মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৫- নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ১২৯৮
৩৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রমাযান মাসের ক্বিয়াম (তারাবীহ সালাত)
১২৯৮। হযরত আবু যর গেফারী (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সহিত রোযা রাখিয়াছি; কিন্তু তিনি মাসের কোন অংশেই আমাদের লইয়া নফল নামায জামাআতে পড়েন নাই, যাবৎ না মাসের মাত্র সাত রাত্রি অবশিষ্ট রহিল। সপ্তম রাতে তিনি আমাদের লইয়া নামায পড়িতে রহিলেন, যাহাতে রাত্রির এক-তৃতীয়াংশ শেষ হইয়া গেল। যখন ষষ্ঠ রাত্রি আসিল, তিনি আমাদের লইয়া নামায পড়িলেন না। অতঃপর যখন পঞ্চম রাত্রি আসিল, তিনি আমাদের লইয়া নামায পড়িতে রহিলেন যাহাতে অর্ধ রাত্রি গোজারিয়া গেল। আবু যর বলেন, আমি বলিলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্! এ রাত্রিতে যদি আমাদের লইয়া আরও অধিক নামায পড়িতেন। তখন হুযূর (ﷺ) বলিলেনঃ কেহ যখন ইমামের সহিত নামায পড়ে, ইমামের শেষ করা পর্যন্ত উহা তাহার জন্য পূর্ণ রাত্রির নামায পড়ার সমান গণ্য করা হয়। যখন চতুর্থ রাত্রি আসিল, তিনি আমাদের সহকারে নামায পড়িলেন না, যাবৎ না রাত্রির মাত্র এক-তৃতীয়াংশ বাকী রহিল, আবার যখন তৃতীয় রাত্রি আসিল, তিনি তাঁহার পরিবারের লোক ও আপন বিবিদের একত্র করিলেন এবং আমাদের লইয়া সারা রাত্রি নামায পড়িতে রহিলেন, যাহাতে আমরা আশংকা করিতে লাগিলাম যে, আমাদের সেহরী খাওয়া পর্যন্ত না ফউত হইয়া যায়। অতঃপর মাসের অবশিষ্ট রাত্রিসমূহ তিনি আর আমাদের লইয়া নামায পড়িলেন না। —আবু দাউদ, তিরমিযী ও নাসায়ী। আর ইবনে মাজাহ্ ইহার অনুরূপ। কিন্তু তিরমিযী 'অতঃপর মাসের অবশিষ্ট..........' বাক্যটির উল্লেখ করেন নাই।
عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: صُمْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَمَضَانَ فَلَمْ يَقُمْ بِنَا شَيْئًا مِنَ الشَّهْرِ حَتَّى بَقِيَ سَبْعٌ فَقَامَ بِنَا حَتَّى ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ فَلَمَّا كَانَتِ السَّادِسَةُ لَمْ يَقُمْ بِنَا فَلَمَّا كَانَتِ الْخَامِسَةُ قَامَ بِنَا حَتَّى ذهب شطر اللَّيْل فَقلت: يارسول الله لَو نفلتنا قيام هَذِه اللَّيْلَة. قَالَ فَقَالَ: «إِنَّ الرَّجُلَ إِذَا صَلَّى مَعَ الْإِمَامِ حَتَّى ينْصَرف حسب لَهُ قيام اللَّيْلَة» . قَالَ: فَلَمَّا كَانَت الرَّابِعَة لم يقم فَلَمَّا كَانَتِ الثَّالِثَةُ جَمَعَ أَهْلَهُ وَنِسَاءَهُ وَالنَّاسَ فَقَامَ بِنَا حَتَّى خَشِينَا أَنْ يَفُوتَنَا الْفَلَاحُ. قَالَ قُلْتُ: وَمَا الْفَلَاحُ؟ قَالَ: السَّحُورُ. ثُمَّ لَمْ يَقُمْ بِنَا بَقِيَّةَ الشَّهْرِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَرَوَى ابْنُ مَاجَهْ نَحْوَهُ إِلَّا أَنَّ التِّرْمِذِيَّ لَمْ يَذْكُرْ: ثُمَّ لَمْ يَقُمْ بِنَا بَقِيَّة الشَّهْر
হাদীসের ব্যাখ্যা:
রমযানের চাঁদ যে রাতে উদিত হয় সে রাত্রি হইল মাসের প্রথম রাত্রি। হযরত আবু যর (রাঃ) মাসের শেষের দিক হইতে গণনা আরম্ভ করায় যথাক্রমে ২৯ তারিখ অন্তের রাত্রি প্রথম এবং ২২ তারিখ অন্তের রাত্রি সপ্তম হইয়াছে।
মোটকথা, রমযান মাসের কয় রাত্রি হুযূর (ﷺ) সাহাবীগণকে লইয়া নফল নামায জামাআতে পড়িয়াছেন, আর আমরা ইহাকেই তারাবী বলি। সুতরাং তারাবীর জামাআত রাসূলের সুন্নত নহে—এইরূপ বলা ভুল।
মোটকথা, রমযান মাসের কয় রাত্রি হুযূর (ﷺ) সাহাবীগণকে লইয়া নফল নামায জামাআতে পড়িয়াছেন, আর আমরা ইহাকেই তারাবী বলি। সুতরাং তারাবীর জামাআত রাসূলের সুন্নত নহে—এইরূপ বলা ভুল।
