মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৮- রোযার অধ্যায়

হাদীস নং: ২০৩২
৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - (সিয়াম) কাযা করা
২০৩২। মহিলা তাবেয়ী হযরত মুআযা আদভিয়া হইতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একবার বিবি আয়েশাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, কি হেতু যে হায়েযগ্রস্তা স্ত্রীলোক রোযা কাযা করে আর নামায কাযা করে না? বিবি আয়েশা বলিলেন, যখন আমাদের এই অবস্থা হইত তখন আমাদিগকে রোযার কাযা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হইত আর নামাযের কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হইত না। (তাই আমরা এইরূপ করিতাম এবং ইহার হেতু জিজ্ঞাসা করিতাম না।) — মুসলিম
وَعَنْ مُعَاذَةَ الْعَدَوِيَّةِ أَنَّهَا قَالَتْ لِعَائِشَةَ: مَا بَالُ الْحَائِضِ تَقْضِي الصَّوْمَ وَلَا تَقْضِي الصَّلَاةَ؟ قَالَتْ عَائِشَةُ: كَانَ يُصِيبُنَا ذَلِكَ فَنُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّوْمِ وَلَا نُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّلَاةِ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

ইহাতে বুঝা গেল যে, সাহাবায়ে কেরাম কোন ব্যাপার সম্পর্কে আল্লাহ্ ও রাসূলের নির্দেশ কি সাধারণতঃ তাহাই জানিতে চাহিতেন। নির্দেশের হেতু বা যুক্তি কি তাহা জানিতে চাহিতেন না। কেননা, কোন ব্যক্তিকে কোন ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ বলিয়া বিশ্বাস করার পর তাহার নির্দেশের হেতু জানিতে চাওয়া তাহাকে বিশেষজ্ঞ বলিয়া বিশ্বাস করার পরিপন্থী। সুতরাং আল্লাহ্ ও রাসূলকে তাঁহাদের নির্দেশের হেতু জিজ্ঞাসা করার প্রশ্নই আসিতে পারে না। এছাড়া নির্দেশের পালন নির্দেশের হেতু জানার উপর নির্ভরও করে না। মুরব্বী ও মুনীবদের নির্দেশ আমরা সাধারণতঃ এভাবেই পালন করিয়া থাকি। ইহা দ্বারা এখানে একথা বলা হইতেছে না যে, শরীআতের কোন কাজের পিছনে কোন হেতু বা যুক্তি নাই। যুক্তি আছে নিশ্চয়, তবে সকল যুক্তিই যে মানুষের বোধগম্য এমন নহে। কোন যুক্তি তাহার সূক্ষ্মতার কারণে হয়তো আল্লাহর রাসূল ছাড়া কাহারও বুঝিবারও নহে।
এখানে রোযা পরে পূর্ণ করার এবং নামায পূর্ণ না করার হেতু হইলঃ হায় আসে বছরে বারবার, আর এক বারের হায়য, দশ দিনও স্থায়ী হইতে পারে, যাহাতে তাহার একবারেই পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায পূর্ণ করিতে হইবে। ইহা বন্দার পক্ষে বহু কষ্টসাধ্য বলিয়া আল্লাহ্ ইহা মাফ করিয়া দিয়াছেন। পক্ষান্তরে রোযা আসে বছরে একবার এবং এক মাস। তাই উহা পূর্ণ করা কষ্টসাধ্য নহে। তবে, কোন কাজ বন্দার পক্ষে কষ্টসাধ্য আর কোন্ কাজ কষ্টসাধ্য নহে তাহা বিচার করার ভার বন্দার স্রষ্টা আল্লাহরই।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ২০৩২ | মুসলিম বাংলা