মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২- ঈমানের অধ্যায়
হাদীস নং: ১৯
প্রথম অনুচ্ছেদ
১৯। হযরত আবু সাঈদ* খুদরী (রাযিঃ) বলেন, একদা নবী করীম (ﷺ) ঈদুল আযহা বা ঈদুল-ফিতরে ঈদগাহে বের হয়ে এলেন এবং মহিলাদের নিকট গিয়ে বললেন- হে নারী সমাজ! তোমরা বেশী বেশী দান খয়রাত কর। কেননা আমাকে দেখান হয়েছে, তোমাদের অধিকাংশই জাহান্নামী। তারা বলল, কেন হে আল্লাহর রাসূল! উত্তরে তিনি বললেন, তোমরা বেশী বেশী অভিশাপ দিয়ে থাক এবং স্বামীদের অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তোমরা জ্ঞান-বুদ্ধি ও দ্বীনদারীতে ত্রুটিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বিচক্ষণ বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের জ্ঞান বুদ্ধিহরণে তোমাদের চেয়ে পারদর্শী আমি আর কাউকে দেখি না। তারা প্রশ্ন করল, আমাদের দ্বীনে ও বুদ্ধিতে ত্রুটি কোথায় হে আল্লাহর রাসূল! হুযুর বললেন, মহিলাদের সাক্ষ্য পুরুষের সাক্ষ্যের অর্ধেক নয় কি? তারা বলল, হ্যাঁ। হুযুর বললেন, এটাই তার বুদ্ধির ত্রুটি। তিনি বললেন, ঋতুবতী হলে তারা নামায পড়ে না, রোযা রাখে না, (এটা কি সত্যি নয়?), তারা বলল, হ্যাঁ। হুযুর বললেন, এটাই তাদের দ্বীনদারীর ত্রুটি। (বোখারী-মুসলিম)
* হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) এর নামঃ সা'দ, উপনাম আবু সাঈদ, এ নামেই তিনি বেশী প্রসিদ্ধি লাভ করেন। পিতার নাম মালিক ইবনে সিনান। তিনি একজন বিখ্যাত সাহাবী ছিলেন। তিনি হিজরী ৭৪ সালে ৮৪ বছর বয়সে পবিত্র মদীনা শরীফে ইন্তেকাল করেন।
* হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) এর নামঃ সা'দ, উপনাম আবু সাঈদ, এ নামেই তিনি বেশী প্রসিদ্ধি লাভ করেন। পিতার নাম মালিক ইবনে সিনান। তিনি একজন বিখ্যাত সাহাবী ছিলেন। তিনি হিজরী ৭৪ সালে ৮৪ বছর বয়সে পবিত্র মদীনা শরীফে ইন্তেকাল করেন।
الفصل الاول
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أَضْحًى أَوْ فِطْرٍ إِلَى الْمُصَلَّى فَمَرَّ عَلَى النِّسَاءِ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ فَإِنِي أُرِيتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ فَقُلْنَ وَبِمَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ وَتَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ أَذْهَبَ لِلُبِّ الرجل الحازم من إحداكن قُلْنَ وَمَا نُقْصَانُ دِينِنَا وَعَقْلِنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ أَلَيْسَ شَهَادَةُ الْمَرْأَةِ مِثْلَ نِصْفِ شَهَادَةِ الرَّجُلِ قُلْنَ بَلَى قَالَ فَذَلِكَ مِنْ نُقْصَان عقلهَا أَلَيْسَ إِذَا حَاضَتْ لَمْ تَصِلِّ وَلَمْ تَصُمْ قُلْنَ بَلَى قَالَ فَذَلِكَ مِنْ نُقْصَانِ دِينِهَا
হাদীসের ব্যাখ্যা:
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলাদের লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা দান-সদাকা করো, কেননা তোমরাই জাহান্নামে বেশি যাবে। তখন সাধারণ স্তরের এক নারী প্রশ্ন করল, তা কী কারণে? তিনি বললেন تكثرن اللعن، وتكفرن العشير 'তোমরা বেশি বেশি লানত কর এবং স্বামীর অকৃতজ্ঞতা কর।
অন্যান্য পাপ নারী-পুরুষ উভয়ই সাধারণত সমানই করে। কিন্তু লানত করার পাপ তুলনামূলক নারীদের মধ্যে বেশি। আর স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞতা তো তাদেরই মধ্যে সীমাবদ্ধ। এ কারণেই প্রথমদিকে জাহান্নামে তাদের সংখ্যা বেশি হবে।
হাদীছটির এরকম ব্যাখ্যাও করা যায় যে, জাহান্নামে তাদের সংখ্যা বেশি হওয়ার অর্থ পুরুষদের তুলনায় বেশি হওয়া নয়; বরং নারীদের মধ্যেই যারা জাহান্নামে যাবে তাদের একদলের তুলনায় অন্যদলের সংখ্যা বেশি বোঝানো উদ্দেশ্য। অর্থাৎ তাদের অনেককেই বিভিন্ন কারণে জাহান্নামে যেতে হবে বটে, কিন্তু লা'নত করা ও স্বামীর অবাধ্যতা করার অপরাধে যারা জাহান্নামে যাবে তাদের সংখ্যা অন্যদের তুলনায় বেশি হবে।
উল্লেখ্য স্বামীর অবাধ্যতা করা যেমন পাপ, তেমনি স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীর প্রতি জুলুম-নির্যাতন করাও পাপ বৈকি। অনেক স্বামীই এ পাপ করে থাকে। এর থেকে তাদের বিরত হওয়া উচিত। অন্যথায় এ কারণে তাদেরকেও আখেরাতে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকেই জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।
অন্যান্য পাপ নারী-পুরুষ উভয়ই সাধারণত সমানই করে। কিন্তু লানত করার পাপ তুলনামূলক নারীদের মধ্যে বেশি। আর স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞতা তো তাদেরই মধ্যে সীমাবদ্ধ। এ কারণেই প্রথমদিকে জাহান্নামে তাদের সংখ্যা বেশি হবে।
হাদীছটির এরকম ব্যাখ্যাও করা যায় যে, জাহান্নামে তাদের সংখ্যা বেশি হওয়ার অর্থ পুরুষদের তুলনায় বেশি হওয়া নয়; বরং নারীদের মধ্যেই যারা জাহান্নামে যাবে তাদের একদলের তুলনায় অন্যদলের সংখ্যা বেশি বোঝানো উদ্দেশ্য। অর্থাৎ তাদের অনেককেই বিভিন্ন কারণে জাহান্নামে যেতে হবে বটে, কিন্তু লা'নত করা ও স্বামীর অবাধ্যতা করার অপরাধে যারা জাহান্নামে যাবে তাদের সংখ্যা অন্যদের তুলনায় বেশি হবে।
উল্লেখ্য স্বামীর অবাধ্যতা করা যেমন পাপ, তেমনি স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীর প্রতি জুলুম-নির্যাতন করাও পাপ বৈকি। অনেক স্বামীই এ পাপ করে থাকে। এর থেকে তাদের বিরত হওয়া উচিত। অন্যথায় এ কারণে তাদেরকেও আখেরাতে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকেই জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।
