মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৬- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
হাদীস নং: ১৬২৫
৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট যা বলতে হয়
১৬২৫। হুসাইন ইবনে ওয়ায়াহ্ (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, হযরত তালহা ইবনে বারা রোগাক্রান্ত হইলে নবী করীম (ﷺ) তাহাকে দেখিতে আসিলেন এবং বলিলেনঃ আমি দেখিতেছি, তালহার মৃত্যু আসন্ন। সুতরাং তোমরা আমাকে সংবাদ দিও এবং (দাফনে) তাড়াতাড়ি করিও! কেননা, কোন মুসলমানের লাশ তাহার পরিবারের মধ্যে আটক রাখা উচিত নহে। –আবু দাউদ
وَعَنْ حُصَيْنِ بْنِ وَحْوَحٍ أَنَّ طَلْحَةَ بْنَ الْبَرَاءِ مَرِضَ فَأَتَاهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُودُهُ فَقَالَ: «إِنِّي لَا أَرَى طَلْحَةَ إِلَّا قَدْ حَدَثَ بِهِ الْمَوْتُ فَآذِنُونِي بِهِ وَعَجِّلُوا فَإِنَّهُ لَا يَنْبَغِي لِجِيفَةِ مُسْلِمٍ أَنْ تُحْبَسَ بَيْنَ ظَهْرَانَيْ أَهْلِهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে হযরত তালহা ইবনুল বারা রাযি.-এর মুমূর্ষু অবস্থায় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক তাঁকে দেখতে আসা এবং তাঁর মৃত্যু হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে কী করণীয় সে বিষয়ে তাঁর উপদেশ বর্ণিত হয়েছে। হাদীছটি এখানে সংক্ষিপ্ত। বিস্তারিত বর্ণনায় আছে, হযরত তালহা রাযি. একজন তরুণ সাহাবী ছিলেন। তিনি আনসারদের বালিয়া গোত্রের লোক। আমর ইবন আওফ গোত্রের সঙ্গে তাঁর মৈত্রী ছিল।
তিনি ইসলামগ্রহণের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত হন। তখন মসজিদ জনাকীর্ণ ছিল। তিনি মসজিদের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। মজলিস শেষ হওয়ার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বাইরে আসেন, তখন তিনি তাঁর সামনে এগিয়ে আসেন। তাঁর অন্তর ছিল আবেগে আপ্লুত। তিনি প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জড়িয়ে ধরেন। তাঁর হাতে চুমু খান। তারপর আরয করেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি ইসলাম গ্রহণ করতে এসেছি। আপনার হাতে বায়’আত গ্রহন করতে চাই। আমি আপনার যে-কোনও আদেশ পালনে প্রস্তুত।আপনার যা ইচ্ছা হয় আমাকে আদেশ করুন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ভক্তিপূর্ণ এ আবেদনে খুব মুগ্ধ হন। তিনি তাঁকে খানিকটা পরীক্ষাও করতে চাইলেন। বললেন, আমি যদি আদেশ করি তুমি তোমার পিতা-মাতাকে পরিত্যাগ করো? তালহা রাযি. বললেন, না, আমি এটা পারব না। তিনি পিতা-মাতার খুবই অনুগত ছিলেন। তাঁর মাতৃভক্তি ছিল অতি গভীর। তাই তিনি এ আদেশ মানতে তৈরি হতে পারছিলেন না। পরে তিনি আবারও বায়'আতগ্রহণের আবেদন জানান এবং একই বক্তব্য পেশ করেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফের বললেন, আমি যদি তোমাকে তোমার পিতা-মাতাকে পরিত্যাগ করতে আদেশ করি? এবারও তিনি অসম্মতি প্রকাশ করলেন। এভাবে তিনবার। প্রতি মুহূর্তে তাঁর নবীপ্রেম বেড়েই চলছিল। পরিশেষে সে প্রেম আর সব সম্পর্ককে ছাপিয়ে গেল। তিনি পিতা-মাতাকে ছাড়তেও রাজি হয়ে গেলেন। কিন্তু প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে আশ্বস্ত করলেন। বললেন, আমাদের দীন আত্মীয়তা ছিন্ন করাকে অনুমোদন করে না। তারপর তিনি তাঁকে বায়'আত করে নিলেন। অপর এক বর্ণনায় আছে, হযরত তালহা ইবনুল বারা রাযি. বলেছিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার যা ইচ্ছা হয় আদেশ করুন। আমি আপনার কোনও আদেশ অমান্য করব না। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কথায় মুগ্ধ হলেন। তিনি বললেন, যাও, তোমার পিতাকে হত্যা করো। হযরত তালহা রাযি. সঙ্গে সঙ্গে ছুটলেন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে থামিয়ে দিলেন। বললেন, আমাদের দীন আত্মীয়তা ছিন্ন করতে বলে না। আমি কেবল তোমাকে পরীক্ষাই করতে চেয়েছিলাম।
যাহোক হযরত তালহা ইবনুল বারা রাযি. পিতা-মাতার খুব বাধ্য ও অনুগত ছিলেন। সেইসঙ্গে তিনি নবীপ্রেমে ছিলেন আপ্লুত। তাঁর আশা ছিল কোনও যুদ্ধে অংশগ্রহণের - সুযোগ হলে তিনি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করবেন। তিনি সেজন্য প্রস্তুতিও গ্রহণ করছিলেন। বিপুল উদ্যমে অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। কিন্তু আল্লাহ তা'আলার ইচ্ছা ছিল অন্যরকম। তাঁর আয়ু ছিল বড় সংক্ষিপ্ত। অল্পদিনের মধ্যেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দিন দিন তাঁর অসুস্থতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এক পর্যায়ে একদম শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। একদিন রাতের বেলা তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খবর দেওয়া হল। তিনি দ্রুত চলে আসলেন। এসে যা দেখেন তাতে তাঁর প্রবল ধারণা জন্মায় তালহা রাযি. আর সুস্থ হবেন না। তাঁর মৃত্যু আসন্ন। তিনি তাঁর এ সন্দেহের কথা পরিবারের কাছে প্রকাশও করেন। সেই সঙ্গে তাদের বলে দেন, তালহার মৃত্যু হয়ে গেলে আমাকে খবর দিয়ো এবং তার দাফন-কাফন খুব দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা করো। কেননা কোনও মুসলিম ব্যক্তির লাশ তার পরিবারবর্গের মধ্যে আটকে রাখা সমীচীন নয়। এই বলে তিনি চলে গেলেন। এ পর্যন্ত হযরত তালহা রাযি, অচেতন অবস্থায় ছিলেন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমন ও তাঁর উপদেশ কোনওকিছুই তিনি অনুভব করতে পারেননি। পরে তাঁর কিছুটা চেতনা ফিরে আসে। তিনি জিজ্ঞেস করে জানতে পারলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে দেখতে এসেছিলেন। তারপর তিনি পরিবারের লোকজনকে বললেন, দেখো, এই রাতে আমি মারা গেলে তোমরা নিজেরাই আমাকে দাফন করে ফেলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খবর দিয়ো না। ইহুদিরা তাঁর শত্রু। আমার ভয় হয় রাতের অন্ধকারে তারা তাঁকে পেয়ে গেলে কোনও ক্ষতি করতে পারে। এরপর আর তিনি সময় নিলেন না। অল্পক্ষণের মধ্যেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। রাতের মধ্যেই তাঁর দাফন-কাফন হয়ে গেল। পরের দিন ভোরবেলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ খবর দেওয়া হল। তিনি উপস্থিত সাহাবীদের নিয়ে তাঁর বাড়িতে চলে আসলেন। জিজ্ঞেস করলেন, রাতেই কেন তাঁকে জানানো হল না? তারা ওজর পেশ করলেন এবং হযরত তালহা রাযি.-এর আশঙ্কার কথা বললেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কবরের কাছে উপস্থিত হলেন। সঙ্গীদেরকে সারিবদ্ধ করলেন। তারপর হাত তুলে দু'আ করলেন। সে দু'আয় বললেন, হে আল্লাহ! আপনি তালহার সঙ্গে এ অবস্থায় সাক্ষাৎ করুন যে, আপনি তার দিকে তাকিয়ে হাসবেন আর সেও আপনার দিকে তাকিয়ে হাসবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সন্তান, পিতা-মাতা ও অন্য সকলের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে।
খ. ইসলামে আত্মীয়তা ছিন্ন করা জায়েয নয়।
গ. কারও মৃত্যুর পর তার কাফন-দাফনে বিলম্ব করতে নেই।
ঘ. কারও অসুস্থ হওয়ার সংবাদ পেলে তাকে অবশ্যই দেখতে যাওয়া উচিত।
ঙ. নেতৃপর্যায়ের ব্যক্তিদের কর্তব্য সাধারণ শ্রেণির লোকদের খোঁজখবর রাখা এবং তাদের কেউ অসুস্থ হলে তাকে অবজ্ঞা না করে বরং তার শয্যাপাশে উপস্থিত হওয়া।
তিনি ইসলামগ্রহণের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত হন। তখন মসজিদ জনাকীর্ণ ছিল। তিনি মসজিদের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। মজলিস শেষ হওয়ার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বাইরে আসেন, তখন তিনি তাঁর সামনে এগিয়ে আসেন। তাঁর অন্তর ছিল আবেগে আপ্লুত। তিনি প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জড়িয়ে ধরেন। তাঁর হাতে চুমু খান। তারপর আরয করেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি ইসলাম গ্রহণ করতে এসেছি। আপনার হাতে বায়’আত গ্রহন করতে চাই। আমি আপনার যে-কোনও আদেশ পালনে প্রস্তুত।আপনার যা ইচ্ছা হয় আমাকে আদেশ করুন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ভক্তিপূর্ণ এ আবেদনে খুব মুগ্ধ হন। তিনি তাঁকে খানিকটা পরীক্ষাও করতে চাইলেন। বললেন, আমি যদি আদেশ করি তুমি তোমার পিতা-মাতাকে পরিত্যাগ করো? তালহা রাযি. বললেন, না, আমি এটা পারব না। তিনি পিতা-মাতার খুবই অনুগত ছিলেন। তাঁর মাতৃভক্তি ছিল অতি গভীর। তাই তিনি এ আদেশ মানতে তৈরি হতে পারছিলেন না। পরে তিনি আবারও বায়'আতগ্রহণের আবেদন জানান এবং একই বক্তব্য পেশ করেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফের বললেন, আমি যদি তোমাকে তোমার পিতা-মাতাকে পরিত্যাগ করতে আদেশ করি? এবারও তিনি অসম্মতি প্রকাশ করলেন। এভাবে তিনবার। প্রতি মুহূর্তে তাঁর নবীপ্রেম বেড়েই চলছিল। পরিশেষে সে প্রেম আর সব সম্পর্ককে ছাপিয়ে গেল। তিনি পিতা-মাতাকে ছাড়তেও রাজি হয়ে গেলেন। কিন্তু প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে আশ্বস্ত করলেন। বললেন, আমাদের দীন আত্মীয়তা ছিন্ন করাকে অনুমোদন করে না। তারপর তিনি তাঁকে বায়'আত করে নিলেন। অপর এক বর্ণনায় আছে, হযরত তালহা ইবনুল বারা রাযি. বলেছিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার যা ইচ্ছা হয় আদেশ করুন। আমি আপনার কোনও আদেশ অমান্য করব না। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কথায় মুগ্ধ হলেন। তিনি বললেন, যাও, তোমার পিতাকে হত্যা করো। হযরত তালহা রাযি. সঙ্গে সঙ্গে ছুটলেন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে থামিয়ে দিলেন। বললেন, আমাদের দীন আত্মীয়তা ছিন্ন করতে বলে না। আমি কেবল তোমাকে পরীক্ষাই করতে চেয়েছিলাম।
যাহোক হযরত তালহা ইবনুল বারা রাযি. পিতা-মাতার খুব বাধ্য ও অনুগত ছিলেন। সেইসঙ্গে তিনি নবীপ্রেমে ছিলেন আপ্লুত। তাঁর আশা ছিল কোনও যুদ্ধে অংশগ্রহণের - সুযোগ হলে তিনি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করবেন। তিনি সেজন্য প্রস্তুতিও গ্রহণ করছিলেন। বিপুল উদ্যমে অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। কিন্তু আল্লাহ তা'আলার ইচ্ছা ছিল অন্যরকম। তাঁর আয়ু ছিল বড় সংক্ষিপ্ত। অল্পদিনের মধ্যেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দিন দিন তাঁর অসুস্থতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এক পর্যায়ে একদম শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। একদিন রাতের বেলা তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খবর দেওয়া হল। তিনি দ্রুত চলে আসলেন। এসে যা দেখেন তাতে তাঁর প্রবল ধারণা জন্মায় তালহা রাযি. আর সুস্থ হবেন না। তাঁর মৃত্যু আসন্ন। তিনি তাঁর এ সন্দেহের কথা পরিবারের কাছে প্রকাশও করেন। সেই সঙ্গে তাদের বলে দেন, তালহার মৃত্যু হয়ে গেলে আমাকে খবর দিয়ো এবং তার দাফন-কাফন খুব দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা করো। কেননা কোনও মুসলিম ব্যক্তির লাশ তার পরিবারবর্গের মধ্যে আটকে রাখা সমীচীন নয়। এই বলে তিনি চলে গেলেন। এ পর্যন্ত হযরত তালহা রাযি, অচেতন অবস্থায় ছিলেন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমন ও তাঁর উপদেশ কোনওকিছুই তিনি অনুভব করতে পারেননি। পরে তাঁর কিছুটা চেতনা ফিরে আসে। তিনি জিজ্ঞেস করে জানতে পারলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে দেখতে এসেছিলেন। তারপর তিনি পরিবারের লোকজনকে বললেন, দেখো, এই রাতে আমি মারা গেলে তোমরা নিজেরাই আমাকে দাফন করে ফেলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খবর দিয়ো না। ইহুদিরা তাঁর শত্রু। আমার ভয় হয় রাতের অন্ধকারে তারা তাঁকে পেয়ে গেলে কোনও ক্ষতি করতে পারে। এরপর আর তিনি সময় নিলেন না। অল্পক্ষণের মধ্যেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। রাতের মধ্যেই তাঁর দাফন-কাফন হয়ে গেল। পরের দিন ভোরবেলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ খবর দেওয়া হল। তিনি উপস্থিত সাহাবীদের নিয়ে তাঁর বাড়িতে চলে আসলেন। জিজ্ঞেস করলেন, রাতেই কেন তাঁকে জানানো হল না? তারা ওজর পেশ করলেন এবং হযরত তালহা রাযি.-এর আশঙ্কার কথা বললেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কবরের কাছে উপস্থিত হলেন। সঙ্গীদেরকে সারিবদ্ধ করলেন। তারপর হাত তুলে দু'আ করলেন। সে দু'আয় বললেন, হে আল্লাহ! আপনি তালহার সঙ্গে এ অবস্থায় সাক্ষাৎ করুন যে, আপনি তার দিকে তাকিয়ে হাসবেন আর সেও আপনার দিকে তাকিয়ে হাসবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সন্তান, পিতা-মাতা ও অন্য সকলের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে।
খ. ইসলামে আত্মীয়তা ছিন্ন করা জায়েয নয়।
গ. কারও মৃত্যুর পর তার কাফন-দাফনে বিলম্ব করতে নেই।
ঘ. কারও অসুস্থ হওয়ার সংবাদ পেলে তাকে অবশ্যই দেখতে যাওয়া উচিত।
ঙ. নেতৃপর্যায়ের ব্যক্তিদের কর্তব্য সাধারণ শ্রেণির লোকদের খোঁজখবর রাখা এবং তাদের কেউ অসুস্থ হলে তাকে অবজ্ঞা না করে বরং তার শয্যাপাশে উপস্থিত হওয়া।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
