মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৬- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
হাদীস নং: ১৬৩৪
৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মাইয়্যিতের গোসল ও কাফন।
মৃত ব্যক্তিকে গোসল দান করা ফরয। তবে ফরযে কেফায়া। কেহ গোসল দান করিলে অপর লোকেরা এই দায়িত্ব হইতে অব্যাহতি লাভ করে। মৃতের গোসলে নাকে পানি দেওয়া ও কুল্লি করান নাই।
পুরুষকে তিন কাপড়ে দাফন করা সুন্নত। (১) কামীস – ইহা গলা হইতে পা পর্যন্ত। (২) ইযার—ইহা মাথা হইতে পা পর্যন্ত। (৩) লেফাফা—ইহাও মাথা হইতে পা পর্যন্ত, তবে বাঁধিবার জন্য ইহার দুই দিকেই কিছু লম্বা রাখিতে হয়। মেয়েলোককে পাঁচ কাপড়ে দাফন করা সুন্নত। কামীস, ইয়ার, লেফাফা, সিনাবন্ধ ও খেমার। সিনাবন্ধ – বগল হইতে হাঁটু পর্যন্ত লম্বা হয়। খেমার—ইহা মাথার উপরে দেওয়া হয় এবং পাশে এক বিঘৎ লম্বা হইলেও চলে।
প্রথমে লেফাফা বিছাইবে। ইহার উপর ইযার বিছাইবে, অতঃপর মুর্দাকে কামীস পরাইয়া ইহার উপর শোয়াইবে। স্ত্রীলোককে কামীস পরানোর পর সিনাবন্ধ ও খেমার পরাইবে। গোসল ও কাফনের বিস্তারিত বিবরণ ফেকাহর কিতাবে দেখিয়া লইবে। — অনুবাদক
মৃত ব্যক্তিকে গোসল দান করা ফরয। তবে ফরযে কেফায়া। কেহ গোসল দান করিলে অপর লোকেরা এই দায়িত্ব হইতে অব্যাহতি লাভ করে। মৃতের গোসলে নাকে পানি দেওয়া ও কুল্লি করান নাই।
পুরুষকে তিন কাপড়ে দাফন করা সুন্নত। (১) কামীস – ইহা গলা হইতে পা পর্যন্ত। (২) ইযার—ইহা মাথা হইতে পা পর্যন্ত। (৩) লেফাফা—ইহাও মাথা হইতে পা পর্যন্ত, তবে বাঁধিবার জন্য ইহার দুই দিকেই কিছু লম্বা রাখিতে হয়। মেয়েলোককে পাঁচ কাপড়ে দাফন করা সুন্নত। কামীস, ইয়ার, লেফাফা, সিনাবন্ধ ও খেমার। সিনাবন্ধ – বগল হইতে হাঁটু পর্যন্ত লম্বা হয়। খেমার—ইহা মাথার উপরে দেওয়া হয় এবং পাশে এক বিঘৎ লম্বা হইলেও চলে।
প্রথমে লেফাফা বিছাইবে। ইহার উপর ইযার বিছাইবে, অতঃপর মুর্দাকে কামীস পরাইয়া ইহার উপর শোয়াইবে। স্ত্রীলোককে কামীস পরানোর পর সিনাবন্ধ ও খেমার পরাইবে। গোসল ও কাফনের বিস্তারিত বিবরণ ফেকাহর কিতাবে দেখিয়া লইবে। — অনুবাদক
১৬৩৪। হযরত উম্মে আতিয়া (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট পৌঁছিলেন, আমরা তখন তাঁহার কন্যা (জয়নব)কে গোসল দান করিতেছিলাম। তিনি আমাদের বলিলেন তাহাকে তিনবার অথবা পাঁচবার অথবা ইহা অপেক্ষা অধিকবার গোসল দান কর—যদি তোমরা আবশ্যক মনে কর বরই পাতার জোশ দেওয়া পানি দ্বারা। কিন্তু শেষবারে কাফুর দিবে। অথবা তিনি বলিয়াছেন, কিছু কাফুর দিবে। যখন তোমরা গোসল দিয়া সারিবে আমাকে খবর দিবে। উম্মে আতিয়া বলেন, আমরা যখন গোসল দিয়া সারিলাম, হুযুরকে খবর দিলাম। হুযুর তখন আমাদিগকে তাহার একটি তহবন্দ ছুড়িয়া দিলেন এবং বলিলেন, ইহা তাহাকে কার্মীসরূপে পরাইয়া দাও।
অপর বর্ণনায় রহিয়াছে, হুযূর আমাদের বলিলেন, বেজোড় গোসল দান করিবে—তিনবার, পাঁচবার অথবা সাতবার এবং গোসল ডান দিক হইতে আরম্ভ করিবে ও ওযুর স্থানসমূহ হইতে আরম্ভ করিবে। উম্মে আতিয়া বলেন, আমরা তাহার চুলকে তিনটি বেণীতে ভাগ করিলাম এবং তাহার পিছন দিকে ছাড়িয়া দিলাম। মোত্তাঃ
অপর বর্ণনায় রহিয়াছে, হুযূর আমাদের বলিলেন, বেজোড় গোসল দান করিবে—তিনবার, পাঁচবার অথবা সাতবার এবং গোসল ডান দিক হইতে আরম্ভ করিবে ও ওযুর স্থানসমূহ হইতে আরম্ভ করিবে। উম্মে আতিয়া বলেন, আমরা তাহার চুলকে তিনটি বেণীতে ভাগ করিলাম এবং তাহার পিছন দিকে ছাড়িয়া দিলাম। মোত্তাঃ
بَابُ غُسْلِ الْمَيِّتِ وَتَكْفِيْنِه
عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ قَالَتْ: دَخَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ نُغَسِّلُ ابْنَتَهُ فَقَالَ: اغْسِلْنَهَا ثَلَاثًا أَوْ خَمْسًا أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكِ إِنْ رَأَيْتُنَّ ذَلِكَ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَاجْعَلْنَ فِي الْآخِرَةِ كَافُورًا أَوْ شَيْئًا مِنْ كَافُورٍ فَإِذَا فَرَغْتُنَّ فَآذِنَّنِي فَلَمَّا فَرَغْنَا آذناه فَألْقى إِلَيْنَا حقوه وَقَالَ: «أَشْعِرْنَهَا إِيَّاهُ» وَفِي رِوَايَةٍ: اغْسِلْنَهَا وِتْرًا: ثَلَاثًا أَوْ خَمْسًا أَوْ سَبْعًا وَابْدَأْنَ بِمَيَامِنِهَا وَمَوَاضِعِ الْوُضُوءِ مِنْهَا . وَقَالَتْ فَضَفَّرْنَا شَعَرَهَا ثَلَاثَةَ قُرُونٍ فألقيناها خلفهَا
হাদীসের ব্যাখ্যা:
১. মুর্দাকে প্রথমবারে পূর্বদিকে কাত করিলেই গোসল ডান দিক হইতে আরম্ভ করা যায়। হানাফী আলেমগণ অন্য হাদীস মতে চুল দুই ভাগ করিয়া বুকের উপর ছাড়িয়া দিতে বলেন।
২. হযরত উম্মু আতিয়্যাহ রাযি. জানান যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্যা হযরত যায়নাব রাযি.-এর ইন্তিকাল হলে তিনি তাঁর গোসল দেওয়ার কাজ করেছিলেন। কোনও কোনও বর্ণনায় যায়নাব রাযি.-এর পরিবর্তে হযরত উম্মু কুলছুম রাযি.-এর নাম বলা হয়েছে। এ কাজে হযরত উম্মু আতিয়্যাহ রাযি.-এর সঙ্গে আরও কয়েকজন মহিলা শরীক ছিলেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে হুকুম দিয়েছিলেন যেন গোসল দেওয়ানোর কাজ মায়্যিতের ডানদিক থেকে শুরু করা হয় এবং প্রথমে ওযুর অঙ্গগুলো ধোওয়ানো হয়। এছাড়া মায়্যিতের গোসলের পানিতে বরইপাতা ব্যবহার করা, গোসলে মায়্যিতের শরীর তিনবার থেকে সাতবার পর্যন্ত ধোওয়ার কথাও তাঁর থেকে বর্ণিত আছে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মায়্যিতকে গোসল দেওয়ানোর কাজটিও ডানদিক থেকে শুরু করা সুন্নত।
খ. ওযুর অঙ্গসমূহ অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় বিশেষ মর্যাদা রাখে, যে কারণে গোসলে এ অঙ্গগুলো আগে ধুইতে বলা হয়েছে। এটাও সুন্নত।
২. হযরত উম্মু আতিয়্যাহ রাযি. জানান যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্যা হযরত যায়নাব রাযি.-এর ইন্তিকাল হলে তিনি তাঁর গোসল দেওয়ার কাজ করেছিলেন। কোনও কোনও বর্ণনায় যায়নাব রাযি.-এর পরিবর্তে হযরত উম্মু কুলছুম রাযি.-এর নাম বলা হয়েছে। এ কাজে হযরত উম্মু আতিয়্যাহ রাযি.-এর সঙ্গে আরও কয়েকজন মহিলা শরীক ছিলেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে হুকুম দিয়েছিলেন যেন গোসল দেওয়ানোর কাজ মায়্যিতের ডানদিক থেকে শুরু করা হয় এবং প্রথমে ওযুর অঙ্গগুলো ধোওয়ানো হয়। এছাড়া মায়্যিতের গোসলের পানিতে বরইপাতা ব্যবহার করা, গোসলে মায়্যিতের শরীর তিনবার থেকে সাতবার পর্যন্ত ধোওয়ার কথাও তাঁর থেকে বর্ণিত আছে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মায়্যিতকে গোসল দেওয়ানোর কাজটিও ডানদিক থেকে শুরু করা সুন্নত।
খ. ওযুর অঙ্গসমূহ অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় বিশেষ মর্যাদা রাখে, যে কারণে গোসলে এ অঙ্গগুলো আগে ধুইতে বলা হয়েছে। এটাও সুন্নত।
২. ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
