মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৪- বিবাহ-শাদী সম্পর্কিত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩১২৬
২. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিয়ের ওয়ালী (অভিভাবক) এবং নারীর অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে
৩১২৬। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন বালেগা বিবাহিতা নারীকে বিবাহ দেওয়া যাইবে না যাবৎ না তাহার স্পষ্ট অনুমতি লওয়া হয়। এইরূপে বালেগা কুমারীকেও বিবাহ দেওয়া যাইবে না যাবৎ না তাহার অনুমতি গ্রহণ করা হয়। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। তাহার অনুমতি কিরূপে বুঝা যাইবে ? (সে তো কথা বলিবে না।) তিনি বলিলেন: চুপ থাকাই তাহার অনুমতি। —মোত্তাঃ
بَابُ الْوَلِىِّ فِى النِّكَاحِ وَاسْتِئْذَانِ الْمَرْأَةِ: الْفَصْلُ الأول
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تُنْكَحُ الْأَيِّمُ حَتَّى تُسْتَأْمَرَ وَلَا تُنْكَحُ الْبِكْرُ حَتَّى تُسْتَأْذَنَ» . قَالُوا: يَا رَسُول الله وَكَيف إِذْنهَا؟ قَالَ: «أَن تسكت»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
বিবাহে অভিভাবক ও নারীর অনুমতি গ্রহণ
অভিভাবক—মূলে ‘ওলী' শব্দ রহিয়াছে, যাহার অর্থ অভিভাবক, মুরব্বী। এ সম্পর্কীয় কোরআন হাদীস আলোচনা করিয়া ইমাম শাফেয়ী এ সিদ্ধান্তে পৌঁছাইয়াছেন যে, ওলী ছাড়া শুধু পাত্রীর অনুমতি ও বাক্য দ্বারা বিবাহ সিদ্ধ হয় না। কারণ, বিবাহ সম্পর্কীয় সকল বিষয় উত্তমরূপে বিবেচনা করার ক্ষমতা পাত্রীর না থাকাই স্বাভাবিক। সে সাময়িক মোহে এমন সিদ্ধান্ত করিতে পারে যাহা তাহার ভবিষ্যত জীবনের পক্ষে ক্ষতিকর হইবে। আর অভিভাবক হইল তাহার হিতকামী ; অতএব, তাহার পক্ষে আপন অভিভাবকের সাহায্য গ্রহণ করা আবশ্যক। কিন্তু ইমাম আবু হানীফার মতে, বালেগা পাত্রীর অনুমতি ও বাক্য বিবাহ সিদ্ধ হওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। কোরআন হইতে তিনি ইহাই বুঝিয়াছেন। কোরআনে রহিয়াছে— فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ অর্থাৎ, “মুগাল্লাযা তালাক হওয়ার পর সে আর পূর্ব স্বামীর পক্ষে হালাল নহে যাবৎ না সে অন্য স্বামী গ্রহণ করে।” এখানে অন্য স্বামী গ্রহণ করাকে নারীর কাজ বলিয়া উল্লেখ করা হইয়াছে। অভিভাবকের উল্লেখ এখানে নাই।
অবশ্য যদি বিবাহ অসম শ্রেণীতে হইয়া থাকে, তবে ওলীর তাহা আদালতযোগে ফসখ করাইবার অর্থাৎ, ভাঙ্গিয়া দিবার অধিকার আছে। কেননা, ইহা তাহার গোত্রের মান-মর্যাদার প্রশ্ন ইহাতে তাহার গোত্রীয় অপর মেয়েদের বিবাহে অসুবিধা সৃষ্টি হইতে পারে।
মালের ওলী, জানাযার ওলী ও বিবাহের ওলী সম্পূর্ণ এক নহে। বিবাহের ওলী হইল ফারায়েয বা দায়ভাগ অধ্যায়ে বর্ণিত—আসাবা বে-নফসিহী বা পুরুষ আসাবা। অর্থাৎ, পুত্র, পৌত্রাদি যত নীচের হোক। পাগলা মায়ের বিবাহ তাহার পুত্রই দিবে। অতঃপর বাপ ও দাদা-আদি যত উপরে থাক। অতঃপর ভাই, ভাই-পুত ও তাহাদের পুরুষ বংশধর। অতঃপর চাচা, চাচাত ভাই ও তাহাদের পুরুষ বংশধর। অতঃপর বাপের চাচা ও তাহার পুরুষ বংশধর। অতঃপর দাদার চাচা ও তাহার পুরুষ বংশধর। অতঃপর মা, অতঃপর দাদী, অতঃপর যবিল আরহাম তাহাদের ক্রমানুসারে। কিন্তু প্রত্যেক স্তরেই যাহার আত্মীয়তা দুই দিক হইতে, তাহারই অগ্রাধিকার জন্মিবে। যথা—সহোদর ও বিমাতা ভাই, সহোদরেরই অগ্রাধিকার রহিয়াছে। (শরহে বেকায়া)
ইসলাম না পাত্রীকে অবিবেচনার কাজ করিতে দেয় আর না অভিভাবককে স্বেচ্ছাচারিতা করিতে দেয়; বরং বিবাহের কাজ উভয়ের মিলিত বিবেচনায় করিতে বলে।
অভিভাবক—মূলে ‘ওলী' শব্দ রহিয়াছে, যাহার অর্থ অভিভাবক, মুরব্বী। এ সম্পর্কীয় কোরআন হাদীস আলোচনা করিয়া ইমাম শাফেয়ী এ সিদ্ধান্তে পৌঁছাইয়াছেন যে, ওলী ছাড়া শুধু পাত্রীর অনুমতি ও বাক্য দ্বারা বিবাহ সিদ্ধ হয় না। কারণ, বিবাহ সম্পর্কীয় সকল বিষয় উত্তমরূপে বিবেচনা করার ক্ষমতা পাত্রীর না থাকাই স্বাভাবিক। সে সাময়িক মোহে এমন সিদ্ধান্ত করিতে পারে যাহা তাহার ভবিষ্যত জীবনের পক্ষে ক্ষতিকর হইবে। আর অভিভাবক হইল তাহার হিতকামী ; অতএব, তাহার পক্ষে আপন অভিভাবকের সাহায্য গ্রহণ করা আবশ্যক। কিন্তু ইমাম আবু হানীফার মতে, বালেগা পাত্রীর অনুমতি ও বাক্য বিবাহ সিদ্ধ হওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। কোরআন হইতে তিনি ইহাই বুঝিয়াছেন। কোরআনে রহিয়াছে— فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ অর্থাৎ, “মুগাল্লাযা তালাক হওয়ার পর সে আর পূর্ব স্বামীর পক্ষে হালাল নহে যাবৎ না সে অন্য স্বামী গ্রহণ করে।” এখানে অন্য স্বামী গ্রহণ করাকে নারীর কাজ বলিয়া উল্লেখ করা হইয়াছে। অভিভাবকের উল্লেখ এখানে নাই।
অবশ্য যদি বিবাহ অসম শ্রেণীতে হইয়া থাকে, তবে ওলীর তাহা আদালতযোগে ফসখ করাইবার অর্থাৎ, ভাঙ্গিয়া দিবার অধিকার আছে। কেননা, ইহা তাহার গোত্রের মান-মর্যাদার প্রশ্ন ইহাতে তাহার গোত্রীয় অপর মেয়েদের বিবাহে অসুবিধা সৃষ্টি হইতে পারে।
মালের ওলী, জানাযার ওলী ও বিবাহের ওলী সম্পূর্ণ এক নহে। বিবাহের ওলী হইল ফারায়েয বা দায়ভাগ অধ্যায়ে বর্ণিত—আসাবা বে-নফসিহী বা পুরুষ আসাবা। অর্থাৎ, পুত্র, পৌত্রাদি যত নীচের হোক। পাগলা মায়ের বিবাহ তাহার পুত্রই দিবে। অতঃপর বাপ ও দাদা-আদি যত উপরে থাক। অতঃপর ভাই, ভাই-পুত ও তাহাদের পুরুষ বংশধর। অতঃপর চাচা, চাচাত ভাই ও তাহাদের পুরুষ বংশধর। অতঃপর বাপের চাচা ও তাহার পুরুষ বংশধর। অতঃপর দাদার চাচা ও তাহার পুরুষ বংশধর। অতঃপর মা, অতঃপর দাদী, অতঃপর যবিল আরহাম তাহাদের ক্রমানুসারে। কিন্তু প্রত্যেক স্তরেই যাহার আত্মীয়তা দুই দিক হইতে, তাহারই অগ্রাধিকার জন্মিবে। যথা—সহোদর ও বিমাতা ভাই, সহোদরেরই অগ্রাধিকার রহিয়াছে। (শরহে বেকায়া)
ইসলাম না পাত্রীকে অবিবেচনার কাজ করিতে দেয় আর না অভিভাবককে স্বেচ্ছাচারিতা করিতে দেয়; বরং বিবাহের কাজ উভয়ের মিলিত বিবেচনায় করিতে বলে।
