মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৮- রোযার অধ্যায়
হাদীস নং: ১৯৭০
১. প্রথম অনুচ্ছেদ - নতুন চাঁদ দেখার বর্ণনা
১৯৭০। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ রোযা রাখ তোমরা চাঁদ দেখিয়া এবং রোযা খুলিবে (শাওয়ালের) চাঁদ দেখিয়া। যদি মেঘের কারণে উহা গোপন থাকে তোমাদের প্রতি, তবে পূর্ণ করিবে শা'বান ত্রিশ দিনে। -মোত্তাঃ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صُومُوا لِرُؤْيَتِهِ وَأَفْطِرُوا لِرُؤْيَتِهِ فَإِنْ غم عَلَيْكُم فَأَكْمِلُوا عِدَّةَ شَعْبَانَ ثَلَاثِينَ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
দেখিয়া —মূলে 'রূইয়াত' শব্দ রহিয়াছে। ইহার সাধারণ অর্থ, চর্ম চোখে দেখা । কখনও জ্ঞান চোখে দেখা বা স্বপ্নে দেখাও হয়। এখানে ইহা প্রথম অর্থেই ব্যবহৃত হইয়াছে। সুতরাং (ক) ২৯ তারিখে দিগন্তের উপরে চাঁদের এমন স্থানে (ডিগ্রীতে) থাকিতে হইবে যেখানে থাকিলে উহা চর্ম চোখের পক্ষে দেখা সম্ভব। অতএব, কোন উঁচু স্থানে থাকিয়া নীচের চাঁদ দেখিলে চলিবে না। (খ) এরূপে চাঁদ যথাস্থানে থাকিলেও যদি উহা চর্ম চোখে দেখা না যায় এবং যন্ত্র দ্বারা দেখা যায়, তাহাতেও চলিবে না। কেননা, হাদীসে চর্ম চোখের কথাই রহিয়াছে, আর ইহাই হইল সর্বযুগের সর্বস্থানের সর্বস্তরের মানুষের পক্ষে সম্ভবপর ও সহজ। কৃত্রিম উপায়ে এই যান্ত্রিক যুগেও সকল স্থানে সম্ভবপর নহে। (গ) বাস্তবে চাঁদ উঠিয়াছে কিন্তু মেঘ বাদলার দরুন উহা চোখে দেখা যায় নাই। ফলে রোযা একটি কম হইয়াছে। ইহাতে ক্ষতি নাই। তবে পরে যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে, আশেপাশে কোথাও ঐ দিন চাঁদ দেখা গিয়াছিল, উহা কাযা করিতে হইবে। যন্ত্রের সাহায্যে বা অনুমানে রোযা রাখা অপেক্ষা শরীআতের দৃষ্টিতে ইহাই সহজ — দেখা গেল না, রাখিলাম না, আবার জানা গেল, রাখিলাম— সোজা পথ।
