মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৬- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
হাদীস নং: ১৬৩৩
৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট যা বলতে হয়
১৬৩৩। তাবেয়ী মুহাম্মাদ ইবনে মুনকাদির (রঃ) বলেন, আমি সাহাবী হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহর নিকট পৌঁছিলাম—তখন তিনি মৃত্যুবরণ করিতেছিলেন—এবং বলিলাম, তথায় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট আমার সালাম বলিবেন। —ইবনে মাজাহ্
وَعَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ قَالَ: دَخَلْتُ عَلَى جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَهُوَ يَمُوتُ فَقُلْتُ: اقْرَأْ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ السَّلَام. رَوَاهُ ابْن مَاجَه
হাদীসের ব্যাখ্যা:
মৃত্যুর পর রূহের স্থানঃ
১৬ ও ১৭ নম্বর হাদীসে বলা হইয়াছে, মু'মিনগণের রূহ্ বেহেশতে থাকিবে। মুসলিম ও তাবরানীর হাদীসে রহিয়াছে—শহীদগণের রূহ্ বেহেশতে থাকিবে। ইহার মীমাংসায় ইবনে কাসীর বলিয়াছেন, সাধারণ (নেক্কার) মু'মিনের রূহও বেহেশতেই থাকিবে, তবে শহীদগণের রূহ্ তথায় বিশেষ মর্যাদা লাভ করিবে এবং বেহেশতের তারকাস্বরূপ হইবে। ইবনুল কাইয়্যিমের কিতাবুররূতে অপরাপর রেওয়ায়ত অনুসারে বলা হইয়াছে-- গোনাহ্গার মু'মিনের রূহ্ বেহেশতে থাকিবে না। তাহাদের কাহারও রূহ্ কিয়ামত পর্যন্ত কবরে আবদ্ধ থাকিবে, কাহারও রূহ্ রক্তের নদীতে সাতার কাটিবে, আর কাহারও রূহ্ অর্থাৎ, যেনাকারদের রূহ্ আগুনের উননে থাকিবে। মোটকথা, যাহারা দুনিয়াতে থাকিয়াও ঊর্ধ্ব জগতের সাথে সম্পর্ক রাখিয়াছে, তাহাদের রূহই ঊর্ধ্ব জগতে যাইবে, আর যাহারা দুনিয়ার মহব্বতে হাবু-ডুবু খাইয়াছে, তাহাদের রূহ্ দুনিয়াতেই আবদ্ধ থাকিবে এবং যাহারা যত নোংরা পথে চলিয়াছে, তাহাদের রূহ্ তত নোংরা স্থানেই অবস্থান করিবে।
তাবেয়ীনদের অনেকের মতে মৃত্যুর পর মু'মিনগণের রূহ্ ইল্লিয়্যীনে আর কাফের ফাজেরদের রূহ্ সিজ্জীনে থাকিবে। অপর কয়েক হাদীসে ইহার প্রতি ইঙ্গিত রহিয়াছে, 'ইল্লিয়্যীন' হইতেছে সপ্তম আকাশে, আর 'সিজ্জীন' হইতেছে যমীনের সর্বনিম্নস্তরে।
আসলে এ সকল হাদীসের মধ্যে কোন বিরোধ নাই। কারণ, মু'মিনের রূহকে মৃত্যুর সাথে সাথেই 'ইল্লিয়্যীনে' লইয়া যাওয়া হয়। তথায় তাহার নাম ও আমলের ফিরিস্তি তৈয়ার করার পর মুনকার ও নকীরের সওয়ালের জন্য কবরে প্রেরণ করা হয়। অতঃপর গোনাহগারদের রূহ্ যমীনে আবদ্ধ থাকে, আর নেক্কারদের রূহ্ 'ইল্লিয়ীনে' অবস্থান করে এবং বেহেশতের ফল খায়। হযরত ইবনে আব্বাসের এক মতানুসারে 'ইল্লিয়্যীন' বেহেশতেরই নাম। এতদ্সত্ত্বেও রূহ্ কবরের সাথে সম্পর্ক রাখে। দেহবিহীন রূহের পক্ষে ইহা মোটেই কষ্টসাধ্য নহে। কারণ, তখন রূহের শক্তি কল্পনাতীতরূপে বাড়িয়া যায় এবং চক্ষের নিমিষে উহা ইল্লিয়্যীন হইতে কবরে আসিতে পারে। জীবিতদের স্বপ্নে আমরা ইহার সামান্য নমুনা দেখিতে পাই।
(তফসীর ইবনে কাসীর, মা'আলিমুত্ তানযীল, দুররে মনসুর, বয়ানুল কুরআন, তফসীরে শিব্বীর আহমদ ওসমানী ও কিতাবুররূহ্ ।) – অনুবাদক
১৬ ও ১৭ নম্বর হাদীসে বলা হইয়াছে, মু'মিনগণের রূহ্ বেহেশতে থাকিবে। মুসলিম ও তাবরানীর হাদীসে রহিয়াছে—শহীদগণের রূহ্ বেহেশতে থাকিবে। ইহার মীমাংসায় ইবনে কাসীর বলিয়াছেন, সাধারণ (নেক্কার) মু'মিনের রূহও বেহেশতেই থাকিবে, তবে শহীদগণের রূহ্ তথায় বিশেষ মর্যাদা লাভ করিবে এবং বেহেশতের তারকাস্বরূপ হইবে। ইবনুল কাইয়্যিমের কিতাবুররূতে অপরাপর রেওয়ায়ত অনুসারে বলা হইয়াছে-- গোনাহ্গার মু'মিনের রূহ্ বেহেশতে থাকিবে না। তাহাদের কাহারও রূহ্ কিয়ামত পর্যন্ত কবরে আবদ্ধ থাকিবে, কাহারও রূহ্ রক্তের নদীতে সাতার কাটিবে, আর কাহারও রূহ্ অর্থাৎ, যেনাকারদের রূহ্ আগুনের উননে থাকিবে। মোটকথা, যাহারা দুনিয়াতে থাকিয়াও ঊর্ধ্ব জগতের সাথে সম্পর্ক রাখিয়াছে, তাহাদের রূহই ঊর্ধ্ব জগতে যাইবে, আর যাহারা দুনিয়ার মহব্বতে হাবু-ডুবু খাইয়াছে, তাহাদের রূহ্ দুনিয়াতেই আবদ্ধ থাকিবে এবং যাহারা যত নোংরা পথে চলিয়াছে, তাহাদের রূহ্ তত নোংরা স্থানেই অবস্থান করিবে।
তাবেয়ীনদের অনেকের মতে মৃত্যুর পর মু'মিনগণের রূহ্ ইল্লিয়্যীনে আর কাফের ফাজেরদের রূহ্ সিজ্জীনে থাকিবে। অপর কয়েক হাদীসে ইহার প্রতি ইঙ্গিত রহিয়াছে, 'ইল্লিয়্যীন' হইতেছে সপ্তম আকাশে, আর 'সিজ্জীন' হইতেছে যমীনের সর্বনিম্নস্তরে।
আসলে এ সকল হাদীসের মধ্যে কোন বিরোধ নাই। কারণ, মু'মিনের রূহকে মৃত্যুর সাথে সাথেই 'ইল্লিয়্যীনে' লইয়া যাওয়া হয়। তথায় তাহার নাম ও আমলের ফিরিস্তি তৈয়ার করার পর মুনকার ও নকীরের সওয়ালের জন্য কবরে প্রেরণ করা হয়। অতঃপর গোনাহগারদের রূহ্ যমীনে আবদ্ধ থাকে, আর নেক্কারদের রূহ্ 'ইল্লিয়ীনে' অবস্থান করে এবং বেহেশতের ফল খায়। হযরত ইবনে আব্বাসের এক মতানুসারে 'ইল্লিয়্যীন' বেহেশতেরই নাম। এতদ্সত্ত্বেও রূহ্ কবরের সাথে সম্পর্ক রাখে। দেহবিহীন রূহের পক্ষে ইহা মোটেই কষ্টসাধ্য নহে। কারণ, তখন রূহের শক্তি কল্পনাতীতরূপে বাড়িয়া যায় এবং চক্ষের নিমিষে উহা ইল্লিয়্যীন হইতে কবরে আসিতে পারে। জীবিতদের স্বপ্নে আমরা ইহার সামান্য নমুনা দেখিতে পাই।
(তফসীর ইবনে কাসীর, মা'আলিমুত্ তানযীল, দুররে মনসুর, বয়ানুল কুরআন, তফসীরে শিব্বীর আহমদ ওসমানী ও কিতাবুররূহ্ ।) – অনুবাদক
