মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৮- রোযার অধ্যায়
হাদীস নং: ১৯৬৫
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
১৯৬৫। হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদিগকে শা'বান মাসের শেষ তারিখে ভাষণ দান করিলেন এবং বলিলেনঃ হে মানবমণ্ডলি ! তোমাদের প্রতি ছায়া বিস্তার করিয়াছে একটি মহান মাস – মোবারক মাস, এমন মাস যাহাতে একটি রাত রহিয়াছে হাজার মাস অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ্ উহার রোযাসমূহকে করিয়াছেন (তোমাদের উপর) ফরয এবং উহার রাত্রিতে নামায পড়াকে করিয়াছেন (তোমাদের জন্য) নফল। যে ব্যক্তি সে মাসে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি নফল কাজ করিল, সে ঐ ব্যক্তির সমান হইল, যে অন্য মাসে একটি ফরয আদায় করিল। আর যে ব্যক্তি সে মাসে একটি ফরয আদায় করিল, সে ঐ ব্যক্তির সমান হইল, যে অন্য মাসে সত্তরটি ফরয আদায় করিল। উহা সবরের মাস আর সবরের সওয়ার হইল বেহেশত। উহা সহানুভূতি প্রদর্শনের মাস। ইহা সেই মাস যাহাতে মু'মিনের রিযিক বাড়াইয়া দেওয়া হয়। যে ঐ মাসে কোন রোযাদারকে ইফতার করাইবে, উহা তাহার জন্য তাহার গোনাহসমূহের ক্ষমাস্বরূপ হইবে এবং দোযখের আগুন হইতে মুক্তির কারণ হইবে। এছাড়া তাহার সওয়াব হইবে সেই রোযাদার ব্যক্তির সমান অথচ রোযাদারের সওয়াবও কম হইবে না। সাহাবীগণ বলেন, আমরা বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাদের প্রত্যেক ব্যক্তি তো এমন সামর্থ্য রাখে না, যদ্দ্বারা রোযাদারকে ইফতার করাইতে পারে ? রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেন, আল্লাহ্ তা'আলা এই সওয়াব দান করিবেন যে রোযাদারকে ইফতার করায় এক চুমুক দুধ দ্বারা অথবা একটি খেজুর দ্বারা অথবা এক চুমুক পানি দ্বারা। আর যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে তৃপ্তির সাথে খাওয়ায়, আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে আমার হাওয (কাওসার) হইতে পানীয় পান করাইবেন যাহার পর পুনরায় সে তৃষ্ণার্ত হইবে না জান্নাতে প্রবেশ পর্যন্ত। উহা এমন মাস যাহার প্রথম দিক রহমত, মধ্যম দিক মাগফিরাত আর শেষ দিক হইতেছে দোযখ হইতে মুক্তি। আর যে এই মাসে আপন দাস-দাসীদের (অধীনদের) প্রতি কার্যভার লাঘব করিয়া দিবে আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে মাফ করিয়া দিবেন এবং তাহাকে দোযখ হইতে মুক্তি দান করিবেন।
وَعَن سلمَان قَالَ: خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي آخِرِ يَوْمٍ مِنْ شَعْبَانَ فَقَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ أَظَلَّكُمْ شَهْرٌ عَظِيمٌ مُبَارَكٌ شَهْرٌ فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مَنْ أَلْفِ شهر جعل الله تَعَالَى صِيَامَهُ فَرِيضَةً وَقِيَامَ لَيْلِهِ تَطَوُّعًا مَنْ تَقَرَّبَ فِيهِ بخصلة من الْخَيْرِ كَانَ كَمَنْ أَدَّى فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ وَمَنْ أَدَّى فَرِيضَةً فِيهِ كَانَ كَمَنْ أَدَّى سَبْعِينَ فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ وَهُوَ شَهْرُ الصَّبْرِ وَالصَّبْر ثَوَابه الْجنَّة وَشهر الْمُوَاسَاة وَشهر يزْدَاد فِيهِ رِزْقُ الْمُؤْمِنِ مَنْ فَطَّرَ فِيهِ صَائِمًا كَانَ لَهُ مَغْفِرَةً لِذُنُوبِهِ وَعِتْقَ رَقَبَتِهِ مِنَ النَّارِ وَكَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أَجْرِهِ شَيْءٌ» قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ لَيْسَ كلنا يجد مَا نُفَطِّرُ بِهِ الصَّائِمَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُعْطِي اللَّهُ هَذَا الثَّوَابَ مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا عَلَى مَذْقَةِ لَبَنٍ أَوْ تَمْرَةٍ أَوْ شَرْبَةٍ مِنْ مَاءٍ وَمَنْ أَشْبَعَ صَائِمًا سَقَاهُ اللَّهُ مِنْ حَوْضِي شَرْبَةً لَا يَظْمَأُ حَتَّى يَدْخُلَ الْجَنَّةَ وَهُوَ شَهْرٌ أَوَّلُهُ رَحْمَةٌ وَأَوْسَطُهُ مَغْفِرَةٌ وَآخِرُهُ عِتْقٌ مِنَ النَّارِ وَمَنْ خَفَّفَ عَنْ مَمْلُوكِهِ فِيهِ غَفَرَ الله لَهُ وَأعْتقهُ من النَّار» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ
