মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৫- নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ১১৯৫
৩১. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১১৯৫। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, একবার আমি আমার খালা 'উন্মুল মু'মিনীন' হযরত মায়মুনার গৃহে রাত্রি যাপন করিলাম, আর নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও সেই রাতে তাঁহার গৃহেই ছিলেন। তিনি (এশার পর) তাহার পরিবারের সহিত কিছু সময় আলাপ করিলেন, অতঃপর নিদ্রা গেলেন। যখন রাত্রির শেষ তৃতীয়াংশ অথবা উহার কিয়দাংশ অবশিষ্ট রহিল, তিনি উঠিয়া বসিলেন। অতঃপর আকাশের দিকে দৃষ্টি করিয়া এই আয়াত পাঠ করিতে লাগিলেন
“নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং রাত্র-দিনের পরিবর্তনের মধ্যে জ্ঞানবানগণের জন্য নিদর্শনসমূহ রহিয়াছে।" —এমন কি তিনি সূরা (আলে ইমরান) শেষ করিয়া ফেলিলেন। অতঃপর তিনি মশকের দিকে গেলেন এবং উহার মুখের রশি খুলিয়া দিলেন। তৎপর একটি বড় পেয়ালায় পানি ঢালিলেন এবং পানি কম ও বেশী ব্যয় না করিয়া উত্তমরূপে ওযু করিলেন। অর্থাৎ, পানি অতিরিক্ত ব্যয় করিলেন না, অথচ ওযূর সর্বাঙ্গে পানি পৌঁছাইলেন। ইহার পর দাঁড়াইলেন এবং নামায পড়িতে আরম্ভ করিলেন। এসময় আমি উঠিলাম এবং ওযু করিয়া তাহার বাম পার্শ্বে দাড়াইয়া গেলাম। তখন হুযুর আমার কান ধরিলেন এবং ঘুরাইয়া আমাকে তাঁহার ডান পার্শ্বে লইয়া গেলেন। দেখিলাম, তাহার নামায (বিতিরসহ) তের রাকআতে সমাপ্ত হইল। অতঃপর (ডান) পার্শ্বে শয়ন করিলেন এবং ঘুমাইয়া পড়িলেন, যাহাতে তাহার নাক ডাকা আরম্ভ হইল—তিনি যখন ঘুমাইতেন তাহার নাক ডাকিত। অতঃপর হযরত বেলাল আসিয়া তাহাকে ফজরের নামাযের কথা স্মরণ করাইয়া দিলেন। তখন তিনি উঠিয়া নামায পড়িলেন, অথচ ওযু করিলেন না। এসময় ফজরের সুন্নত ও ফরযের মধ্যবর্তীকালে তাহার দোআ ছিল এইরূপ- "আল্লাহ্! তুমি সৃষ্টি কর আমার অন্তরে নূর (আলো), আমার চোখে নূর, আমার কানে নূর, আমার ডান দিকে নূর, আমার বাম দিকে নূর, আমার উপরে নূর, আমার নীচে নূর, আমার সম্মুখে নূর, আমার পিছনে নূর। আল্লাহ, তুমি আমার জন্য সৃষ্টি কর নূর।"
কোন কোন রাবী (হাদীসের অংশরূপে) ইহা অধিক বলিয়াছেন, "আর আমার জিহ্বায় নূর” এবং আরও অধিক বলিয়াছেন, "আমার শিরা-উপশিরায়, আমার গোশতে, আমার রক্তে, আমার পশমে ও আমার চর্মে (নূর)।" এ পর্যন্ত বোখারী ও মুসলিম এক রাবী হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তাহাদের অপর বর্ণনায় অপর রাবী প্রমুখাৎ রহিয়াছে, “(আল্লাহ্) সৃষ্টি কর তুমি আমার প্রাণে নূর এবং মহান কর আমার নূর।" মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় রহিয়াছে, “(আল্লাহ্!) আমাকে দান কর নূর।
“নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং রাত্র-দিনের পরিবর্তনের মধ্যে জ্ঞানবানগণের জন্য নিদর্শনসমূহ রহিয়াছে।" —এমন কি তিনি সূরা (আলে ইমরান) শেষ করিয়া ফেলিলেন। অতঃপর তিনি মশকের দিকে গেলেন এবং উহার মুখের রশি খুলিয়া দিলেন। তৎপর একটি বড় পেয়ালায় পানি ঢালিলেন এবং পানি কম ও বেশী ব্যয় না করিয়া উত্তমরূপে ওযু করিলেন। অর্থাৎ, পানি অতিরিক্ত ব্যয় করিলেন না, অথচ ওযূর সর্বাঙ্গে পানি পৌঁছাইলেন। ইহার পর দাঁড়াইলেন এবং নামায পড়িতে আরম্ভ করিলেন। এসময় আমি উঠিলাম এবং ওযু করিয়া তাহার বাম পার্শ্বে দাড়াইয়া গেলাম। তখন হুযুর আমার কান ধরিলেন এবং ঘুরাইয়া আমাকে তাঁহার ডান পার্শ্বে লইয়া গেলেন। দেখিলাম, তাহার নামায (বিতিরসহ) তের রাকআতে সমাপ্ত হইল। অতঃপর (ডান) পার্শ্বে শয়ন করিলেন এবং ঘুমাইয়া পড়িলেন, যাহাতে তাহার নাক ডাকা আরম্ভ হইল—তিনি যখন ঘুমাইতেন তাহার নাক ডাকিত। অতঃপর হযরত বেলাল আসিয়া তাহাকে ফজরের নামাযের কথা স্মরণ করাইয়া দিলেন। তখন তিনি উঠিয়া নামায পড়িলেন, অথচ ওযু করিলেন না। এসময় ফজরের সুন্নত ও ফরযের মধ্যবর্তীকালে তাহার দোআ ছিল এইরূপ- "আল্লাহ্! তুমি সৃষ্টি কর আমার অন্তরে নূর (আলো), আমার চোখে নূর, আমার কানে নূর, আমার ডান দিকে নূর, আমার বাম দিকে নূর, আমার উপরে নূর, আমার নীচে নূর, আমার সম্মুখে নূর, আমার পিছনে নূর। আল্লাহ, তুমি আমার জন্য সৃষ্টি কর নূর।"
কোন কোন রাবী (হাদীসের অংশরূপে) ইহা অধিক বলিয়াছেন, "আর আমার জিহ্বায় নূর” এবং আরও অধিক বলিয়াছেন, "আমার শিরা-উপশিরায়, আমার গোশতে, আমার রক্তে, আমার পশমে ও আমার চর্মে (নূর)।" এ পর্যন্ত বোখারী ও মুসলিম এক রাবী হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তাহাদের অপর বর্ণনায় অপর রাবী প্রমুখাৎ রহিয়াছে, “(আল্লাহ্) সৃষ্টি কর তুমি আমার প্রাণে নূর এবং মহান কর আমার নূর।" মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় রহিয়াছে, “(আল্লাহ্!) আমাকে দান কর নূর।
بَابُ صَلَاةِ اللَّيْلِ
وَعَن ابْن عَبَّاس قَالَ: بِتُّ عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ لَيْلَةً وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَهَا فَتَحَدَّثَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَ أَهْلِهِ سَاعَةً ثُمَّ رَقَدَ فَلَمَّا كَانَ ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ أَوْ بَعْضُهُ قَعَدَ فَنَظَرَ إِلَى السَّمَاءِ فَقَرَأَ: (إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْل وَالنَّهَار لآيَات لأولي الْأَلْبَاب حَتَّى خَتَمَ السُّورَةَ ثُمَّ قَامَ إِلَى الْقِرْبَةِ فَأَطْلَقَ شِنَاقَهَا ثُمَّ صَبَّ فِي الْجَفْنَةِ ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءًا حَسَنًا بَيْنَ الْوُضُوءَيْنِ لَمْ يُكْثِرْ وَقَدْ أَبْلَغَ فَقَامَ فَصَلَّى فَقُمْتُ وَتَوَضَّأْتُ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَ بِأُذُنِي فَأَدَارَنِي عَنْ يَمِينِهِ فَتَتَامَّتْ صَلَاتُهُ ثَلَاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ اضْطَجَعَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ وَكَانَ إِذَا نَامَ نَفَخَ فَآذَنَهُ بِلَالٌ بِالصَّلَاةِ فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ وَكَانَ فِي دُعَائِهِ: «اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا وَفِي بَصَرِي نُورًا وَفِي سَمْعِي نُورًا وَعَنْ يَمِينِي نُورًا وَعَنْ يَسَارِي نُورًا وَفَوْقِي نُورًا وتحتي نورا وأمامي نورا وَخَلْفِي نُورًا وَاجْعَلْ لِي نُورًا» وَزَادَ بَعْضُهُمْ: «وَفِي لِسَانِي نُورًا» وَذُكِرَ: وَعَصَبِي وَلَحْمِي وَدَمِي وَشِعَرِي وبشري)
وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا: «وَاجْعَلْ فِي نَفْسِي نُورًا وَأَعْظِمْ لِي نُورًا» وَفِي أُخْرَى لِمُسْلِمٍ: «اللَّهُمَّ أَعْطِنِي نورا»
وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا: «وَاجْعَلْ فِي نَفْسِي نُورًا وَأَعْظِمْ لِي نُورًا» وَفِي أُخْرَى لِمُسْلِمٍ: «اللَّهُمَّ أَعْطِنِي نورا»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
নিদ্রা দ্বারা ওযু ভঙ্গ না হওয়া হুয়ূরের বৈশিষ্ট্য ছিল। আমাদের কেহ এইরূপ করিলে তাহার ওযু ভঙ্গ হইয়া যাইবে।
এই দো'আটিকে ‘দোআয়ে তবীল' বা দীর্ঘ দো'আ বলা হইয়া থাকে। এই দো'আর দ্বারা দো'আ করিয়া কেহ অন্তরে নূর লাভ করে নাই এইরূপ ঘটনা খুব কমই দেখা গিয়াছে।
এই দো'আটিকে ‘দোআয়ে তবীল' বা দীর্ঘ দো'আ বলা হইয়া থাকে। এই দো'আর দ্বারা দো'আ করিয়া কেহ অন্তরে নূর লাভ করে নাই এইরূপ ঘটনা খুব কমই দেখা গিয়াছে।
