মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১০- যাবতীয় দোয়া-যিক্র
হাদীস নং: ২৩৪৭
২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৪৭। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বনী ইসরাঈলের মধ্যে দুই ব্যক্তি পরস্পর বন্ধু ছিল। ইহাদের একজন বড় আবেদ ছিল, আর অপরজন বলিত—আমি গোনাগার। আবেদ তাহাকে বলিত, বিরত থাক যাহাতে তুমি লিপ্ত আছ তাহা হইতে, আর সে বলিত, আমাকে আমার পরওয়ারদেগারের সাথে ছাড়িয়া দাও। অবশেষে একদিন সে তাহাকে এমন একটি অপরাধে লিপ্ত পাইল যাহাকে সে বড় গুরুতর মনে করিল এবং বলিল, বিরত থাক। সে বলিল, আমাকে আমার পরওয়ারদেগারের সাথে ছাড়িয়া দাও! তোমাকে কি আমার উপর দারোগা করা হইয়াছে? তখন সে বলিল, খোদার কসম, তোমাকে আল্লাহ্ কখনও মাফ করিবেন না এবং বেহেশতে দাখিল করিবেন না। অতঃপর আল্লাহ্ তাহাদের নিকট একজন ফিরিশতা পাঠাইলেন। সে তাহাদের উভয়ের রূহ কবজ করিল এবং তাহারা উভয়ে আল্লাহর সমীপে একত্র হইল। তখন তিনি গোনাহ্গারকে বলিলেন, আমার রহমতের দ্বারা তুমি বেহেশতে দাখিল হও। আর দ্বিতীয় ব্যক্তিকে বলিলেন, তুমি কি আমাকে আমার বান্দার প্রতি রহম করিতে বাধা দিতে পার ? সে বলিল, না প্রভু ! আল্লাহ্ বলিলেন, ইহাকে দোযখের দিকে লইয়া যাও! – আহমদ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ رَجُلَيْنِ كَانَا فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ مُتَحَابَّيْنِ أَحدهمَا مُجْتَهد لِلْعِبَادَةِ وَالْآخَرُ يَقُولُ: مُذْنِبٌ فَجَعَلَ يَقُولُ: أَقْصِرْ عَمَّا أَنْتَ فِيهِ فَيَقُولُ خَلِّنِي وَرَبِّي حَتَّى وَجَدَهُ يَوْمًا عَلَى ذَنْبٍ اسْتَعْظَمَهُ فَقَالَ: أَقْصِرْ فَقَالَ: خَلِّنِي وَرَبِّيَ أَبُعِثْتَ عَلَيَّ رَقِيبًا؟ فَقَالَ: وَاللَّهِ لَا يَغْفِرُ اللَّهُ لَكَ أَبَدًا وَلَا يُدْخِلُكَ الْجَنَّةَ فَبَعَثَ اللَّهُ إِلَيْهِمَا مَلَكًا فَقَبَضَ أَرْوَاحَهُمَا فَاجْتَمَعَا عِنْدَهُ فَقَالَ لِلْمُذْنِبِ: ادْخُلِ الْجَنَّةَ بِرَحْمَتِي وَقَالَ لِلْآخَرِ: أَتَسْتَطِيعُ أَنْ تَحْظِرَ عَلَى عَبْدِي رَحْمَتِي؟ فَقَالَ: لَا يَا رَبِّ قَالَ: اذْهَبُوا بِهِ إِلَى النَّار . رَوَاهُ أَحْمد
হাদীসের ব্যাখ্যা:
তাহাকে দোযখের আদেশ এইজন্য দেওয়া হইয়াছিল যে, সে তাহার এবাদতের উপরই ভরসা করিয়াছিল এবং গোনাগারকে হাকীর বা তুচ্ছ জানিয়াছিল। গোনাহকে ঘৃণা করিতে বলা হইয়াছে, গোনাগারকে নহে; যেমন, পিতা-মাতা ময়লাকে ঘৃণা করে, ময়লাযুক্ত সন্তানকে নহে। গোনাগারকে পিতা-মাতার ন্যায় দরদের সাথে সাফ করিয়া লইতে চেষ্টা করিবে। অথবা সে মানুষকে আল্লাহর রহমত হইতে নিরাশ করিতেছিল, আর আল্লাহর রহমত হইতে নিরাশ হওয়া বা করা কুফরী। মোটকথা, হাদীসে গোনাহ্ করার লাইসেন্স দেওয়া হয় নাই ; বরং আল্লাহর রহমতের প্রশস্ততার বর্ণনা দেওয়া হইয়াছে।
