মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৭- যাকাতের অধ্যায়
হাদীস নং: ১৮৫১
৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যার জন্য কিছু চাওয়া হালাল নয় এবং যার জন্য হালাল
১৮৫১। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, আনসারীদের এক ব্যক্তি নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট সওয়াল করিতে আসিল। তিনি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার ঘরে কি কিছু নাই? সে বলিল, একটি কম দামী কম্বল আছে যাহার এক দিক আমরা গায়ে দেই আর অপর দিক বিছাইয়া থাকি এবং একটি কাঠের পেয়ালা আছে যাহাতে করিয়া আমরা পানি পান করি। হুযূর (ﷺ) বলিলেনঃ উভয়টি আমার নিকট লইয়া আস। সে উভয়টি তাহার নিকট লইয়া আসিল। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) উভয়টিকে নিজের হাতে গ্রহণ করিয়া বলিলেন, এই দুইটি জিনিস কে খরিদ করিবে? এক ব্যক্তি বলিল, আমি উভয়টি এক দিরহামে লইতে পারি। হুযূর দুইবার অথবা তিনবার বলিলেন, এক দিরহামের উপর কে বেশী দিতে পারে? এক ব্যক্তি বলিয়া উঠিল, হুযূর আমি দুই দিরহামে লইতে পারি। তিনি উভয়টি তাহাকেই দিলেন। হুযূর দিরহাম দুইটি লইলেন এবং আনসারীকে দিয়া বলিলেন, যাও, এক দিরহাম দিয়া খাদ্য খরিদ কর এবং উহা নিজের পরিবারকে দাও, আর অপর দিরহাম দ্বারা একটি কুড়াল খরিদ কর এবং উহা আমার নিকট লইয়া আস। কথামতে সে উহা লইয়া আসিল। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আপন হাতে উহাতে কাঠের বাট লাগাইলেন। অতঃপর বলিলেন, যাও, কাঠ কাটিতে থাক এবং বিক্রয় করিতে থাক। খবরদার, আমি যেন পনের দিন তোমাকে এখানে না দেখি। সে ব্যক্তি গেল এবং সে মতে কাঠ কাটিতে ও বিক্রয় করিতে লাগিল। (পনের দিন পর) সে হুযুরের নিকট আসিল তখন সে দশ দিরহামের মালিক। অতঃপর সে উহার কিছু দ্বারা বস্ত্র খরিদ করিল এবং কিছু দ্বারা খাদ্য। এ সময় হুযূর (ﷺ) বলিলেনঃ ইহা তোমার জন্য সওয়াল করা অপেক্ষা উত্তম অথচ সওয়াল কিয়ামতের দিন তোমার চেহারায় দাগস্বরূপ হইবে। মনে রাখিও, তিন ব্যক্তি ব্যতীত কাহারও পক্ষে সওয়াল করা সঙ্গত নহে—সর্বনাশা অভাবে পতিত ব্যক্তি, অপমানকর দেনার দায়ে আব্দ্ধ ব্যক্তি এবং পীড়াদায়ক রক্তপণের জন্য দায়ী ব্যক্তি। – আবু দাউদ। ইবনে মাজাহ্ ‘কিয়ামতের দিন' পর্যন্ত।
وَعَن أنس بن مَالك: أَنَّ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْأَلُهُ فَقَالَ: «أَمَا فِي بَيْتك شَيْء؟» قَالَ بَلَى حِلْسٌ نَلْبَسُ بَعْضَهُ وَنَبْسُطُ بَعْضَهُ وَقَعْبٌ نَشْرَبُ فِيهِ مِنَ الْمَاءِ. قَالَ: «ائْتِنِي بِهِمَا» قَالَ فَأَتَاهُ بِهِمَا فَأَخَذَهُمَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ وَقَالَ: «مَنْ يَشْتَرِي هَذَيْنِ؟» قَالَ رَجُلٌ أَنَا آخُذُهُمَا بِدِرْهَمٍ قَالَ: «مَنْ يَزِيدُ عَلَى دِرْهَمٍ؟» مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا قَالَ رجل أَنا آخذهما بِدِرْهَمَيْنِ فَأَعْطَاهُمَا إِيَّاه وَأخذ الدِّرْهَمَيْنِ فَأَعْطَاهُمَا الْأَنْصَارِيُّ وَقَالَ: «اشْتَرِ بِأَحَدِهِمَا طَعَامًا فانبذه إِلَى أهلك واشتر بِالْآخرِ قدومًا فأتني بِهِ» . فَأَتَاهُ بِهِ فَشَدَّ فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عُودًا بِيَدِهِ ثُمَّ قَالَ لَهُ اذْهَبْ فَاحْتَطِبْ وَبِعْ وَلَا أَرَيَنَّكَ خَمْسَةَ عَشَرَ يَوْمًا . فَذهب الرجل يحتطب وَيبِيع فجَاء وَقَدْ أَصَابَ عَشَرَةَ دَرَاهِمَ فَاشْتَرَى بِبَعْضِهَا ثَوْبًا وَبِبَعْضِهَا طَعَامًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَذَا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ تَجِيءَ الْمَسْأَلَةُ نُكْتَةً فِي وَجْهِكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّ الْمَسْأَلَةَ لَا تَصْلُحُ إِلَّا لِثَلَاثَةٍ لِذِي فَقْرٍ مُدْقِعٍ أَوْ لِذِي غُرْمٍ مُفْظِعٍ أَوْ لِذِي دَمٍ مُوجِعٍ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَرَوَى ابْن مَاجَه إِلَى قَوْله: «يَوْم الْقِيَامَة»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
‘সর্বনাশা অভাব – মূলে মুদকে' (مدقع) শব্দ রহিয়াছে যাহার অর্থ, অভাবিকে মাটিতে মিশাইয়া দেয় এইরূপ অভাব। রক্তপণকে আরবীতে 'দিয়ত' বলে। উহার বিবরণ দিয়ত অধ্যায়ে আসিবে।
