মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৫- নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ১১৫৩
২৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দু’বার সালাত আদায় করা
১১৫৩। তাবেয়ী হযরত বুসর ইবনে মেহজান তাঁহার পিতা মেহজান হইতে বর্ণনা করেন, তাঁহার পিতা একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সহিত এক মজলিসে ছিলেন। তখন নামাযের আযান হইল এবং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) দাঁড়াইলেন। অতঃপর নামায পড়িলেন ও (মজলিসে) প্রত্যাবর্তন করিলেন, অথচ মেহজান তখনও নিজ জায়গায়ই আছেন। ইহা দেখিয়া রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমাকে লোকের সহিত নামায পড়িতে কিসে বাধা দিল, তুমি কি একজন মুসলমান নও? তখন তিনি বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! নিশ্চয়, (আমি মুসলমান।) তবে আমি আমার ঘরে নামায পড়িয়া লইয়াছি। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাহাকে বলিলেনঃ যখন তুমি নামায পড়িয়া মসজিদে আসিবে আর মসজিদে তখন নামায শুরু হইবে, তুমিও লোকের সহিত নামাযে শরীক হইয়া যাইবে, যদিও তুমি (ঘরে) নামায পড়িয়া থাক। — মালেক ও নাসায়ী
وَعَن بسر بن محجن عَن أَبِيه أَنَّهُ كَانَ فِي مَجْلِسٍ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأُذِّنَ بِالصَّلَاةِ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصَلَّى وَرَجَعَ وَمِحْجَنٌ فِي مَجْلِسِهِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَ النَّاسِ؟ أَلَسْتَ بِرَجُلٍ مُسْلِمٍ؟» فَقَالَ: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ وَلَكِنِّي كُنْتُ قَدْ صَلَّيْتُ فِي أَهْلِي فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا جِئْتَ الْمَسْجِدَ وَكُنْتَ قَدْ صَلَّيْتَ فَأُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَصَلِّ مَعَ النَّاسِ وَإِنْ كُنْتَ قَدْ صَلَّيْتَ» . رَوَاهُ مَالك وَالنَّسَائِيّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, কেউ একাকী নামায পড়ার পরে যদি কোন কারণে আবার ঐ নামাযের জামাতে উপস্থিত হয় তাহলে সে তাদের সাথে পুনরায় নামায পড়বে। (শামী: ২/৫৩) অবশ্য কোন্টি ফরয আর কোন্টি নফল হবে সে ব্যাপারে এ হাদীসে কিছু বলা হয়নি। হযরত আবু যর রা. থেকে মুসলিম: ১৩৪০, ১৩৪১ ও ১৩৪২ নাম্বার হাদীসে বর্ণিত আছে যে, একাকী নামায আদায়ের পরে জামাতে শরিক হলে জামাতের নামাযটি হবে তার জন্য নফল। এ কথা থেকে আরো একটি মাসআলা বের হয় যে, যে সব নামাযের পরে রসূলুলস্নাহ স. নফল পড়তে নিষেধ করেছেন সে সব ফরয নামাযের ক্ষেত্রে এ নিয়ম কার্যকর হবে না। অন্যথায় এ আমল উক্ত হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে যাবে। সুতরাং ফজর এবং আছরের নামাযে এটা করা যাবে না। কেননা এ দুই নামাযের পরে নফল পড়া নিষেধ। যে সব হাদীসে এ দুই নামাযের পরে জামাতে শরিক হওয়ার নির্দেশ পাওয়া যায় সেগুলো হয়তো ইসলামের প্রথম দিকের ঘটনা যখন ফজর এবং আছরের নামাযের পরে নফল পড়ার নিষেধাজ্ঞা জারী হয়নি। আর মাগরিবের নামাযের পরেও এটা করা যাবে না। কেননা নফল নামায বেজোড় পড়ার আমল প্রমাণিত নয়। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (মারাকিল ফালাহ: ১/২০৭, অধ্যায়: ইদরাকুল ফরীযা)
