আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ
হাদীস নং: ৫২
২৭- আত্মীয়-স্বজনের সহিত ঘনিষ্ঠ আচরণের ফযীলত
৫২। হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, একদা এক ব্যক্তি নবী করীম (ﷺ)-এর খেদমতে উপস্থিত হইয়া আর করিল ঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজন রহিয়াছে। আমি তাহাদের সহিত ঘনিষ্ঠ আচরণ ও সদ্ব্যবহার করি, কিন্তু তাহারা আমার প্রতি পরসূলভ আচরণ ও অসদ্ব্যবহার
করে। তাহারা আমার সহিত গােয়ার্তুমি করে। আমি সহ্য করিয়া যাই। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফরমাইলেন ঃ যদি তােমার বক্তব্য ঠিক হয়, তবে তাে তুমি যেন তাহাদের মুখে উত্তপ্ত ছাই পুরিয়া দিতেছ! তােমার কারণে তাহাদের দুর্ভোগ আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি এরূপ করিতে থাকিবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ হইতে একজন সাহায্যকারী তাহাদের মুকাবিলায় তােমার সহিত থাকিবেন।
করে। তাহারা আমার সহিত গােয়ার্তুমি করে। আমি সহ্য করিয়া যাই। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফরমাইলেন ঃ যদি তােমার বক্তব্য ঠিক হয়, তবে তাে তুমি যেন তাহাদের মুখে উত্তপ্ত ছাই পুরিয়া দিতেছ! তােমার কারণে তাহাদের দুর্ভোগ আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি এরূপ করিতে থাকিবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ হইতে একজন সাহায্যকারী তাহাদের মুকাবিলায় তােমার সহিত থাকিবেন।
بَابُ فَضْلِ صِلَةِ الرَّحِمِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: أَتَى رَجُلٌ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّ لِي قَرَابَةً أَصِلُهُمْ وَيَقْطَعُونَ، وَأُحْسِنُ إِلَيْهِمْ وَيُسِيئُونَ إِلَيَّ، وَيَجْهَلُونَ عَلَيَّ وَأَحْلُمُ عَنْهُمْ، قَالَ: لَئِنْ كَانَ كَمَا تَقُولُ كَأَنَّمَا تُسِفُّهُمُ الْمَلَّ، وَلاَ يَزَالُ مَعَكَ مِنَ اللهِ ظَهِيرٌ عَلَيْهِمْ مَا دُمْتَ عَلَى ذَلِكَ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছের সারকথা হলো জনৈক সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তার আত্মীয় সম্পর্কে তিনটি অভিযোগ করেছিলেন। প্রথম অভিযোগ- আমি তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করি, কিন্তু তারা আমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। দ্বিতীয় অভিযোগ- আমি তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করি, কিন্তু তারা আমার সঙ্গে মন্দ ব্যবহার করে। তৃতীয় অভিযোগ- আমি তাদের মন্দ আচরণ বরদাশত করি ও তাদের প্রতি সহনশীলতার পরিচয় দিই, কিন্তু তারা আমার প্রতি অজ্ঞতাসুলভ ও অসহিষ্ণু আচরণ করে। এর উত্তরে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু'টি কথা বললেন। প্রথম কথা বললেন-
لَئِنْ كُنْتَ كَمَا قُلْتَ، فَكَأَنَّمَا تُسِفُّهُمُ الْمَلَّ
(তুমি যেমন বললে যদি সেরকমই হয়ে থাক তবে তুমি যেন তাদেরকে উত্তপ্ত ছাই খাওয়াচ্ছ)। ইমাম নববী রহ. বলেন, المل -এর অর্থ গরম ছাই। অর্থাৎ তুমি যেন তাদেরকে গরম ছাই খাওয়াচ্ছ। এটি একটি উপমা। এর দ্বারা গুনাহে রত ব্যক্তিকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে উপমিত করা হয়েছে, যে গরম ছাই খাওয়ার কারণে নিদারুণ কষ্ট ভোগ করছে। যে আত্মীয় অপর আত্মীয়ের প্রতি ভালো ব্যবহার করে, বাস্তবিকপক্ষে তার কোনও কষ্ট নেই। গুনাহ তো নেই-ই। পক্ষান্তরে সেই অপর আত্মীয় তার হক নষ্ট করে ও তাকে কষ্ট দিয়ে কঠিনভাবে গুনাহগার হচ্ছে।
ইমাম নববী রহ. সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাগ্রন্থে বলেন, কারও কারও মতে এর অর্থ- তুমি তাদের প্রতি সদ্ব্যবহার করে তাদের নিজেদের কাছে তাদেরকে হীন ও নীচ সাব্যস্ত করছ। একদিকে তুমি তাদের প্রতি অশেষ অনুগ্রহ করছ, অন্যদিকে তারা করছে মন্দ আচরণ। কাজেই তাদের হীনতা ও নীচতাটা ঠিক ওই ব্যক্তির মত, যে (ভালো খাবার ছেড়ে) গরম ছাই খায়। অথবা বলা যায়, তোমার পক্ষ থেকে তাদের অনুগ্রহ গ্রহণ করাটা ওই গরম ছাই গ্রাস করার মত, যা তাদের নাড়িভুঁড়ি জ্বালিয়ে দেয়।
ইমাম আকূলী রহ. বলেন, এর অর্থ সে যেন সদ্ব্যবহার করার দ্বারা তাদের সামনে গরম ছাই রাখছে, যে ছাই তারা গ্রাস করছে। অর্থাৎ তারা যখন তোমার সদ্ব্যবহারের কৃতজ্ঞতা করল না, তখন সে সদ্ব্যবহার গ্রহণ করা তাদের পক্ষে হারাম হয়ে গেল, যা তাদের উদরে আগুন হয়ে প্রবেশ করল।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বিতীয় কথা বললেন- وَلَا يَزَالُ مَعَكَ مِنَ اللهِ ظَهِيرٌ عَلَيْهِمْ مَا دُمْتَ عَلَى ذَلِكَ (তুমি যতক্ষণ তোমার এই নীতির উপর থাকবে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে তোমার একজন সাহায্যকারী থাকবে)। অর্থাৎ তাদের দুর্ব্যবহার তোমার কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। তোমাকে ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে একজন ফিরিশতা নিযুক্ত আছেন। তুমি যতদিন এ নীতির উপর অবিচল থাকবে, ততদিন সে ফিরিশতা তোমার সাহায্য করে যাবে।
এ নীতির উপর অবিচল থাকাটাও তোমার পক্ষে সে ফিরিশতার সাহায্যের ফল। সে তোমার মনোবল অটুট রাখতে প্রেরণা যোগাতে থাকবে। তাছাড়া বাহ্যিকভাবেও তারা যদি কোনও ক্ষতি করতে চায়, সে ক্ষেত্রেও তুমি সেই ফিরিশতার সাহায্য পাবে। এই বলে মূলত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীকে তার এ আদর্শের উপর অবিচল থাকতে উৎসাহ দিয়েছেন।
হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রাযি. সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, একবার কোনও এক ব্যক্তি তাঁকে রূঢ় কথা বলে যাচ্ছিল, কিন্তু তিনি কোনও উত্তর দিচ্ছিলেন না। সেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত ছিলেন। লোকটি যখন খুব বাড়াবাড়ি করছিল, তখন একপর্যায়ে আবূ বকর সিদ্দীক রাযি. তার কথার উত্তর দিয়ে ফেললেন। অমনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখান থেকে উঠে গেলেন। হযরত আবু বকর রাযি.-ও তার পেছন পেছন চললেন আর বলতে লাগলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে আমাকে কথা শুনিয়ে যাচ্ছিল, তখন আপনি চুপ করে বসে ছিলেন। তারপর যেই না আমি প্রত্যুত্তর করলাম, অমনি আপনি উঠে গেলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন-
يَا أَبَا بَكْرٍ، إِنَّكَ مَا سَكَتَ كَانَ الْمَلَكُ يَرُدُّ عَلَيْهِ ، فَلَمَّا انْتَصَرْتَ ارْتَفَعَ الْمَلَكُ، وَحَضَرَ الشَّيْطَانُ، فَلَمْ أَكُنْ لِأُجَالِسَ الشَّيْطَانَ
হে আবূ বকর! যতক্ষণ তুমি চুপ ছিলে, ততক্ষণ ফিরিশতা তোমার পক্ষ হতে তাকে জবাব দিচ্ছিল। যেই না তুমি জবাব দিলে, অমনি ফিরিশতা চলে গেল আর শয়তান হাজির হলো। আমি তো শয়তানের সঙ্গে বসবার নই। ৭৫
উল্লেখ্য, বিপদ-আপদে ফিরিশতাগণ যে মুমিনদের সাহায্য করে থাকে, সে সম্পর্কে এ ছাড়াও আরও বহু হাদীছ আছে। কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াত দ্বারাও এটা প্রমাণিত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. সর্বাবস্থায় আত্মীয়ের প্রতি ভালো আচরণ করে যাওয়া চাই। কোনও আত্মীয় মন্দ ব্যবহার করলেও তার প্রতি নিজ আচরণ ভালো রাখাই বাঞ্ছনীয়।
খ. আত্মীয়ের প্রতি মন্দ ব্যবহার করা কিছুতেই জায়েয নয়। সদ্ব্যবহারকারী আত্মীয়ের প্রতি মন্দ ব্যবহার করা নীচতাও বটে ।
গ. কোনও আত্মীয়ের প্রতি মন্দ ব্যবহারে রত থেকে তার পক্ষ থেকে ভালো ব্যবহার গ্রহণ করে যাওয়া গরম ছাই খাওয়ার মত কাজ।
ঘ. কারও দুর্ব্যবহার সত্ত্বেও তার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে থাকলে ফিরিশতার পক্ষ থেকে সাহায্য লাভ হয়।
৭৫. সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৮৯৬; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৭৭১৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯৬২৪; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৫৮৬; আল মু'জামুল আওসাত, হাদীস নং ৭২৩৯ বায়হাকী আস সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ২১০৯৬
لَئِنْ كُنْتَ كَمَا قُلْتَ، فَكَأَنَّمَا تُسِفُّهُمُ الْمَلَّ
(তুমি যেমন বললে যদি সেরকমই হয়ে থাক তবে তুমি যেন তাদেরকে উত্তপ্ত ছাই খাওয়াচ্ছ)। ইমাম নববী রহ. বলেন, المل -এর অর্থ গরম ছাই। অর্থাৎ তুমি যেন তাদেরকে গরম ছাই খাওয়াচ্ছ। এটি একটি উপমা। এর দ্বারা গুনাহে রত ব্যক্তিকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে উপমিত করা হয়েছে, যে গরম ছাই খাওয়ার কারণে নিদারুণ কষ্ট ভোগ করছে। যে আত্মীয় অপর আত্মীয়ের প্রতি ভালো ব্যবহার করে, বাস্তবিকপক্ষে তার কোনও কষ্ট নেই। গুনাহ তো নেই-ই। পক্ষান্তরে সেই অপর আত্মীয় তার হক নষ্ট করে ও তাকে কষ্ট দিয়ে কঠিনভাবে গুনাহগার হচ্ছে।
ইমাম নববী রহ. সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাগ্রন্থে বলেন, কারও কারও মতে এর অর্থ- তুমি তাদের প্রতি সদ্ব্যবহার করে তাদের নিজেদের কাছে তাদেরকে হীন ও নীচ সাব্যস্ত করছ। একদিকে তুমি তাদের প্রতি অশেষ অনুগ্রহ করছ, অন্যদিকে তারা করছে মন্দ আচরণ। কাজেই তাদের হীনতা ও নীচতাটা ঠিক ওই ব্যক্তির মত, যে (ভালো খাবার ছেড়ে) গরম ছাই খায়। অথবা বলা যায়, তোমার পক্ষ থেকে তাদের অনুগ্রহ গ্রহণ করাটা ওই গরম ছাই গ্রাস করার মত, যা তাদের নাড়িভুঁড়ি জ্বালিয়ে দেয়।
ইমাম আকূলী রহ. বলেন, এর অর্থ সে যেন সদ্ব্যবহার করার দ্বারা তাদের সামনে গরম ছাই রাখছে, যে ছাই তারা গ্রাস করছে। অর্থাৎ তারা যখন তোমার সদ্ব্যবহারের কৃতজ্ঞতা করল না, তখন সে সদ্ব্যবহার গ্রহণ করা তাদের পক্ষে হারাম হয়ে গেল, যা তাদের উদরে আগুন হয়ে প্রবেশ করল।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বিতীয় কথা বললেন- وَلَا يَزَالُ مَعَكَ مِنَ اللهِ ظَهِيرٌ عَلَيْهِمْ مَا دُمْتَ عَلَى ذَلِكَ (তুমি যতক্ষণ তোমার এই নীতির উপর থাকবে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে তোমার একজন সাহায্যকারী থাকবে)। অর্থাৎ তাদের দুর্ব্যবহার তোমার কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। তোমাকে ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে একজন ফিরিশতা নিযুক্ত আছেন। তুমি যতদিন এ নীতির উপর অবিচল থাকবে, ততদিন সে ফিরিশতা তোমার সাহায্য করে যাবে।
এ নীতির উপর অবিচল থাকাটাও তোমার পক্ষে সে ফিরিশতার সাহায্যের ফল। সে তোমার মনোবল অটুট রাখতে প্রেরণা যোগাতে থাকবে। তাছাড়া বাহ্যিকভাবেও তারা যদি কোনও ক্ষতি করতে চায়, সে ক্ষেত্রেও তুমি সেই ফিরিশতার সাহায্য পাবে। এই বলে মূলত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীকে তার এ আদর্শের উপর অবিচল থাকতে উৎসাহ দিয়েছেন।
হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রাযি. সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, একবার কোনও এক ব্যক্তি তাঁকে রূঢ় কথা বলে যাচ্ছিল, কিন্তু তিনি কোনও উত্তর দিচ্ছিলেন না। সেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত ছিলেন। লোকটি যখন খুব বাড়াবাড়ি করছিল, তখন একপর্যায়ে আবূ বকর সিদ্দীক রাযি. তার কথার উত্তর দিয়ে ফেললেন। অমনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখান থেকে উঠে গেলেন। হযরত আবু বকর রাযি.-ও তার পেছন পেছন চললেন আর বলতে লাগলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে আমাকে কথা শুনিয়ে যাচ্ছিল, তখন আপনি চুপ করে বসে ছিলেন। তারপর যেই না আমি প্রত্যুত্তর করলাম, অমনি আপনি উঠে গেলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন-
يَا أَبَا بَكْرٍ، إِنَّكَ مَا سَكَتَ كَانَ الْمَلَكُ يَرُدُّ عَلَيْهِ ، فَلَمَّا انْتَصَرْتَ ارْتَفَعَ الْمَلَكُ، وَحَضَرَ الشَّيْطَانُ، فَلَمْ أَكُنْ لِأُجَالِسَ الشَّيْطَانَ
হে আবূ বকর! যতক্ষণ তুমি চুপ ছিলে, ততক্ষণ ফিরিশতা তোমার পক্ষ হতে তাকে জবাব দিচ্ছিল। যেই না তুমি জবাব দিলে, অমনি ফিরিশতা চলে গেল আর শয়তান হাজির হলো। আমি তো শয়তানের সঙ্গে বসবার নই। ৭৫
উল্লেখ্য, বিপদ-আপদে ফিরিশতাগণ যে মুমিনদের সাহায্য করে থাকে, সে সম্পর্কে এ ছাড়াও আরও বহু হাদীছ আছে। কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াত দ্বারাও এটা প্রমাণিত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. সর্বাবস্থায় আত্মীয়ের প্রতি ভালো আচরণ করে যাওয়া চাই। কোনও আত্মীয় মন্দ ব্যবহার করলেও তার প্রতি নিজ আচরণ ভালো রাখাই বাঞ্ছনীয়।
খ. আত্মীয়ের প্রতি মন্দ ব্যবহার করা কিছুতেই জায়েয নয়। সদ্ব্যবহারকারী আত্মীয়ের প্রতি মন্দ ব্যবহার করা নীচতাও বটে ।
গ. কোনও আত্মীয়ের প্রতি মন্দ ব্যবহারে রত থেকে তার পক্ষ থেকে ভালো ব্যবহার গ্রহণ করে যাওয়া গরম ছাই খাওয়ার মত কাজ।
ঘ. কারও দুর্ব্যবহার সত্ত্বেও তার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে থাকলে ফিরিশতার পক্ষ থেকে সাহায্য লাভ হয়।
৭৫. সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৮৯৬; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৭৭১৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯৬২৪; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৫৮৬; আল মু'জামুল আওসাত, হাদীস নং ৭২৩৯ বায়হাকী আস সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ২১০৯৬
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
