মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৫- নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ১৫০৮
৫২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - বৃষ্টির জন্য সালাত
১৫০৮। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, একবার লোকেরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট অনাবৃষ্টির অভিযোগ করিল। তিনি একটি মিম্বর স্থাপন করিতে বলিলেন, সেমতে তাঁহার জন্য ঈদগাহে একটি মিম্বর স্থাপন করা হইল। তিনি এক (নির্দিষ্ট) তারিখে ঈদগাহে বাহির হইবেন বলিয়া লোকদিগকে কথা দিলেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন, সেমতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) (ঈদগাহের দিকে) বাহির হইলেন যখন সূর্যের কিনারা দেখা দিল এবং মিম্বরে উঠিয়া বসিলেন। অতঃপর আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা করিলেন ও তাঁহার প্রশংসা করিলেন। তৎপর বলিলেনঃ তোমরা তোমাদের শহরে অনাবৃষ্টি এবং বৃষ্টির নির্দিষ্ট মওসুম অতিক্রম করার অভিযোগ করিয়াছ। আল্লাহ্ তোমাদের নির্দেশ দিয়াছেন তোমরা যেন তাঁহাকে ডাক এবং তিনি ওয়াদা দিয়াছেন তোমাদের ডাকে তিনি সাড়া দিবেন। অতঃপর বলিলেন, “আল্লাহ্ই সমস্ত প্রশংসা যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক, প্রভু, দয়াময় ও দয়ালু, প্রতিফল দিবসের মালিক। আল্লাহ্ ব্যতীত কোন মা'বূদ নাই। তিনি যাহা ইচ্ছা তাহা করেন। হে আল্লাহ্! তুমিই আল্লাহ্। তুমি ব্যতীত কোন মা'বূদ নাই। তুমি বেনিয়ায, কাহারও মুখাপেক্ষী নও আর আমরা তোমার মুখাপেক্ষী। আমাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষণ কর। আর যাহা বর্ষণ করিবে তাহাকে আমাদের শক্তির কারণ এবং দীর্ঘ সময়ের পাথেয় কর।” অতঃপর আপন হস্তদ্বয় উঠাইলেন এবং এত উঠাইলেন, যাহাতে তাঁহার বগলের সাদা অংশ প্রকাশিত হইয়া গেল। তৎপর জনতার দিকে পিঠ দিলেন এবং আপন চাদর ঘুরাইয়া লইলেন, অথচ তখনও তাঁহার হস্তদ্বয় উঠান ছিল। অতঃপর লোকের দিকে মুখ করিলেন এবং নামিয়া পড়িলেন এবং দুই রাকআত নামায পড়িলেন। তখন আল্লাহ্ তা'আলা এক মেঘের সৃষ্টি করিলেন, মেঘ গর্জন করিল এবং বিদ্যুৎ চমকাইল। তৎপর আল্লাহর হুকুমে বৃষ্টি বর্ষিত হইল এবং তিনি তাহার মসজিদ পর্যন্ত না পৌঁছিতেই ঢল নামিয়া গেল। এসময় যখন তিনি লোকদিগকে আশ্রয়ের দিকে দৌড়িতে দেখিলেন, হাসিয়া দিলেন যাহাতে তাঁহার সম্মুখের দাঁতসমূহ প্রকাশিত হইয়া গেল (অথচ তিনি কখনও দাঁত খুলিয়া হাসিতেন না)। তখন তিনি বলিলেন, আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ্ তা'আলা প্রত্যেক বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান এবং ইহাও সাক্ষ্য দিতেছি যে, আমি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁহার রাসূল। –আবু দাউদ
عَن عَائِشَة قَالَتْ: شَكَا النَّاسُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُحُوطَ الْمَطَرِ فَأَمَرَ بِمِنْبَرٍ فَوُضِعَ لَهُ فِي الْمُصَلَّى وَوَعَدَ النَّاسَ يَوْمًا يَخْرُجُونَ فِيهِ. قَالَتْ عَائِشَةُ: فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ بَدَا حَاجِبُ الشَّمْسِ فَقَعَدَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَكَبَّرَ وَحَمِدَ اللَّهَ عزوجل ثُمَّ قَالَ: «إِنَّكُمْ شَكَوْتُمْ جَدْبَ دِيَارِكُمْ وَاسْتِئْخَارَ الْمَطَرِ عَنْ إِبَّانِ زَمَانِهِ عَنْكُمْ وَقَدْ أَمَرَكُمُ الله عزوجل أَنْ تَدْعُوهُ وَوَعَدَكُمْ أَنْ يَسْتَجِيبَ لَكُمْ» . ثُمَّ قَالَ: «الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ملك يَوْمِ الدِّينِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ اللَّهُمَّ أَنْتَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ الْغَنِيُّ وَنَحْنُ الْفُقَرَاءُ. أَنْزِلْ عَلَيْنَا الْغَيْثَ وَاجْعَلْ مَا أَنْزَلْتَ لَنَا قُوَّةً وَبَلَاغًا إِلَى حِينٍ» ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ فَلَمْ يَتْرُكِ الرَّفْعَ حَتَّى بَدَا بَيَاضُ إِبِطَيْهِ ثُمَّ حَوَّلَ إِلَى النَّاسِ ظَهْرَهُ وَقَلَبَ أَوْ حَوَّلَ رِدَاءَهُ وَهُوَ رَافِعُ يَدَيْهِ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ وَنَزَلَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ فَأَنْشَأَ اللَّهُ سَحَابَةً فَرَعَدَتْ وَبَرَقَتْ ثُمَّ أَمْطَرَتْ بِإِذْنِ اللَّهِ فَلَمْ يَأْتِ مَسْجِدَهُ حَتَّى سَالَتِ السُّيُولُ فَلَمَّا رَأَى سُرْعَتَهُمْ إِلَى الْكن ضحك صلى الله عَلَيْهِ وَسلم حَتَّى بَدَت نَوَاجِذه فَقَالَ: «أَشْهَدُ أَنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ وَأَنِّي عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
