মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৭- যাকাতের অধ্যায়

হাদীস নং: ১৮২৫
৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - যাকাত যাদের জন্য হালাল নয়
১৮২৫। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, বরীরাতে, শরীআতের তিনটি কথা রহিয়াছে। প্রথম কথা হইল যে, বরীরাকে আযাদ করা হয় অতঃপর তাহাকে (তাহার স্বামীকে রাখা বা ত্যাগ করা সম্পর্কে) এখতিয়ার দেওয়া হয়। দ্বিতীয় কথা হইল, তাহার ঘটনায় রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন মীরাস যিনি আযাদ করেন, তাঁহার প্রাপ্য। তৃতীয় কথা হইল, একবার রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করিলেন (এবং দেখিলেন) ডেগ্‌চীতে গোশত জোশ যাইতেছে। অতঃপর খাওয়ার জন্য তাঁহার নিকট রুটি ও ঘরের তরকারী উপস্থিত করা হইল। তখন তিনি বলিলেন, আমি না দেখিলাম একটি ডেগচীতে গোশত রহিয়াছে? তাহারা উত্তর করিলেন, হা, কিন্তু উহা বরীরাকে সদকারূপে দেওয়া হইয়াছে অথচ আপনি সদকার জিনিস খান না। হুযুর বলিলেন, উহা তাহার জন্য সদকা অতঃপর আমাদের জন্য হাদিয়া। মোত্তাঃ
بَابٌ مِمَّنْ لَا تَحِلُّ لَهُ الصَّدَقَةُ
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ فِي بَرِيرَةَ ثَلَاثُ سُنَنٍ: إِحْدَى السُّنَنِ أَنَّهَا عُتِقَتْ فَخُيِّرَتْ فِي زَوْجِهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْوَلَاءُ لِمَنْ أَعْتَقَ» . وَدَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْبُرْمَةُ تَفُورُ بِلَحْمٍ فَقُرِّبَ إِلَيْهِ خُبْزٌ وَأُدْمٌ مِنْ أُدْمِ الْبَيْتِ فَقَالَ: «أَلَمْ أَرَ بُرْمَةً فِيهَا لَحْمٌ؟» قَالُوا: بَلَى وَلَكِنَّ ذَلِكَ لَحْمٌ تُصُدِّقَ بِهِ عَلَى بَرِيرَةَ وَأَنْتَ لَا تَأْكُلُ الصَّدَقَةَ قَالَ: «هُوَ عَلَيْهَا صَدَقَةٌ وَلنَا هَدِيَّة»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

(১) বরীরা এক ইহুদীর বাঁদী ছিল। ইহুদীর সাথে তাহার চুক্তি হয় যে, মুক্তিপণ দিতে পারিলে ইহুদী তাহাকে মুক্ত করিয়া দিবে। বরীরা মুক্তিপণের ব্যাপারে হযরত আয়েশার নিকট সাহায্য চাহিলে আয়েশা তাহাকে খরিদ করিয়া অতঃপর মুক্ত করিয়া দিতে রাযী হন; কিন্তু ইহুদী শর্ত করে যে, বরীরার মৃত্যুর পর তাহার মীরাস সে পাইবে। ইহার উত্তরে হুযুর বলেন, ইহা তাহার অন্যায় দাবী। মীরাস সে পাইবে, যে তাহাকে আযাদ করিয়াছে।
(২) মুগীস নামীয় এক কৃতদাসের সাথে বরীরার বিবাহ হইয়াছিল। আযাদী লাভের পর তাহাকে হুযূর এই বিবাহ বহাল রাখা না রাখা সম্পর্কে অধিকার দিয়াছিলেন। সেমতে বরীরা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটায়। ইহাতে বুঝা গেল যে, বাদীর স্বাধীনতা লাভের পর তাহার পূর্ব বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাইবার অধিকার জন্মে।
(৩) এ হাদীস হইতে ইহাও বুঝা গেল যে, সদ্‌কা গ্রহণকারী উহার মালিক হইয়া যায়। অতঃপর সে উহা কাহাকেও তাহার মনস্তুষ্টির জন্য দান করিলে তাহার জন্য সদকা হয় না।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ১৮২৫ | মুসলিম বাংলা