আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল

হাদীস নং: ৩৩২৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৮১
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩২৮। মুসা ইবনে ইসমা‘ঈল (রাহঃ) .... আব্দুর রহমান ইবনে আবু বকর (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, আসহাবে সুফফায় কতিপয় অসহায় দরিদ্র লোক ছিলেন। নবী কারীম (ﷺ) একবার বললেন, যার ঘরে দু’জনের পরিমাণ খাবার আছে সে যেন এদের মধ্য থেকে তৃতীয় একজন নিয়ে যায়। আর যার ঘরে চার জনের পরিমাণ খাবার আছে সে এদের মধ্য থেকে পঞ্চম একজন বা ষষ্ঠ একজনকে নিয়ে যায় অথবা নবী কারীম (ﷺ) যা বলেছেন। আবু বকর (রাযিঃ) তিনজন নিলেন। আর নবী কারীম (ﷺ) নিলেন দশজন। এবং আবু বকর (রাযিঃ) তিনজন। আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেন, (আমরা বাড়ীতে ছিলাম তিনজন)। আমি আমার আব্বা ও আম্মা। আবু উসমান (রাযিঃ) বলেন, আমার মনে নাই আব্দুর রহমান (রাযিঃ) কি ইহাও বলেছিলেন যে আমার স্ত্রী ও আমাদের পিতা-পুত্রের একজন গৃহভৃত্যও ছিল।
আবু বকর (রাযিঃ) ঐ রাতে নবীজীর বাড়ীতেই খেয়ে নিলেন এবং ইশার নামায পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করলেন। ইশার নামাযের পর পুনরায় তিনি নবী কারীম (ﷺ)- এর গৃহে গমন করলেন। নবী কারীম (ﷺ)- এর রাতের আহার গ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তথায়ই অবস্থান করলেন। অনেক রাতের পর গৃহে ফিরলেন। তখন তাঁর স্ত্রী তাঁকে বললেন, মেহমান পাঠিয়ে দিয়ে আপনি এতক্ষণ কোথায় ছিলেন? তিনি বললেন, তাদের কি এখনও রাতের আহার দাওনি? স্ত্রী বললেন, আপনার না আসা পর্যন্ত তারা আহার খেতে রাযী হননি। তাদেরকে ঘরের লোকজন আহার দিয়েছিল। কিন্তু তাদের অসম্মতির নিকট আমাদের লোকজনকে হার মানতে হয়েছে। আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেন, আমি (অবস্থা বেগতিক দেখে) তাড়াতাড়ি কেটে পড়লাম। আবু বকর (রাযিঃ) (আমাকে উদ্দেশ্য করে) বললেন, ওরে বেউকুফ! আহম্মক! আরো কিছু কড়া কথা বলে ফেললেন।
তারপর মেহমান পক্ষকে সম্বোধন করে বললেন, আপনারা খেয়ে নিন। আমি কিছুতেই খাবো না। (এর মধ্যে আরো কিছু কথা কাটাকাটি হয়ে গেল অবশেষে সকলেই খেতে বসলেন।) আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেন, আল্লাহর কসম, আমরা যখন গ্রাস তুলে নেই তখন দেখি পাত্রের খাবার অনেক বেড়ে যায়। খাওয়ার শেষে আবু বকর (রাযিঃ) লক্ষ করলেন যে, পরিতৃপ্তভাবে আহারের পরও পাত্রে খাবার পূর্বাপেক্ষা অধিক রয়ে গেছে। তখন স্ত্রীকে লক্ষ করে বললেন, হে বনী ফিরাস গোত্রের বোন, ব্যাপার কি? তিনি বললেন, হে আমার নয়নমণি। খাদ্যের পরিমাণ এখন তিনগুণের চেয়েও অধিক রয়েছে।
আবু বকর (রাযিঃ) তা থেকে কয়েক গ্রাস খেলেন এবং বললেন, আমার কসম শয়তানের প্ররোচনায় ছিল। তারপর অবশিষ্ট খাদ্য নবী কারীর (ﷺ)- এর নিকট নিয়ে গেলেন এবং ভোর পর্যন্ত ঐ খাদ্য নবী কারীর (ﷺ)- এর হেফাযতে রইল। রাবী বলেন, আমাদের (মুসলমানদের) ও অন্য একটি গোত্রের মধ্যে সন্ধি ছিল। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াতে তাদের মোকাবেলা করার জন্য আমাদের বার জনকে নেতা মনোনীত করা হল। প্রত্যেক নেতার অধীনে আবার কয়েকজন করে লোক ছিল। আল্লাহই ভালো জানেন তাদের প্রত্যেকের সাথে কতজন করে দেয়া হয়েছিল! আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেন, এদের প্রত্যেকেই এ খাবার থেকে খেয়ে নিলেন। অথবা তিনি যা বলেছেন।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3581 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، عَنْ أَبِيهِ، حَدَّثَنَا أَبُو عُثْمَانَ، أَنَّهُ حَدَّثَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ أَصْحَابَ الصُّفَّةِ كَانُوا أُنَاسًا فُقَرَاءَ، وَأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَرَّةً: «مَنْ كَانَ عِنْدَهُ طَعَامُ اثْنَيْنِ فَلْيَذْهَبْ بِثَالِثٍ، وَمَنْ كَانَ عِنْدَهُ طَعَامُ أَرْبَعَةٍ فَلْيَذْهَبْ بِخَامِسٍ أَوْ سَادِسٍ» أَوْ كَمَا قَالَ: وَأَنَّ أَبَا بَكْرٍ جَاءَ بِثَلاَثَةٍ، وَانْطَلَقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَشَرَةٍ، وَأَبُو بَكْرٍ ثَلاَثَةً، قَالَ: فَهُوَ أَنَا وَأَبِي وَأُمِّي، وَلاَ أَدْرِي هَلْ قَالَ: امْرَأَتِي وَخَادِمِي، بَيْنَ بَيْتِنَا وَبَيْنَ بَيْتِ أَبِي بَكْرٍ، وَأَنَّ أَبَا بَكْرٍ تَعَشَّى عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ لَبِثَ حَتَّى صَلَّى العِشَاءَ، ثُمَّ رَجَعَ فَلَبِثَ حَتَّى تَعَشَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَاءَ بَعْدَ مَا مَضَى مِنَ اللَّيْلِ مَا شَاءَ اللَّهُ، قَالَتْ لَهُ امْرَأَتُهُ: مَا حَبَسَكَ عَنْ أَضْيَافِكَ أَوْ ضَيْفِكَ؟، قَالَ: أَوَعَشَّيْتِهِمْ؟ قَالَتْ: أَبَوْا حَتَّى تَجِيءَ، قَدْ عَرَضُوا عَلَيْهِمْ فَغَلَبُوهُمْ، فَذَهَبْتُ فَاخْتَبَأْتُ، فَقَالَ يَا غُنْثَرُ، فَجَدَّعَ وَسَبَّ، وَقَالَ: كُلُوا، وَقَالَ: لاَ أَطْعَمُهُ أَبَدًا، قَالَ: وَايْمُ اللَّهِ، مَا كُنَّا نَأْخُذُ مِنَ اللُّقْمَةِ إِلَّا رَبَا مِنْ أَسْفَلِهَا أَكْثَرُ مِنْهَا حَتَّى شَبِعُوا، وَصَارَتْ أَكْثَرَ مِمَّا كَانَتْ قَبْلُ، فَنَظَرَ أَبُو بَكْرٍ فَإِذَا شَيْءٌ أَوْ أَكْثَرُ، قَالَ لِامْرَأَتِهِ: يَا أُخْتَ بَنِي فِرَاسٍ، قَالَتْ [ص:195]: لاَ وَقُرَّةِ عَيْنِي، لَهِيَ الآنَ أَكْثَرُ مِمَّا قَبْلُ بِثَلاَثِ مَرَّاتٍ، فَأَكَلَ مِنْهَا أَبُو بَكْرٍ وَقَالَ: إِنَّمَا كَانَ الشَّيْطَانُ، يَعْنِي يَمِينَهُ، ثُمَّ أَكَلَ مِنْهَا لُقْمَةً، ثُمَّ حَمَلَهَا إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَصْبَحَتْ عِنْدَهُ، وَكَانَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ قَوْمٍ عَهْدٌ، فَمَضَى الأَجَلُ فَتَفَرَّقْنَا اثْنَا عَشَرَ رَجُلًا، مَعَ كُلِّ رَجُلٍ مِنْهُمْ أُنَاسٌ، اللَّهُ أَعْلَمُ كَمْ مَعَ كُلِّ رَجُلٍ، غَيْرَ أَنَّهُ بَعَثَ مَعَهُمْ، قَالَ: أَكَلُوا مِنْهَا أَجْمَعُونَ، أَوْ كَمَا قَالَ
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ বুখারী - হাদীস নং ৩৩২৮ | মুসলিম বাংলা