আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ
হাদীস নং: ৬৫০
২৮১- নবী করীম (ﷺ)-এর প্রসঙ্গ উত্থাপিত হওয়া সত্ত্বেও যে দরূদ পড়ে না
৬৫০. হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, একদা নবী করীম (ﷺ) মিম্বরে আরোহণ করিলেন এবং বলিলেন আমীন! আমীন!! আমীন!!! তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করা হইল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি ইহা কি করিলেন ? জবাবে বলিলেন : ধুলায় ধূসরিত হউক তাহার নাক যে ব্যক্তি তাহার পিতামাতা দুই জনকে বা তাঁহাদের কোন একজনকে পাইল অথচ তাহারা তাহার বেহেশতে প্রবেশের কারণ হইল না! আমি বলিলাম :
আমীন (অর্থাৎ তাহাই হউক)। অতঃপর (দ্বিতীয়বার) তিনি বলিলেনঃ ধুলায় ধূসরিত হউক তাহার নাক যে রমযান মাস পাইল অথচ তাহার মাগফিরাত হইল না, আমি বলিলামঃ আমীন! অতঃপর জিবরাঈল পুনরায় বলিলেন, ধূলায় ধূসরিত হউক তাহার নাক যাহার সম্মুখে আপনার প্রসঙ্গ উত্থাপিত হইল অথচ সে আপনার প্রতি দরূদ পড়িল না। তখনও আমি বলিলামঃ আমীন।
আমীন (অর্থাৎ তাহাই হউক)। অতঃপর (দ্বিতীয়বার) তিনি বলিলেনঃ ধুলায় ধূসরিত হউক তাহার নাক যে রমযান মাস পাইল অথচ তাহার মাগফিরাত হইল না, আমি বলিলামঃ আমীন! অতঃপর জিবরাঈল পুনরায় বলিলেন, ধূলায় ধূসরিত হউক তাহার নাক যাহার সম্মুখে আপনার প্রসঙ্গ উত্থাপিত হইল অথচ সে আপনার প্রতি দরূদ পড়িল না। তখনও আমি বলিলামঃ আমীন।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي حَازِمٍ ، عَنْ كَثِيرٍ يَرْوِيهِ ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ رَبَاحٍ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، " أَنّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَقَى الْمِنْبَرَ ، فَقَالَ : آمِينَ ، آمِينَ ، آمِينَ " ، قِيلَ لَهُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، مَا كُنْتَ تَصْنَعُ هَذَا ؟ فَقَالَ : قَالَ لِي جِبْرِيلُ : رَغِمَ أَنْفُ عَبْدٍ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ أَوْ أَحَدَهُمَا لَمْ يُدْخِلْهُ الْجَنَّةَ ، قُلْتُ : آمِينَ ، ثُمَّ قَالَ : رَغِمَ أَنْفُ عَبْدٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ لَمْ يُغْفَرْ لَهُ ، فَقُلْتُ : آمِينَ ، ثُمَّ قَالَ : رَغِمَ أَنْفُ امْرِئٍ ذُكِرْتَ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ ، فَقُلْتُ : آمِينَ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
রমযান মাস রহমত, বরকত, মাগফিরাত, জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভের মাস। তাই এমন মাস পেয়েও যে ব্যক্তি স্বীয় গুনাহ মাফ করাতে পারল না তার জন্য স্বয়ং জিবরাঈল আ. বদদুআ করেছেন এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাহমাতুল্লিল আলামিন হয়েও আমীন বলে সমর্থন জানিয়েছেন। হাদীস শরীফে এসেছে- ‘নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে উঠে আমীন, আমীন, আমীন বললেন। তাঁকে বলা হল, হে রাসূল! আপনি তো এরূপ করতেন না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, জিবরাঈল আমাকে বললেন, ঐ ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে পিতা-মাতা উভয়কে অথবা একজনকে পেয়েও (তাদের খেদমত করে) জান্নাতে প্রবেশ করতে পারল না। তখন আমি বললাম, আমীন। অতঃপর তিনি বললেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে রমযান পেয়েও নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না। আমি বললাম, আমীন। জিবরাঈল আবার বললেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যার নিকট আমার নাম আলোচিত হল অথচ সে আমার উপর দুরূদ পড়ল না। আমি বললাম, আমীন। -আল আদাবুল মুফরাদ : ২২৫, হাদীস ৬৪৬; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস ৯০৮
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে রমযানের হক আদায় করার তওফীক দান করুন এবং নবীজীর অভিসম্পাৎ থেকে রক্ষা করুন। আমীন!
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে রমযানের হক আদায় করার তওফীক দান করুন এবং নবীজীর অভিসম্পাৎ থেকে রক্ষা করুন। আমীন!
