাখ্যা:
১. ‘সংযম রক্ষা করিতে পারি না' – অতএব, দিনের বেলায়ও তাহার সাথে মিলিত হইতে বাধ্য হই। ‘যখনই উঠিবে তখন পড়িবে' –অর্থাৎ, তোমার ওয়াক্ত তখনই।
২. এ হাদীছে স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর জন্য নফল রোযা রাখা অবৈধ করা হয়েছে। স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল রোযা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে এ কারণে যে, তাতে করে স্বামীর হক আদায় বিঘ্নিত হতে পারে।
যে-কোনও ইবাদত নফল শুরু করলে তা পূরণ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। কাজেই স্ত্রী যদি নফল রোযা রাখে, তার তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এখন স্বামীর যদি এমন কোনও প্রয়োজন দেখা দেয়, যা মেটাতে গেলে তার রোযা ভাঙতে হবে, তবে পরে তা কাযা করা জরুরি হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে এক তো ইবাদত শুরুর পর তা ভাঙতে হচ্ছে, যা পসন্দনীয় নয়। আবার পরে কাযা করাটাও সম্ভব নাও হতে পারে। যদি আগেই মৃত্যু হয়ে যায়, তবে একটা ওয়াজিব আমলের দায় নিয়েই মৃত্যু হল। আর যদি স্থায়ীভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে, যদ্দরুন রোযা রাখা সম্ভব না হয়, তবে ফিদয়া দিতে হবে। মোটকথা কোনও-না কোনও বিপত্তি থেকেই যায়। এর থেকে বাঁচার উপায় হল স্বামী উপস্থিত থাকাকালে তার অনুমতি ছাড়া রোযা রাখা হতে বিরত থাকা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছটির শিক্ষা সুস্পষ্ট। স্বামীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অনুমতি ছাড়া স্ত্রী নফল রোযা রাখবে না।
২. এ হাদীছে স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর জন্য নফল রোযা রাখা অবৈধ করা হয়েছে। স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল রোযা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে এ কারণে যে, তাতে করে স্বামীর হক আদায় বিঘ্নিত হতে পারে।
যে-কোনও ইবাদত নফল শুরু করলে তা পূরণ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। কাজেই স্ত্রী যদি নফল রোযা রাখে, তার তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এখন স্বামীর যদি এমন কোনও প্রয়োজন দেখা দেয়, যা মেটাতে গেলে তার রোযা ভাঙতে হবে, তবে পরে তা কাযা করা জরুরি হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে এক তো ইবাদত শুরুর পর তা ভাঙতে হচ্ছে, যা পসন্দনীয় নয়। আবার পরে কাযা করাটাও সম্ভব নাও হতে পারে। যদি আগেই মৃত্যু হয়ে যায়, তবে একটা ওয়াজিব আমলের দায় নিয়েই মৃত্যু হল। আর যদি স্থায়ীভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে, যদ্দরুন রোযা রাখা সম্ভব না হয়, তবে ফিদয়া দিতে হবে। মোটকথা কোনও-না কোনও বিপত্তি থেকেই যায়। এর থেকে বাঁচার উপায় হল স্বামী উপস্থিত থাকাকালে তার অনুমতি ছাড়া রোযা রাখা হতে বিরত থাকা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছটির শিক্ষা সুস্পষ্ট। স্বামীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অনুমতি ছাড়া স্ত্রী নফল রোযা রাখবে না।
২. ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
