আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

৪৬. কুরআনের তাফসীর অধ্যায়

হাদীস নং: ৩১৭৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩১৭৮
কুরআনের তাফসীর অধ্যায়
সূরা নূর
৩১৭৮. হান্নাদ (রাহঃ) ...... সাঈদ ইবনে জুবাইর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মুসআব ইবনে যুবাইর (রাহঃ)-এর আমীর থাকা কালে আমাকে লিআন কারীদ্বয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, এই দুই জনের মাঝে বিচ্ছেদ করে দেওয়া হবে কি না! কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম না, কি বলব, তখন আমি আমার বাসস্থান থেকে আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাযিঃ)-এর বাড়ি গেলাম এবং তাঁর নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইলাম, আমাকে বলা হল তিনি দুপুরের বিশ্রাম নিচ্ছেন। (ইতিমধ্যে) তিনি আমার কথা শুনতে পেয়ে বললেনঃ ইবনে জুবাইর? ভিতরে এস, অবশ্য বিশেষ প্রয়োজনই তোমাকে নিয়ে এসেছে। ভিতরে প্রবেশ করে দেখি তিনি তাঁর হাওদার একটি ছাল বিছিয়ে শুয়ে আছেন। আমি বললামঃ হে আবু আব্দির রহমান, লিআন কারী স্বামী-স্ত্রীকে পরস্পর বিচ্ছেদ করে দিতে হবে কি?

তিনি বললেনঃ সুবহানাল্লাহ্, হ্যাঁ। প্রথম এই বিষয়ে অমুকের পুত্র অমুক প্রশ্ন করেছিলেন। তিনি নবী (ﷺ) এর কাছে এসে বলেছিলেন। ইয়া রাসূলাল্লাহ্, আমাদের কেউ যদি তার স্ত্রীকে অশ্লীল কাজে লিপ্ত দেখে তবে সে কি করবে? যদি কিছু বলে, তবে তো তাকে সাংঘাতিক কথা বলতে হবে, আর যদি চুপ করে থাকে তবেও সাংঘাতিক এক বিষয়ে সে চুপ রইল।

নবী (ﷺ) চুপ করে রইলেন। তাকে তিনি উত্তর দিলেন না। পরে সে প্রশ্নকর্তা আবার নবী (ﷺ) এর কাছে এসে বললেনঃ যে বিষয়ে আপনাকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম আমি নিজেই তাতে নিপতিত। তখন আল্লাহ্ তাআলা সূরা নূর নাযিল করেনঃ

والَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلاَّ أَنْفُسُهُمْ

রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ঐ ব্যক্তিটিকে ডাকলেন এবং তাকে এই আয়াতগুলি তেলাওয়াত করে শুনালেন। তিনি তাঁকে নসীহত করলেন। উপদেশ দিলেন এবং অবহিত করলেন যে, দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের আযাবের তুলনায় সহজতর, তখন লোকটি বলল: না, কসম ঐ সত্তার যিনি সত্যসহ আপনাকে প্রেরণ করেছেন, আমি এই মহিলা সম্পর্কে মিথ্যা বলিনি।

এরপর নবী (ﷺ) মেয়েটির দিকে ফিরলেন, তাকে ওয়াজ করলেন, উপদেশ দিলেন এবং অবহিত করলেন যে, দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের আযাবের তুলনায় সহজতর। সে বললঃ না কসম ঐ সত্তার, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন! এই পুরুষ সত্য কথা বলে নি।

তারপর নবী (ﷺ) পুরুষটির থেকে লিআন শুরু করলেন। সে চারবার আল্লাহর নামে শপথ করে এই কথার সাক্ষ্য দিল যে, সে সত্যবাদী। পঞ্চম বার বললঃ সে যদি মিথ্যাবাদী হয় তবে যেন তার উপর আল্লাহর লা’নত হয়। অতঃপর মহিলাটির দিকে ফিরলেন। সেও চারবার আল্লাহর নামে কসম করে সাক্ষ্য দিল যে, পুরুষটি মিথ্যাবাদী। পঞ্চম বারে বলল, পুরুষটি যদি সত্যবাদী হয় তবে যেন তার উপর আল্লাহর গযব হয়। এরপর নবী (ﷺ) তাদের উভয়কে বিচ্ছিন্ন করে দেন।
أبواب تفسير القرآن عن رسول الله صلى الله عليه وسلم
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ النُّورِ
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ سُئِلْتُ عَنِ الْمُتَلاَعِنَيْنِ، فِي إِمَارَةِ مُصْعَبِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَيُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا فَمَا دَرَيْتُ مَا أَقُولُ فَقُمْتُ مِنْ مَكَانِي إِلَى مَنْزِلِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ فَاسْتَأْذَنْتُ عَلَيْهِ فَقِيلَ لِي إِنَّهُ قَائِلٌ فَسَمِعَ كَلاَمِي فَقَالَ لِي ابْنَ جُبَيْرٍ ادْخُلْ مَا جَاءَ بِكَ إِلاَّ حَاجَةٌ قَالَ فَدَخَلْتُ فَإِذَا هُوَ مُفْتَرِشٌ بَرْدَعَةَ رَحْلٍ لَهُ فَقُلْتُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُتَلاَعِنَانِ أَيُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا فَقَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ نَعَمْ إِنَّ أَوَّلَ مَنْ سَأَلَ عَنْ ذَلِكَ فُلاَنُ بْنُ فُلاَنٍ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّ أَحَدَنَا رَأَى امْرَأَتَهُ عَلَى فَاحِشَةٍ كَيْفَ يَصْنَعُ إِنْ تَكَلَّمَ تَكَلَّمَ بِأَمْرٍ عَظِيمٍ وَإِنْ سَكَتَ سَكَتَ عَلَى أَمْرٍ عَظِيمٍ قَالَ فَسَكَتَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يُجِبْهُ فَلَمَّا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ الَّذِي سَأَلْتُكَ عَنْهُ قَدِ ابْتُلِيتُ بِهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ هَذِهِ الآيَاتِ فِي سُورَةِ النُّورِ : (والَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلاَّ أَنْفُسُهُمْ ) حَتَّى خَتَمَ الآيَاتِ قَالَ فَدَعَا الرَّجُلَ فَتَلاَهُنَّ عَلَيْهِ وَوَعَظَهُ وَذَكَّرَهُ وَأَخْبَرَهُ أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الآخِرَةِ فَقَالَ لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا كَذَبْتُ عَلَيْهَا . ثُمَّ ثَنَّى بِالْمَرْأَةِ وَوَعَظَهَا وَذَكَّرَهَا وَأَخْبَرَهَا أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الآخِرَةِ فَقَالَتْ لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا صَدَقَ . فَبَدَأَ بِالرَّجُلِ فَشَهِدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الصَّادِقِينَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ ثُمَّ ثَنَّى بِالْمَرْأَةِ فَشَهِدَتْ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الْكَاذِبِينَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ ثُمَّ فَرَّقَ بَيْنَهُمَا . وَفِي الْبَابِ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
জামে' তিরমিযী - হাদীস নং ৩১৭৮ | মুসলিম বাংলা