আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ

আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ

হাদীস নং: ৯৬৮
৪৩৬.উপবিষ্ট ব্যক্তির সম্মুখে দণ্ডায়মান হওয়া অপছন্দনীয়
৯৬৮. রাবী বলেন, আনসারদের জনৈক যুবকের গৃহে একটি শিশুর জন্ম হইল। সে তাহার নাম রাখিল মুহাম্মাদ। আনসারগণ তখন বলিলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কুনিয়তে তাহাকে ডাকিব না। আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সমীপে যাওয়ার পথে রাস্তায় এক জায়গায় বসিয়া পড়িলাম এবং তাঁহার কাছে কিয়ামত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করিব বলিয়া আলোচনা করিলাম। অতঃপর যখন তাঁহার খেদমতে উপস্থিত হইলাম, তখন তিনি বলিলেন, তোমরা আমার কাছে আসিয়াছ কিয়ামত সম্পর্কে প্রশ্ন করিতে? আমরা বলিলাম, জ্বী হ্যাঁ। বলিলেন, এমন কোন জীবিত ব্যক্তি নাই, যাহার উপর শতাব্দী কাল ঘুরিয়া আসিবে (আর সে কিয়ামতের দ্বার প্রান্তে উপস্থিত না হইবে)। আমরা বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আনসারদের জনৈক যুবকের গৃহে একটি শিশু জন্ম হইয়াছে সে তাহার নাম রাখিয়াছে মুহাম্মাদ। আনসারগণ তাহাকে স্পষ্ট জানাইয়া দিয়াছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কুনিয়তে আমরা তাহাকে অভিহিত করিব না। তিনি বলিলেনঃ আনসারগণ যথার্থ কাজই করিয়াছে। তোমরা আমার নামে নাম রাখিতে পার। কিন্তু আমার কুনিয়তে কাহাকেও অভিহিত করিও না। ১
قَالَ‏:‏ وَوُلِدَ لِفُلاَنٍ مِنَ الأَنْصَارِ غُلامٌ، فَسَمَّاهُ مُحَمَّدًا، فَقَالَتِ الأنْصَارُ‏:‏ لا نُكَنِّيكَ بِرَسُولِ اللهِ‏.‏ حَتَّى قَعَدْنَا فِي الطَّرِيقِ نَسْأَلُهُ عَنِ السَّاعَةِ، فَقَالَ‏:‏ جِئْتُمُونِي تَسْأَلُونِي عَنِ السَّاعَةِ‏؟‏ قُلْنَا‏:‏ نَعَمْ، قَالَ‏:‏ مَا مِنْ نَفْسٍ مَنْفُوسَةٍ، يَأْتِي عَلَيْهَا مِئَةُ سَنَةٍ، قُلْنَا‏:‏ وُلِدَ لِفُلاَنٍ مِنَ الأَنْصَارِ غُلاَمٌ فَسَمَّاهُ مُحَمَّدًا، فَقَالَتِ الأنْصَارُ‏:‏ لا نُكَنِّيكَ بِرَسُولِ اللهِ، قَالَ‏:‏ أَحْسَنَتِ الأَنْصَارُ، سَمُّوا بِاسْمِي، ولا تَكْتَنُوا بِكُنْيَتِي‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

১.কুনিয়াত হইতেছে সম্বোধনসূচক নাম। আরবের ঘরে ঘরে উহার প্রচলন ছিল। সাধারণত আবুল প্রযুক্ত নাম বা উপনামগুলিকেই কুনিয়ত বলা হয়। যেমন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কুনিয়ত ছিল আবুল কাসেম (কাসেমের পিতা), হযরত আলী (রা)-এর কুনিয়ত আবুল হাসান (হাসানের পিতা) ইত্যাদি। ইব্‌ন যোগ করিয়াও কুনিয়ত হয়। যেমন ইব্‌ন আব্বাস, ইব্‌ন উমর প্রভৃতি।
“শতাব্দী কাল ঘুরিয়া না আসিতেই কিয়ামতের দেখা পাইবে” বলিতে শতাব্দী কালের মধ্যেই জীবিতদের প্রত্যেকেই মৃত্যুর হিমশীতল পরম স্পর্শ অনুভব করিবে এবং আখিরাতের (পরকালের) দ্বারপ্রান্তে হানা দিবে বুঝানো হইয়াছে। অন্য হাদীসে আছে কবর হইতেছে পরকালের প্রথম ঘাট। বস্তুত মৃত্যুর পরপরই মানবের পরকালের সূচনা হইয়া যায়, যদিও শেষ বিচারের ধার্য দিন হাজার হাজার বৎসর পরেও আসে। কবরে মুনকীর নকীর ফেরেশতাদ্বয়ের সাওয়াল-জওয়াবের সাথে সাথেই মৃত ব্যক্তি কবরের দিকে বেহেশত অথবা দোযখের হাওয়া প্রবাহিত হইয়া থাকে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
আল-আদাবুল মুফরাদ - হাদীস নং ৯৬৮ | মুসলিম বাংলা